দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ এমনিতেই পাঞ্জাবি পাজামাই পরেন। কিন্তু গত কিছুদিন যাবৎ শুভেন্দু অধিকারীকে দেখা যাচ্ছে, সামাজিক অনুষ্ঠানে পাঞ্জাবির সঙ্গে ধুতি পরছেন। আর পুজো আচ্চা থাকলে তো কথাই নে। ষোল আনা বাঙালি পোশাকে দেখা যাচ্ছে শুভেন্দুকে! আজ সোমবার নন্দীগ্রামে রাস উৎসবেও গিয়েছিলেন ধুতি পরে।
সাম্প্রতিক রাজনীতিতে এরও কি কোনও প্রাসঙ্গিকতা রয়েছে? নাকি এমনি এমনি!
তৃণমূল, রাজনীতি এবং ধুতির ত্র্যহস্পর্শ হলে পুরনো একটা ঘটনার কথা ভেসে ওঠে। এক দশকেরও বেশি পুরনো ঘটনা। ২০০৯ সালে ভোট হয়ে গেছে। ফলও বেরিয়ে গেছে। কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে উনিশটি আসনে জিতেছে তৃণমূল। এ বার মন্ত্রিসভার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পূর্ণ মন্ত্রী হিসাবে শপথ নেবেন, বাকি ৬ জন শপথ নেবেন প্রতিমন্ত্রী হিসাবে।
ভাল কথা। কিন্তু শপথের আগের দিন হঠাৎ হুড়োহুড়ি পড়ে গেল! দিদি নাকি কথায় কথায় জিজ্ঞেস করেছিলেন, “এই আপনারা কী পরে শপথ নেবেন?” সবাই দিদির মুখের দিকে তাকিয়ে। নেত্রী বলেন, “বাঙালির ছেলে, সবাই ধুতি পাঞ্জাবি পরে আসবেন।”.
শিশির অধিকারী, সৌগত রায়দের সমস্যা হয়নি এমনিতেই ধুতি পাঞ্জাবি পরেন। কিন্তু মুকুল রায়, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, সুলতান আহমেদ, চৌধুরী মোহন জাটুয়াদের সে বালাই ছিল না। ফলে শেষ মুহূর্তে কলকাতা থেকে তড়িঘড়ি ধুতি পাঞ্জাবি আনিয়ে তার পরই শপথ নিতে যান।
তবে শুধু ওই দিনই। তার পর থেকে সুদীপবাবু বা দীনেশ ত্রিবেদীদের ধুতি পাঞ্জাবিতে বিশেষ দেখা যায়নি। রাজ্য মন্ত্রিসভাতেও সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মতো প্রবীণ কয়েক জন ছাড়া ধুতি কেউ পরেন না। তবে হ্যাঁ একদা পাশ্চাত্য পোশাকে অভ্যস্ত হলেও অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র নিয়ম করেই ধুতি পরেন।
এখন কথা হল, ধুতি নিয়েও কেন আলোচনা হচ্ছে!
পর্যবেক্ষকদের অনেকে বলছেন, কারণ ইদানীং রাজ্য রাজনীতি বাংলা, বাঙালি, বাঙালিয়ানা, বহিরাগত বিতর্ক মজে রয়েছে। এ ব্যাপারে চুলচেরা বিচার চলছে। কে বাংলায় থেকেও বাঙালি নন, কে অবাঙালি হলেও বাঙালি সে সব নিয়ে আলোচনা চলছে। তার মধ্যে যদি একজন তরুণ নেতাকে প্রায়ই ধুতি পাঞ্জাবি পরতে দেখা যায় কথা তো হবেই। আর যাই হোক তাঁকে বহিরাগতও বলা যাবে না, অবাঙালিও না। এতো খাঁটি বাঙালি!