দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ হেমতাবাদের বিজেপি বিধায়কের রহস্যমৃত্যুকে পুলিশ কেন আত্মহত্যা বলছে তা নিয়ে সোমবার সকালে প্রশ্ন তুলেছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। সন্দেহ প্রকাশ করে রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান বলেন, তদন্তের আগে আত্মহত্যা বলে দেওয়া ধামাচাপা দেওয়ার ইঙ্গিত। রাজ্যপাল এও দাবি করেন, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মোতাবেক বিশেষজ্ঞদলের উপস্থিতিতে যেন ময়নাতদন্তের ভিডিওগ্রাফি করানো হয়।
ঠিক তার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই পরপর তিনটি টুইট করে বিবৃতি দিল পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ। সেই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “মৃতের শার্টের পকেট থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়েছে। তাতে দু’জনের নাম লিখে তাঁর মৃত্যুর জন্য দায়ী করা হয়েছে।”
একইসঙ্গে রাজ্য পুলিশের তরফে বলা হয়েছে, তদন্তের জন্য সমস্ত প্রয়োজনীয় পদক্ষে করেছে পুলিশ। ঘটনাস্থলে পুলিশ কুকুর নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ফরেনসিক দলের বিশেষজ্ঞরাও ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছেন। বেলা পৌনে একটা নাগাদ টুইট করে পুলিশের তরফে এও বলা হয়েছে, ময়নাতদন্ত ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। সেইসঙ্গে সাধারণ মানুষের উদ্দেশে পুলিশ আবেদন জানিয়েছে, অনুমানের ভিত্তিতে তাঁরা যেন কোনও উপসংহার না টানেন। তদন্ত শেষ হওয়া পর্যন্ত যাতে অপেক্ষা করা হয়।
তবে সুইসাইড নোটে কাদের নাম রয়েছে তা অবশ্য পুলিশ জানায়নি। রাজনৈতিক পরিচয় সম্পর্কেও বিশেষ কিছু বলেনি পুলিশ। তাৎপর্যপূর্ণ হল, জেলা পুলিশের তরফে সংবাদমাধ্যমে কিছু বলা হয়নি। যা বিবৃতি দেওয়ার সবটাই দিয়েছে রাজ্য পুলিশ। অনেকের মতে, হতে পারে আগের অভিজ্ঞতা থেকেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ। তাঁদের মতে, ২০১৮ সালের জুন মাসে পুরুলিয়ার বলরামপুরে বিজেপি কর্মী দুলাল কুমারের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের পর ল্যাম্প পোস্ট থেকে দেহ নামানোর আগেই তৎকালীন পুলিশ সুপার জয় বিশ্বাস আত্মহত্যা বলে মন্তব্য করেছিলেন। তা নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়। চাপে পরে পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার বদল করতে হয় নবান্নকে। হয়তো সে কারণেই এবার জেলা পুলিশকে বিবৃতি দিতে বারণ করা হয়েছে।
এদিন সকালেই উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ ব্লকের বালিয়ায় দেবেন মোড়ের কাছে একটি মোবাইলের দোকানের বারান্দা থেকে দেবেন্দ্রনাথ রায়ের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। দীর্ঘদিনের সিপিএম নেতা দেবেন্দ্রনাথবাবু ২০১৬ সালে সিপিএমের টিকিটে বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন। তারপর ২০১৯ সালে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। এই ঘটনাকে সরাসরি রাজনৈতিক হত্যা বলে অভিযোগ করেছে বিজেপি।