নতুন করোনা এখন ‘সুপার স্প্রেডার’, সতর্ক থাকতে হবে: নীতি আয়োগ

0
686

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ভারতে করোনাভাইরাসের নতুন স্ট্রেনের খোঁজ এখনও পাওয়া যায়নি। তবে সবরকমভাবেই সতর্ক থাকতে হবে, এমনটাই জানালেন নীতি আয়োগের সদস্য (স্বাস্থ্য), ডক্টর ভি কে পল। তাঁর বক্তব্য, ভারতে দৈনিক সংক্রমণের হার কমেছে। করোনা অ্যাকটিভ কেসের হার তিন শতাংশের নিচে নেমেছে। কোভিড কার্ভ নিম্নমুখী। এমন পরিস্থিতিতে করোনার ‘সুপার স্প্রেডার’ স্ট্রেন ছড়িয়ে পড়লে বিপদ বাড়বে।
ডক্টর পল বলছেন, “আমাদের দেশে এখন করোনা পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। অন্যান্য দেশগুলির তুলনায় মৃত্যুহারও কম। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ধারাবাহিকভাবে সংক্রমণের হার কমেছে। এটাই ভাল দিক, ধরে রাখতে হবে। তার জন্য সতর্কতা দরকার।”


দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যান্ডে করোনাভাইরাসের যে নতুন স্ট্রেনের খোঁজ মিলেছিল সেপ্টেম্বরেই তা এখন লাগামহীনভাবে ছড়িয়েছে গোটা ব্রিটেনেই। সে দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানাচ্ছে, অক্টোবরে ৫০ শতাংশ কোভিড রোগীর শরীরে এই নতুন স্ট্রেন বি.১.১.৭ বা ভিইউআই-২০২০১২/০১ খুঁজে পাওয়া গেছে। ব্রিটেন থেকে এই নতুন স্ট্রেন এখন ইউরোপের আরও কয়েকটি দেশেও ছড়িয়ে পড়েছে বলে খবর। নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, অস্ট্রেলিয়ায় নতুন স্ট্রেনের খোঁজ পাওয়া গেছে। ডক্টর পল বলছেন, ব্রিটিশ বিজ্ঞানীদের সঙ্গে কথা বলে বোঝা গেছে, এই নতুন স্ট্রেন ৭০ শতাংশ দ্রুত গতিতে সংক্রামিত হতে পারে। এতদিন করোনার যেসব স্ট্রেনের হদিশ মিলেছিল তাদের থেকেও তাড়াতাড়ি বিভাজিত হয়ে মানুষের শরীরে ছড়াতে পারে। অর্থাৎ নতুন স্ট্রেনের ট্রান্সমিসিবিলিটি রেট বা ছড়িয়ে পড়ার হার সাঙ্ঘাতিক। তাই একে সুপার স্প্রেডার বলছেন বিজ্ঞানীরা। ভারতের মতো বিপুল জনসংখ্যার দেশে এমন ভাইরাল স্ট্রেন ছড়িয়ে পড়লে সংক্রমণ আর রোখা যাবে না। করোনা রোগীর সংখ্যা লাগামছাড়া হয়ে যাবে।

আরএনএ ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনেই মিউটেশন বা জিনের বিন্যাস বদলাচ্ছে, বলেছেন ডক্টর ভি কে পল। তাই এই নতুন স্ট্রেন অনেক বেশি ‘মিউট্যান্ট’ । এই স্ট্রেনের দ্রুত বিভাজিত হয়ে ছড়িয়ে পড়ার কারণই হল N501Y মিউটেশন, যা মানুষের দেহকোষে ভাইরাসকে দ্রুত ঢুকে পড়তে সাহায্য করছে। তাছাড়া এমনভাবে জিনের বিন্যাস বদলাচ্ছে ভাইরাস যে আরটি-পিসিআর টেস্টেও ধরা পড়ার সম্ভাবনা কম। তাই প্রয়োজনের থেকে অনেক বেশি সতর্ক থাকতে হবে দেশবাসীকে। কোনওভাবেই যাতে নতুন স্ট্রেন ভারতে না ঢোকে সেদিকটা গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে।
আজ থেকে আগামী ৩১ ডিসেম্বর অবধি ব্রিটেনের সঙ্গে সমস্ত বিমান যোগাযোগ বন্ধ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু কাল অবধি ব্রিটেন ফেরত বিমানে অন্তত ২০ জন করোনা নিয়ে দেশে ঢুকেছেন। কলকাতা বিমানবন্দরেই লন্ডন ফেরত দু’জনের শরীরে কোভিড সংক্রমণ ধরা পড়েছে। যদিও করোনার নতুন স্ট্রেন কিনা জানা যায়নি। অন্যদিকে, হিথরো বিমানবন্দর থেকে দিল্লি, অমৃতসর, আহমেদাবাদ, চেন্নাই বিমানবন্দরেও করোনা নিয়ে নেমেছেন যাত্রীরা। ব্রিটেনফেরত সব যাত্রীকেই কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। যাঁরা সংক্রামিত তাঁদের পরীক্ষা করা হচ্ছে। জানা গেছে, মঙ্গলবার রাত অবধি যাঁরা ব্রিটেন থেকে দেশে ফিরেছেন তাঁদের সকলকেই রিয়েল টাইম আরটি-পিসিআর টেস্টের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। সংক্রমণের সামান্য উপসর্গ থাকলেই উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Previous articleবাংলায় ডিসেম্বর জুড়ে চলবে শীতের দাপট
Next articleপিছিয়ে গেল,মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here