দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ কয়েকদিন আগের ঘটনা। সভা চলাকালীন অ্যাম্বুলেন্স এলেও বিরোধীদের চক্রান্ত বলে সেটিকে অন্য রাস্তা দিয়ে যেতে বলেছিলেন দিলীপ ঘোষ। যা নিয়ে দেখা দেয় বিতর্ক। তবুও পরবর্তীতে একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকারে বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেছিলেন, তিনি তার উক্তি নিয়ে একটুও অনুতপ্ত নন।
যা করেছেন বেশ করেছেন। অথচ একই অবস্থা হয়েছিল বৃহস্পতিবার। কিন্তু মানবিকতার নজির রেখে নিজের পদযাত্রা থামিয়ে আটকে পড়া অ্যাম্বুলেন্স যাওয়ার রাস্তা করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে ফের একবার প্রমাণ করলেন তিনি মানুষের নেত্রী। এর আগে গত ৭ জানুয়ারি দিলীপ ঘোষ, তাঁর সভার মাঝে একটি অ্যাম্বুলেন্স চলে আসায়, চালককে বলেছিলেন, ‘এখান দিয়ে যেতে দেওয়া যাবে না।
লোকে রাস্তায় বসে রয়েছে। ডিসটার্ব হয়ে যাবে। ঘুরিয়ে অন্য দিক দিয়ে নিয়ে যান।’ এই মন্তব্য ঘিরে শোরগোল পড়ে গেলেও দিলীপবাবু জানান, তিনি তার উক্তি নিয়ে একটুও অনুতপ্ত নন। অন্যদিকে, তাঁরই রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী এনআরসি ও সিএএ–এর প্রতিবাদে পথে নামলেও মানবিকতা যে ভোলেননি, সেটাই প্রমাণ করলেন।
মধ্যমগ্রামে নাম না করে বাম, কংগ্রেসকে ঠুকলেন মমতা
তাঁর দল কোনও হিংসাত্মক প্রতিবাদের পথে হাঁটবে না। বরং শান্তিপূর্ণভাবেই সিএএ–এনআরসি বিরোধী আলন্দোলন চালিয়ে যাবে। বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ মধ্যমগ্রাম থেকে বারাসতের কাছারি ময়দান পর্যন্ত মিছিলের আগে বুধবারের বন্ধে গোলমালের জন্য নাম না করে বিজেপি, বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেসকে এই ভাষাতেই বিঁধলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, ‘কেউ কেউ ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমেছে। আন্দোলনের নামে বাসে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। কেউ বলছে এটা সাম্প্রদায়িক আন্দোলন। কিন্তু শান্তিপূর্ণ আন্দোলনই জয়ী হয় বলে আমি জানি। তাই বলছি ঘোলা জলে মাছ না ধরে শান্তিপূর্ণ পথে আন্দোলন করুন’।
এরাজ্যে তাঁর সরকার যে সিএএ, এনআরসি বা এনপিআর করতে কখনওই দেবে না তা এদিন ফের স্পষ্ট করে দিয়েছেন মমতা। নাম না করে মতুয়া সম্প্রদায়কে ঠুকে তিনি বলেন, কয়েকটি সম্প্রদায়কে ভুল বুঝিয়ে বিজেপি বলেছে তাদের নিঃশর্তে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।
তাঁর সতর্কবার্তা, ‘বিজেপি বলছে নিঃশর্তে নাগরিক হতে বলে পাঁচ বছরের জন্য বিদেশি হতে হবে। তখন আপনার এতদিনের সব কিছু কেটে যাবে।’ এনপিআর–র নতুন সংস্থান অনুযায়ী মায়ের পূর্বপুরুষদের জন্মতারিখ, ঠিকানা দিতে হবে বলেও মন্তব্য করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস, তাঁর সরকার প্রায় সব উদ্বাস্তু কলোনিগুলিকে পাট্টা দিয়েছে এবং যেগুলি বাকি রয়ে গিয়েয়ে সেগুলিকেও দেওয়া হবে। ছবি- কুমার বসু৷