দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’-এর মঞ্চেও আমপান দুর্নীতির প্রসঙ্গ তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দু’একটি ঘটনা নিয়ে বিরোধীরা অতিরঞ্জিত করে দেখাচ্ছে বলে অভিযোগ করলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেইসঙ্গে বুধবার মমতা বলেন, “পঞ্চায়েতে সিপিএম ১০০ শতাংশ চুরি করত। এখন কোথাও কোথাও ৭-৮ শতাংশ হচ্ছে। আমি আমার পার্টিকেও ছেড়ে কথা বলিনি। পুলিশ অ্যাকশন নিচ্ছে।”

এদিন হাজরায় সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন মমতা। সেখানে তিনি বলেন, “দু’তিনটি জায়গায় ছোট ঘটনা ঘটেছে, তা নিয়ে রাজনীতি করতে নেমে পড়েছে! অনেক চোরকে তাড়িয়েছি। ৯০ শতাংশ দুর্নীতি কমিয়েছি। সিপিএমের মেকানিজমই ছিল চুরি করা। ১০০ শতাংশ  দুর্নীতি করত সিপিএম।”

মুখ্যমন্ত্রীর এই কথার প্রতিক্রিয়ায় তরুণ সিপিএম নেতা শতরূপ ঘোষ বলেন, “সিপিএম জমানায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ৭-৮ শতাংশ মাথা খারাপ ছিল। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর ১০০ শতাংশ মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে।” বাম শিবিরের আরএক বর্ষীয়ান নেতার কথায়, “উনি যাঁর আমলে কেন্দ্রে প্রথম মন্ত্রী হয়েছিলেন, সেই রাজীব গান্ধী এসে বাংলার পঞ্চায়েতী ব্যবস্থাকে মডেল বলে গিয়েছিলেন। এখন নিজের দলের দুর্নীতি ঢাকতে আষাঢ়ে গপ্প ফাঁদলে হবে!”

মুখ্যমন্ত্রী এদিন আরও বলেন, “একদিনে সবার অভ্যেস যায় না। আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছি। পুলিশ ব্যবস্থা নিচ্ছে। দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া হয় না।” উমফানের পর টানা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকার ঘটনায় ব্যপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল নাগরিকদের মধ্যে। জায়গায় জায়গায় অবরোধ, বিক্ষোভে তোলপাড় পড়ে গিয়েছিল কলকাতা ও শহরতলিতে। এদিন সেই প্রসঙ্গও উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, “ঘূর্ণিঝড়ের সময় কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ ছিল না। আমাকে গালিগালাজ শুরু করল। বাম আমলে বলত লোডশেডিংয়ের সরকার, আর নেই দরকার। এখন তো লোডশেডিং উঠেই গেছে।”

আমপানের ত্রাণ নিয়ে যে গ্রামে গ্রামে বিস্তর দুর্নীতি হচ্ছে সেই অভিযোগ জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই উঠতে শুরু করেছিল। রথের পরের দিন সর্বদল বৈঠকে ত্রাণ দুর্নীতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সামনে ক্ষোভের জ্বালামুখ খুলে দিয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ, সুজন চক্রবর্তীরা। তার পরেও অশান্তি থামেনি। কুলতলিতে খুনোখুনি পর্যন্ত হয়ে গিয়েছে। দুই চব্বিশ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর-সহ আমপান বিধ্বস্ত প্রায় সব জেলা থেকেই দুর্নীতির অভিযোগ উঠতে থাকে। জনমানসে ক্ষোভ এমন জায়গায় যায় যে, দেখা গিয়েছে পঞ্চায়েত প্রধানকে কান ধরে উঠবস করাচ্ছেন গ্রামবাসীরা। এই ঘটনা যেমন দেখা গিয়েছে বাসন্তীতে তেমনই তৃণমূলের উত্থানভূমি সিঙ্গুরেও।

আমপান দুর্নীতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর আজকের বক্তব্য প্রসঙ্গে বিজেপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, “সিপিএমের দুর্নীতি ছিল বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজ্যের মানুষ মুখ্যমন্ত্রী করেছিলেন। কিন্তু বাংলার মানুষ দেখল, সিপিএম যা ৩৪ বছরে খেয়েছে মমতার দল ৯ বছরে তার দ্বিগুণ টাকা খেয়ে ফেলেছে। তাই বাংলার মানুষ এবার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে,সিপিএম গেছে, এবার মমতার পালা। একুশে বিজেপির সরকার হচ্ছে বাংলায়।”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here