দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ দুপুরেই নামল সন্ধ্যা। কলকাতা ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় স্বস্তির বৃষ্টি। মঙ্গলবার দুপুরে ঝমঝমিয়ে বৃষ্টিতে ভিজল বাংলার একাধিক এলাকা।
পূর্বাভাস অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গের একাধিক জেলায় শুরু হল বৃষ্টিপাত ও তার সঙ্গে কালবৈশাখী ঝড়।কয়েক মিনিটের কালবৈশাখী ঝড়ের দাপটে হুগলী জেলার বিভিন্ন জায়গায় ভেঙে পড়েছে বহু গাছ, উড়ে গেছে ঘরের চাল। অন্যদিকে পড়ায় আধঘন্টার শিলাবৃষ্টিতে কোটি কোটি টাকার ফসল নষ্ট হল মালদা জেলায়।
একদিকে করোনার থাবা অন্যদিকে কালবৈশাখী। কার্যত মাথায় হাত মালদার চাষীদের। সব থেকে বেশী নষ্ট হয়েছে পাঁকা ধান ও পাট। সোমবার রাতে এই জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর, চাঁচল, রতুয়া সহ বিভিন্ন এলাকায় শুরু হয় কালবৈশাখী ঝড়। মঙ্গলবার ভোরে আধ ঘন্টার শীলাবৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতি হয় ফসলের। পাঁকা ধান মাঠে ঝরে যায় ও পাট গাছের ডগা থেকে ভেঙে সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যায়। সকালে মাঠে ক্ষতির পরিমাণ দেখে কার্যত কেঁদে ফেলেন চাষিরা। এই করোনা অতিমারীতে কী খেয়ে বেঁচে থাকবেন তাঁরা? এই দুশ্চিন্তা তাঁদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে ইতিমধ্যে।
হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নং ব্লকের মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের দক্ষিণ রামপুর গ্রামের বাসিন্দা মহম্মদ সামিম জানান যে, এবছর ধার দেনা করে ও সুদে ঋণ নিয়ে তিন বিঘা পাট চাষ করেছিলেন। ইতিমধ্যে সার ও নিড়ানীতে যথেষ্ট টাকা খরচ হয়ে গেছে। পাট বিক্রি করে ঋণ পরিশোধ করার কথা। কিন্তু পাট তোলার আগেই সব শেষ! কিভাবে পরিশোধ করবে ঋণ, সেই চিন্তায় উড়েছে ঘুম।
বৃষ্টির দৌলতে গা জ্বালানি গরম ভাব অনেকটাই উধাও। যদিও বেলা গড়ালে রোদের তাপে অস্বস্তি বজায় থাকলেও ভোর বা রাতের দিকে তাপমাত্রা অনেকটাই স্বস্তি দিচ্ছে বঙ্গবাসীকে। গত কয়েকদিন ধরেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বৃষ্টি হচ্ছে। বিকেলের পর কালো মেঘে ঢাকছে আকাশ। যদিও গতকাল কলকাতা ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় বৃষ্টি হয়নি। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আজ কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টির সঙ্গে বইতে পারে ঝোড়ো হাওয়া।
হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, দুই ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর, কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, দুই বর্ধমান, বীরভূম, বাঁকুড়া, নদিয়া, মুর্শিদাবাদে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হতে পারে। বৃষ্টির সঙ্গে ঘণ্টায় ৩০-৪০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে।
দক্ষিণবঙ্গের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতেও বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির পূর্বাভাস জারি করা হয়েছে। দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, দুই দিনাজপুর, মালদায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টির সঙ্গে ঘণ্টায় ৩০-৪০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে।
আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা যাচ্ছে, আজ কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকতে পারে ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছে। শহরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকতে পারে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছে। গতকাল শহরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৩.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের থেকে ২ ডিগ্রি কম। শহরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৭.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শহরে বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণ সর্বাধিক ৯৪ শতাংশ, ন্যূনতম ৫৬ শতাংশ৷