কোভিড–১৯ মোকাবিলায় শয্যা বাড়ছে আইডি, বাঙুর, আর জি করে’‌, নবান্নে ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর

0
481

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ করোনাভাইরাস মোকাবিলা ১০০ শতাংশ না পারলেও ৯৯ শতাংশ আমরা করবই। এখন ব্যবসা করার সময় নয়, মানবিকতার সময়।’ বৃহস্পতিবার নবান্নের সভাঘরে রাজ্যের সব সরকারি, বেসরকারি হাসপাতাল, মেডিক্যাল কলেজ, গবেষণাগারের অধ্যক্ষ, ডিরেক্টর এবং চিকিৎসকদের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে এই কথাই বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বিভিন্ন কর্পোরেট কোম্পানি এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে এই মুহূর্তে একজোট হতে আহ্বান করেন তিনি। এদিন‌ স্বাস্থ্যসচিব বিবেক কুমারকে তিনি নির্দেশ দেন যে, রাজ্যের সব চিকিৎসকদের নিয়ে স্বাস্থ্যসচিব যেন নিজের নেতৃত্বে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করেন, যেখানে তাঁরা নিজেদের সব সমস্যা এবং পরামর্শ নিয়ে আলোচনা করতে পারেন।
বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালকে তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের জন্য ধন্যবাদ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এদিন ঘোষণা করলেন, ওই হাসপাতালে কোভিড–১৯ মোকাবিলার জন্য শয্যা সংখ্যা বাড়িয়ে ১০০ করা হচ্ছে। বাঙুর হাসপাতালের নতুন মাল্টি সুপার বিল্ডিং–এ ১৫০টা শয্যা এবং আর জি কর হাসপাতালের নাইট শেল্টারের জন্য তৈরি হওয়া নতুন ভবনেও ৫০টা শয্যা রাখা হচ্ছে করোনা আক্রান্তদের জন্য।

এছাড়া রাজারহাটের ক্যান্সার হাসপাতালে কোভিড–১৯ আইসোলেশন ওয়ার্ড তৈরি করা হয়েছে। বাঙুরের মূল হাসপাতালের থেকে মাল্টি সুপার বিল্ডিং–এ ঢোকার জন্য পৃথক গেট ব্যবহারের নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, পরে এই সব জায়গাগুলিকেই স্যানিটাইজ করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের হাতে ফের তুলে দেওয়া হবে। এছাড়া বেলেঘাটা আইডি সংলগ্ন কিছু বেসরকারি হাসপাতালেও এধরনের বিভাগ তৈরির পরিকল্পনা করছে রাজ্য।

বেলেঘাটা আইডি–তে ১০টা অ্যাম্বুল্যান্স সবসময় প্রস্তুত থাকছে যাতে প্রয়োজনে অন্যান্য হাসপাতালগুলি সেখান থেকে সহায়তা নিতে পারে।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যের দেওয়া ৩০০টি ভেন্টিলেশন মেশিনের বরাতের মধ্যে ৭০টা চলে এসেছে। এছাড়া দু’‌লক্ষ করে মাস্ক, গ্লাভস এবং পিপিই, ১০০০০ ফুসফুস পরিষ্কারের যন্ত্রের বরাত দেওয়া হয়েছে। জেলা হাসপাতাল এবং বেসরকারি হাসপাতালগুলিকেও এই যন্ত্রপাতি বিলির নির্দেশ দেন তিনি।

বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ভেন্টিলেটর স্পনসরের জন্য আবেদন করে মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ, স্বাস্থ্য পরিষেবা বিভাগে কাজ করা সরকারি কর্মী, আশা এবং আইসিডিএস কর্মীদের সুরক্ষাতেও নজর দিতে হবে। এজন্যও এধরনের জিনিসপত্রের বরাত দেওয়া হচ্ছে।

করোনা নিয়ে কোনওরকম গুজব রুখতে সব জেলাশাসক এবং জেলাসুপারকে নজর রাখতে বলে তাঁর নির্দেশ, কেউ গুজব রটালে তার বিরুদ্ধে যেন কড়া পদক্ষেপ হয়। কেন্দ্রকে সুরক্ষা কিট পর্যাপ্ত পরিমাণে না পাঠানোর জন্য একহাত নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, মেদিনীপুর, বর্ধমান এবং শিলিগুড়িতেও যাতে করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য গবেষণাগার তৈরি করা যায় তার অনুমতি কেন্দ্র এবং আইসিএমআর–এর কাছে চেয়েছে রাজ্য।

মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা, স্কুল–কলেজ বন্ধ থাকলেও দোকান–বাজার খোলা থাকবে। দরিদ্র শিশুদের জন্য দু’‌কেজি চাল এবং দু’‌কেজি আলু প্রত্যেক বাড়িতে পাঠানোর দায়িত্ব আশা এবং আইসিডিএস কর্মীদের দেওয়া হবে। রাজ্যে কমপক্ষে ১২লক্ষ গর্ভবতী মহিলা এবং মিড ডে মিলের ১কোটি ১২ লক্ষ ছাত্রছাত্রী রয়েছে।

যেসব পণ্যবাহী ট্রাক আন্তর্জাতিক সীমান্ত বা রাজ্যের সীমানায় আটকে আছে, সেগুলিকে প্রয়োজন অনুযায়ী, ক্রমানুসারে রাজ্যে ঢোকার অনুমতি দেওয়ার কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।‌‌‌

Previous article‌মুখ্যমন্ত্রীর কবিতায় উঠে এলো করোনার সতর্কতা
Next articleরাত পোহালেই ফাঁসি নির্ভয়ার খুনিদের

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here