দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ একুশের মহাযুদ্ধের অন্তিম লগ্ন উপস্থিত। ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হতে পারে আজই। জানা গিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ সহ পাঁচ রাজ্যে ভোটের দিন ঘোষণা হবে আজই। শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটেয় সাংবাদিক বৈঠকে ভোটের দিন ঘোষণা করবে কমিশন। সূ্ত্রের খবর, এরাজ্যে ৭-৮ দফায় ভোটের সম্ভাবনা।
আজই ৫ রাজ্যের ভোটের দিন ঘোষণা হয়ে যাবে, এমনটাই জানা গিয়েছে নির্বাচন কমিশন সূত্রে। বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ সাংবাদিক বৈঠক করবেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরা।পশ্চিমবাংলা, তামিলনাড়ু, অসম, কেরল ও পুদুচেরি– এই পাঁচ রাজ্যের ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হওয়ার কথা আজ।
কমিশন সূত্রের খবর, মার্চের প্রথম সপ্তাহ থেকেই শুরু হয়ে যেতে পারে ভোটের আগের আদর্শ আচরণ বিধি৷ প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার অর্থাৎ গতকালই রাজ্যের উচ্চপদস্থ আমলা, সরকারি আধিকারিক, শীর্ষ পুলিশ কর্তা ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন উপ নির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈন৷ তার পরে আজ জানা গেল, বিকেলেই জানা যাবে ভোটের দিনক্ষণ।
ফেব্রুয়ারির গোড়া থেকেই অবশ্য দামামা বেজে গিয়েছিল ভোটের। মাসের মাঝামাঝি সময় থেকেই এ রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানোর তোড়জোর শুরু হয়৷ ইতিমধ্যে রাজ্যে দু’দফায় বেশ কয়েক কোম্পানি বাহিনী এসে গিয়েছে৷ পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, হাওড়া-সহ একাধিক জেলায় টহল শুরু করেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী৷
সূত্রের খবর, অন্যান্য বারের ভোটের চেয়ে এবারের ভোটে অনেক বেশি কড়া নিরাপত্তা থাকবে । বিশেষ করে বাংলায় যাতে অবাধ ও নিরাপদ ভোট হয়, সেদিকে বিশেষ নজর দেবে কমিশন। সেই কারণেই প্রচুর সংখ্যায় কেন্দ্রীয় বাহিনী আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।
এ বছর বাংলায় ২৯৪, অসমে ১২৬, কেরলে ১৪০, তামিলনাড়ুতে ২৩৪ এবং কেরলে ৩০টি আসনে ভোট হবে। শুরুতে জল্পনা ছিল, ভোট ঘোষণা হবে মার্চের প্রথম সপ্তাহে। তা আরও জোর পেয়েছিল সপ্তাহের প্রথমে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অসমে গিয়ে ৭ মার্চ ভোট হতে পারে বলে মন্তব্য করায়। কিন্তু সব মহলকে খানিকটা চমকে দিয়েই ফেব্রুয়ারির শেষেই ভোটের দিন ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিল কমিশন। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় বাহিনী আসতে শুরু করেছে রাজ্যে। বিভিন্ন ‘স্পর্শকাতর’ এলাকায় তারা রুট মার্চও শুরু করে দিয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বারংবার বাংলায় সফরে এসে বলেছেন, কেন্দ্রীয় বাহিনীর শাসনে ভোট হবে। ফলে ভোটাররা যেন ভয় না পেয়ে নির্বিঘ্নে এবং নির্ভয়ে ভোট দেন।
কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে মুখ খুলেছে তৃণমূল। ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার খবর প্রসঙ্গে রাজ্যের শাসক শিবির তৃণমূলের তরফে বলা হয়েছে, তাদের আশা, নির্বাচন কমিশন ‘নিরপেক্ষ’ ভাবে কাজ করবে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর তত্ত্বাবধানে ‘অবাদ এবং নিরপেক্ষ’ ভোট হবে। তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের কথায়, ‘‘মানুষ তৃণমূলকে ভোট দেবেন। সেক্ষেত্রে তাঁরা যদি কেন্দ্রীয় বাহিনীর পর্যবেক্ষণে গণতান্ত্রিক কাঠামো মেনে ভোট হলে আপত্তির কিছু নেই। কিন্তু পরিকল্পিত ভাবে কোনও বিশেষ রাজনৈতিক দলকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার বিষয়টি যদি নজরে পড়ে, তা হলে আমরা সেটি নিয়ে নিশ্চয়ই উপযুক্ত জায়গায় পদক্ষেপ করব। আমাদের আশা, কেন্দ্রীয় বাহিনী কেন্দ্রের শাসকদলের হয়ে ভোট করাবে না।’’
পক্ষান্তরে, কংগ্রেসের নেতা তথা রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের কথায়, ‘‘কত দফায় ভোট হবে, সেটা কমিশন ঠিক করবে। আমরা চাই, মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে, নির্ভয়ে এবং শান্তিতে নিজেদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারেন।’’ বিজেপি নেতা তথা রাজ্য বিজেপি-র মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের কথায়, ‘‘বাংলার মানুষ নির্ভয়ে, শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোটকেন্দ্রে পৌঁছতে পারেন এবং ভোটকেন্দ্রের ভিতরে এবং বাইরে যাতে শান্তি বজায় থাকে, সেটা নির্বাচন কমিশন নিশ্চিত করুক। কত দফায় ভোট হবে, তা কমিশন ঠিক করবে। এটা নিয়ে আমাদের কোনও বক্তব্য নেই।’’