দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ নির্দেশিকা ভাঙছে এমন প্রায় ৫ কোটি ভিডিও মুছে দিল টিকটক। বৃহস্পতিবার এই সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপের তরফে জানানো হয়েছে, ২০১৯ সালের শেষদিক থেকে আপলোড করা ৪ কোটি ৯০ লাখের বেশি ভিডিও মুছেছে তারা। এই ভিডিওগুলিতে অ্যাপের নির্দেশিকা মানা হয়নি বলেই জানানো হয়েছে।
টিকটকের তরফে একটি নির্দেশিকা জারি করে জানানো হয়েছে, এই ৪ কোটি ৯০ লাখের বেশি ভিডিও এই অ্যাপে আপলোড করা ভিডিওর ১ শতাংশেরও কম। কিন্তু এই ভিডিওগুলিতে ‘হিংসার ছবি, বিদ্বেষমূলক বার্তা ও নগ্নতা’ ছিল। তাই এই ভিডিওগুলি মুছে দেওয়া হয়েছে।
জানা গিয়েছে, মুছে দেওয়া ভিডিওগুলির মধ্যে তিনভাগের একভাগ ভারতীয় ব্যবহারকারীরা আপলোড করেছিল। তারপরেই রয়েছে আমেরিকা ও পাকিস্তানের ব্যবহারকারীদের ভিডিও।
গত ২৯ জুন টিকটক- সহ ৫৯টি চিনা অ্যাপ বন্ধ করেছে কেন্দ্র। কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের পরেই গুগল প্লে ও অ্যাপলিকেশন স্টোর থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় টিকটককে। কিন্তু যাঁদের ফোনে আগে থেকে এই অ্যাপ ইনস্টল করা ছিল তাঁদের ফোনে এই অ্যাপ কাজ করছিল। কিন্তু ৩০ জুন রাত থেকে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এমনকি ডেস্কটপেও আর কাজ করছে না এই অ্যাপ।
এই সিদ্ধান্তের ফলে সমস্যায় পড়েছেন ভারতে ওই অ্যাপে কাজ করা হাজার হাজার কর্মী। বিশেষ করে ভারতে টিকটকের জনপ্রিয়তার কথা মাথায় রেখে এখানে কর্মীর সংখ্যাও বাড়িয়েছিল এই সংস্থা। কিন্তু অ্যাপ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অথৈ জলে কর্মীরা। এই অবস্থায় কর্মীদের উদ্দেশে বার্তা দেন টিকটকের সিইও কেভিন মায়ের।
১ জুলাই কোম্পানির ওয়েবসাইটে কর্মীদের উদ্দেশে এই বার্তা দেন টিকটকের সিইও ও বাইট ডান্সের চিফ অপারেশনস অফিসারে কেভিন মায়ের। মায়েরের এই পোস্টের ক্যাপশনে লেখা ছিল ‘ভারতে আমাদের কর্মীদের প্রতি বার্তা’। তাতে তিনি বলেন, “২০১৮ সাল থেকে কঠিন পরিশ্রমের ফলে ভারতে ২০০ মিলিয়ন ইউজার আমাদের। তাঁরা টিকটকে নিজেদের প্রতিভার বিচ্ছুরণ ঘটান। তাঁদের অভিজ্ঞতার কথা সবার সঙ্গে ভাগ করে নেন। আমাদের কর্মীরাই আমাদের সবথেকে বড় শক্তি। তাই তাঁদের ভাল থাকা আমাদের প্রধান কর্তব্য। আমরা ভারতে থাকা আমাদের ২০০০-এর বেশি কর্মীকে বলতে চাই, তাঁদের সুযোগ ও ফের আগের পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য ১০০ শতাংশ চেষ্টা করছি আমরা।”
ব্যবহারকারীদের উদ্দেশে সিইও আরও বলেন, “আপনারা যে ভালবাসা ও সমর্থন আমাদের দিয়েছেন, তার জন্য আমরা অভিভূত। আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি এই বিশ্বাস টিকিয়ে রাখার জন্য সবকিছু আমরা করব। ডিজিটাল ভারত গড়ার ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আমাদের থাকবে।”
মায়ের যতই বলুন, কেন্দ্রের মনোভাব অবশ্য সম্পূর্ণ আলাদা। কেন্দ্রের তরফে একবারও বলা হয়নি প্রয়োজনীয় বদল হলে সেই অ্যাপ ফের ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া হবে। কিংবা ব্যান করা অ্যাপের কোনও প্রতিনিধির সঙ্গে কেন্দ্রীয় তথ্য ও প্রযুক্তিমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ দেখা করার কথা বলেননি। সুতরাং এই বদল করেও আখেরে কোনও লাভ হবে কিনা তার কোনও নিশ্চয়তা নেই।