দেশেরসময় ওয়েবডেস্কঃ পূর্ব লাদাখের গালওয়ান নদীর উপত্যকায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে ভারত এবং চিন দু’পক্ষই তাদের বাহিনী সরিয়ে নিয়েছে বলে খবর। যার ফলে তৈরি হয়েছে একটি নিরপেক্ষ অঞ্চল। যদিও সেনাবাহিনীর তরফে সোমবার বেলা ১২টা পর্যন্ত এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট করে কিছু বলা হয়নি। তবে সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি আগের অবস্থান থেকে বেশ কিছুটা সরে এসেছে। জানা যাচ্ছে চিনা বাহিনী অন্তত এক কিলোমিটার পিছনে সরে গিয়েছে। সূত্রের বক্তব্য, “এটা এখন দেখা হচ্ছে যে এই বিষয়টি কতক্ষণ স্থায়ী হয়।”
দুই বাহিনীর পিছনে সরার ফলে মাঝে তৈরি হয়েছে একটি নিরপেক্ষ অঞ্চল তথা ‘বাফার জোন।’ তবে এটা শুধু গালওয়ান অঞ্চলে ঘটেছে বলেই জানা গিয়েছে। সূত্র মারফত এও জানা গিয়েছে, দু’পক্ষই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে তাদের অস্থায়ী কাঠামো সরিয়ে নিয়েছে।
গত আট সপ্তাহ ধরে গালওয়ান উপত্যকা-সহ লাদাখ সীমান্তে ভারত-চিন উত্তেজনা বিরাজ করছে। ১৫ জুন রক্তক্ষয়ী সংঘাতের ঘটনা ঘটে। তার আগে ৬ জুন লেফটেন্যান্ট পর্যায়ের বৈঠক থেকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল ভারত এবং চিন দু’পক্ষই ওই এলাকা থেকে বাহিনী সরিয়ে নেবে। সীমান্তে যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে তা প্রশমিত করতে দু’পক্ষই উদ্যোগী হবে। কিন্তু তারপর উত্তেজনা তো কমেইনি বরং চরম সংঘাতের ঘটনা ঘটে যায়। অনেকের মতে, ১৯৬৭ সালের পর ভারতের বিরুদ্ধে চিনা সেনাদের এমন আগ্রাসী রূপ আর দেখা যায়নি।
চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মির সঙ্গে সংঘর্ষে ১৫ জুন মৃত্যু হয় ২০ জন ভারতীয় সেনার। আহত হন ৭৬ জন। চিনের তরফেও ক্ষয়ক্ষতির কথা স্বীকার করা হয়। তবে কতজন পিএলএ জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে তা বেজিং স্পষ্ট করেনি।
ওই সংঘর্ষের পর ২৩ জুন ফের লেফটেন্যান্ট পর্যায়ের বৈঠক হয়। তারপর আরও দু’বার নিজেদের মধ্যে বৈঠক করেন চিন ও ভারতের লেফটেন্যান্ট পর্যায়ের আধিকারিকরা। এর মধ্যেই একাধিক উপগ্রহ চিত্র সামনে এসেছে। যেখানে দেখা গিয়েছে চিনাবাহিনী শুধু প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে ভারতের অনেকটা ভিতরে ঢুকে আসেনি, তারা তাঁবু বানিয়েছে, অস্ত্রও সাজিয়ে ফেলেছে।
গত শুক্রবার হঠাৎ লেহ সফরে চলে যান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার আগে দু’দিনের সফর সেরে এসেছিলেন সেনাপ্রধান জেনারেল মনোজ মুকুন্দ নারাভানে। লেহতে গিয়ে সেনাবাহিনীর প্রশংসার পাশাপাশি চিনের নাম না করে কড়া হুঁশিয়ারি দেন মোদী। বলেন, “সাম্রাজ্য বিস্তারের জমানা খতম হয়ে গিয়েছে। এখন উন্নয়নের জমানা। ইতিহাস সাক্ষী রয়েছে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি হয় পরাস্ত হয়েছে, কিংবা পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে”।
তাৎপর্যপূর্ণ হল, তারপর ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই জানা গেল, অনেকটা পিছু হঠেছে চায়না বাহিনী।