দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ উত্তর কোরিয়ার সরকারের দাবি, এখনও পর্যন্ত সেদেশে একজনও করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হননি। মার্কিন সেনাবাহিনীর এক কম্যান্ডারের দাবি, চিন থেকে যাতে উত্তর কোরিয়ায় করোনা না ঢোকে, সেজন্য শুট টু কিল-এর অর্ডার দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ করোনা আক্রান্ত কাউকে দেখলেই গুলি করবে উত্তর কোরিয়ার নিরাপত্তারক্ষীরা। উত্তর কোরিয়ার স্বাস্থ্যব্যবস্থার হাল খুবই খারাপ। অতিমহামারীর মোকাবিলা করা সেদেশের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই করোনা আক্রান্তদের হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গত জানুয়ারিতেই করোনা ঠেকানোর জন্য উত্তর কোরিয়া চিনের সীমান্ত সিল করে দেয়। জুলাইতে সরকার নিয়ন্ত্রিত মিডিয়া জানিয়েছে, সতর্কতা সর্বোচ্চ সীমা অবধি বাড়ানো হয়েছে। ইউএস ফোর্সের কোরিয়ার কম্যান্ডার রবার্ট আবরামস জানিয়েছেন, চিনের সীমান্ত সিল করার ফলে উত্তর কোরিয়ায় চোরাকারবার বৃদ্ধি পেয়েছে। বাধ্য হয়ে এব্যাপারে হস্তক্ষেপ করেছে সরকার।
ওয়াশিংটনে সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের অনলাইন কনফারেন্সে আবরামস বলেন, “করোনা ঠেকাতে উত্তর কোরিয়া নতুন বাফার জোন তৈরি করেছে। চিনের সীমান্ত থেকে এক-দুই কিলোমিটার জায়গা সেই বাফার জোনের অন্তর্গত। সেখানে মোতায়েন করা আছে নর্থ কোরিয়ান স্পেশ্যাল অপারেশনস ফোর্স। তাদের শুট টু কিল অর্ডার দেওয়া হয়েছে।”
সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়ায় উত্তর কোরিয়ার অর্থনীতিতে প্রভাব পড়েছে যথেষ্ট। চিন থেকে সেদেশে আমদানি কমেছে ৮৫ শতাংশ। পিয়ংইয়ং-এর পরমাণু কর্মসূচিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিছুদিন আগেই উত্তর কোরিয়ায় আছড়ে পড়েছিল বিধ্বংসী সাইক্লোন ‘মায়সাক’। সরকার নিয়ন্ত্রিত মিডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, ২ হাজারের বেশি বাড়ি হয় ভেঙে পড়েছে, নয়তো জলে ডুবে গিয়েছে।
আবরামসের মতে, অদূর ভবিষ্যতে উত্তর কোরিয়া কোনও উস্কানিমূলক আচরণ করবে না। কারণ সাইক্লোনের ধাক্কা সামলে উঠতে তার অনেক সময় লাগবে। তাছাড়া করোনা ঠেকাতেও পিয়ংইয়ং-এর বিপুল খরচ হচ্ছে। একটি সূত্রে জানা যায়, আগামী মাসেই উত্তর কোরিয়ায় শাসক দলের ৭৫ বছর পূর্তি উদযাপন করবেন একনায়ক কিম জং উন। সেই উপলক্ষে তিনি হয়তো নতুন কয়েকটি অস্ত্রেরও প্রদর্শনী করতে পারেন।
এর মধ্যে সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের ওয়েবসাইটে উত্তর কোরিয়ার সিনপো সাউথ নাভাল শিপইয়ার্ডের কয়েকটি ছবি প্রকাশিত হয়েছে। তাতে দেখা যায়, সাবমেরিন থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। উত্তর কোরিয়া যদি সত্যিই ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করে, তাহলে ধরে নিতে হবে, তাদের পরমাণু কর্মসূচি বন্ধ হয়নি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে যে চুক্তি হয়েছিল, উত্তর কোরিয়ার একনায়ক কিম তা মানছেন না।