চিনা সেনার হামলায় মৃত কর্নেল বি সন্তোষ বাবু, ছেলের জন্য গর্বিত -মা মঞ্জুদেবী

0
1097

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ লাদাখে চিনা সেনার হামলায় প্রাণ দিলেন কর্নেল বি সন্তোষ বাবু। না, ছেলের এমন মৃত্যুতে চোখে জল নেই প্রয়াত কর্নেলের মা বা বাবার। উল্টে ছেলের জন্য গর্বিত তাঁরা। দুঃখ কি আর পাননি! পেয়েছেন। তবে সেই দুঃখের সঙ্গে মিশে রয়েছে শহিদের বাবা-মা হওয়ার গর্ব।

এদিন লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় তিন ভারতীয় সেনার মৃত্যু হয়ছে। না গোলাগুলিতে নয়। এক ভারতীয় জওয়ান সংবাদসংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন, এদিন ভারতীয় সেনা এবং চিনা সেনার মধ্যে তুমুল হাতাহাতি হয়। সেনাসূত্রে জানা গিয়েছে, চিনা সেনার ছোঁড়া পাথর আর ব্যাটনের আঘাতেই প্রাণ দিয়েছেন তিন জন। এঁদের মধ্যে একজন কর্নেল বি সন্তোষ বাবু তেলেঙ্গানার বাসিন্দা। বাকি দু’জনের মধ্যে হাবিলদার পালানির বাড়ি তামিলনাড়ুতে এবং সেপাই ওঝার বাড়ি বিহারে।

মঙ্গলবার সকালে ভারতের তরফে বলা হয়েছিল লাদাখে চিনা সেনার সঙ্গে মুখোমুখি সংঘাতে ভারতীয় বাহিনীর এই তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু পরে যে খবর আসে তা আরও মারাত্মক। মঙ্গলবার রাতে সংবাদসংস্থা এএনআই জানিয়েছে, যে সরকার স্বীকার করেছে ভারতীয় বাহিনীর অন্তত ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে এই সংঘাতে।

তেলেঙ্গানার সূর্যপেট জেলায় বাড়ি কর্নেল বাবুর। বাড়িতে বাবা, মা ছাড়াও আছেন স্ত্রী এবং দুই সন্তান। আট বছরের মেয়ে আর সাড়ে তিন বছরের ছেলে। বাবা মায়ের একমাত্র ছেলে বাবু। তাঁর মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরে সংবাদমাধ্যমকে মা মঞ্জুদেবী বলেন, “আমি একই সঙ্গে দুঃখিত এবং গর্বিত। আমার ছেলে দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছে। তবে একজন মা হিসেবে আমার কষ্ট হচ্ছে। ও ছিল আমার একমাত্র সন্তান।”

প্রায় একই রকম বক্তব্য, কর্নেল বাবুর বাবা উপেন্দ্রর। অবসরপ্রাপ্ত ব্যাঙ্ককর্মী উপন্দ্রবাবু বলেন, “ছেলেবেলা থেকেই আমার সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু সেই ইচ্ছাপূরণ হয়নি। আমার স্বপ্নপূরণ করে আমার ছেলে। ও খুবই মেধাবী এবং কাজের ছিল। সেনাবাহিনীতে ১৫ বছর কাজ করার মধ্যেই অনেকগুলি প্রমোশন পেয়েছে।”

তবে দেশজুড়ে করোনাভাইরাসের এমন সংক্রমণ শুরু না হলে হয়তো লাদাখেই থাকতে হত না কর্নেল সন্তোষ বাবুকে। অনেক আগেই হায়দরাবাদে বদলির অর্ডার হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সেটা কার্যকর হয়নি করোনা পরিস্থিতির জন্য। জানিয়েছেন মা মঞ্জুদেবী। কর্নেল বাবুর জন্য গর্বিত তেলেঙ্গানা সরকারও। ইতিমধ্যেই পরিবারকে সব রকমের সহযোগিতা করার ঘোষণা করে দিয়েছে কে চন্দ্রশেখর রাও সরকার।

একই ভাবে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী পালানস্বামীও টুইট করে শোকবার্তা জানিয়েছে তাঁর রাজ্যের বাসিন্দা শহিদ হাবিলদার পালানির জন্য। সমবেদনা জানিয়েছে পরিবারের প্রতি। তামিলনাড়ুর রামানাথপুরম জেলার কাদুকালুর গ্রামের বাসিন্দা পালানির পরিবারের একজনের চাকরি ও ২০ লাখ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে রাজ্য সরকার। জানা গিয়েছে, হাবিলদার পালানির বাড়িতে রয়েছেন স্ত্রী ও দুই সন্তান। ১০ বছরের ছেলে আর ৮ বছরের মেয়ে।

তৃতীয় শহিদ সেপাই ওঝার বাড়ি বিহারে। ইতিমধ্যেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার এই মৃত্যু নিয়ে শোক জ্ঞাপন করেছেন।

Previous articleপ্রধানমন্ত্রীর ডাকা বৈঠকে থাকছেন না মমতা, চিকিৎসকদের নিয়ে পৃথক মিটিং ডেকেছেন মুখ্যমন্ত্রী
Next articleলাদাখে ভারত-চিন সংঘাত নিয়ে সর্বদল বৈঠক ডাকলেন মোদী

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here