কৃষক বন্ধের মিশ্র প্রভাব বাংলায়, বিক্ষিপ্ত অশান্তি কলকাতা-সহ জেলায় জেলায়

0
750

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বিতর্কিত তিনটি কৃষি আইনের বিরোধিতায় রাজধানী-সহ সারা দেশ উত্তাল। মঙ্গলবার দেশজোড়া বন্‌ধের জের আছড়ে পড়ল কলকাতা-সহ রাজ্যের জেলায় জেলায়।

বনধের সমর্থনে এদিন রাজ্যের একাধিক জায়গায় রেল অবরোধ করেন বাম সমর্থকরা। এদিন যাদবপুরে লোকাল ট্রেন আটকে বিক্ষোভ দেখান বামকর্মীরা। রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে লাল-পতাকা নিয়ে অবরোধ করেন তাঁরা। অন্যদিকে লেকটাউন, মধ্যমগ্রামের দোলতলা মোড়ে,চৌমাথা মোড়, বনগাঁয় যশোর রোডে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান বামকর্মীরা।

শুধু কলকাতাতেই নয়, জেলায় জেলায় বিক্ষোভ দেখিয়ে রাস্তা ও রেল অবরোধ করেন বন্‌ধ সমর্থনকারীরা।বনগাঁ, রিষড়া, ডোমজুড়, বর্ধমান, কালনা, কাটোয়া, জয়নগর, পাঁশকুড়া, বালি,বাঁকুড়া, আসানসোল, কোচবিহারেও সকাল থেকেই রাস্তায় নেমে পড়ে কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে বাম সমর্থকরা।

কোচবিহার শহরের হরিশপাল চৌপথি এলাকায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখানোর পাশাপাশি পথ অবরোধ করে বিজেপি কর্মী সমর্থকরা। ভারত বনধের সমর্থনে সকলা থেকেই রাস্তায় নেমে পড়েছে বাম মিছিল। উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার বাসে আগুন লাগানোর চেষ্টা করে বনধ সমর্থনকারীরা। বাস ভাঙচুর করা হয়। মাথাভাঙা শহরের পচাগড় মোড়ে রাস্তায় টায়ারও জ্বালানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

ভারত বন্‍ধের মিশ্র প্রভাব লক্ষ্য করা গিয়েছে বর্দমান ও কাটোয়া শহরে। সকাল থেকেই কাটো থেকে হাওড়া ও বর্ধমানগামী ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও কাটোয়া থেকে বর্ধমান, সিউড়ি, মুর্শিদাবাদ-কালনাগামী সমস্ত বাস ও গাড়ি চলাচল বন্ধ রয়েছে। সকাল থেকেই কাটোয়া শহরের রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছে বাম সমর্থকরা। মালদার চাঁচোলে রাস্তা অবরোধ করে বাম কর্মী-সমর্থকরা। নদীয়ার করিমপুরের রাস্তায় নেমে বন্‌ধ সফল করার আহ্বান জানিয়ে মিছিল করেন বামকর্মীরা। সরকারি বাস আটকে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা। সকলা থেকে সরকারি অফিসগুলোর সামনে বন্‍‌ধপালনের জন্য বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা। মোট কথা, কৃষক আন্দোলনের সমর্থনের ভারত বন্‍ধের মিশ্র প্রভাব পড়েছে বাংলায়।

যাদবপুরে রেল অবরোধের চিত্র:

অন্নদাতাদের আন্দোলনের পাশে আছেন, আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই বিতর্কিত তিনটি কৃষি আইনের বিরোধিতায় রাজধানী যখন উত্তাল, তখন কৃষকদের সমর্থন জানিয়ে টুইট করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। খোলাখুলি জানিয়ে দিলেন, আজ মঙ্গলবার দেশজোড়া কৃষক আন্দোলনকে পূর্ণ সমর্থন করছেন তিনি। ২৬ নভেম্বর বাম ও কংগ্রেসের সমর্থনে কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনগুলির ডাকা দেশজোড়া ধর্মঘটেও সরকারি কর্মচারীদের জন্য এই নির্দেশিকা জারি হয়েছিল, যদিও তা কার্যকরে খুব কড়াকড়ি করেনি নবান্ন। সোমবার কিন্তু দেখা গেল, নবান্ন থেকে এই ধরনের কোনও নির্দেশিকাই জারি করা হয়নি। একে ব্যতিক্রমী ঘটনা বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তবে সব ধরনের পরিবহণ স্বাভাবিক রাখতে বলেছে রাজ্য প্রশাসন। জনজীবন স্বাভাবিক রাখতে কলকাতায় মোতায়েন থাকবে পুলিশও। রাজনৈতিক মহলের পর্যবেক্ষণ, দলীয় কর্মসূচি না-হওয়া সত্ত্বেও বিধানসভা ভোটের প্রাক্কালে কৃষক এবং জনসাধারণের দাবিদাওয়া সংক্রান্ত দু’টি বন্‌ধ-ধর্মঘটে পাশে থেকে বিজেপি-বিরোধী অবস্থান আরও স্পষ্ট করে নিল তৃণমূল। দিন কয়েক আগে বাম-কংগ্রেসের সমর্থনে গণসংগঠনগুলির ডাকা ভারত বন্‌ধে ইস্যুগুলির প্রতি সমর্থন জানিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী। প্রশাসনও কঠোর হয়নি

কৃষক আন্দোলন চলছে দেশজুড়ে। তাই জন্মদিন পালন করবে না কংগ্রেস সভানেত্রী:

অসমেও বনধের সমর্থেন পথে মানুষ:

বিহারে আরজেডির বিক্ষোভ:

পুনাতে খোলা দোকান-বাজার:

বনধ সনর্থকদের পাশে অখিলেশ:

সংস্কারেই সায় হরিয়ানার কৃষক নেতাদের:

এদিকে ভারত বনধ শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে, হরিয়ানার ২০ জন কৃষকের একটি দল কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমরের সঙ্গে সাক্ষাত্‍‌ করে। সেই বৈঠকের পর কেন্দ্রের তরফে দাবি করা হয়েছে, হরিয়ানার কৃষক নেতাদের কয়েক জন এসে কেন্দ্রের নয়া কৃষি আইনে তাঁদের সমর্থন জানিয়ে গিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, কেন্দ্রে যে সংশোধনী আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাতেই তাঁরা খুশি।

বনধ বিরোধিতায় গুজরাত সরকার:

ভারত বনধকে সমর্থন করছে না গুজরাত সরকার। সে রাজ্য়ের মুখ্য়মন্ত্রী বিজয় রূপানি জানিয়েছেন, ‘‘কৃষকদের ডাকা ভারত বনধ সমর্থন করছে না গুজরাট। কেউ জোর করে দোকান বন্ধের চেষ্টা করলে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে’’।

কৃষকদের পাশে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী:

কৃষকদের আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছেন বাংলার মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ও। তবে, যেহেতু মমতা সরকারের নীতি বনধ বিরোধী। তাই তারা কৃষকদের আন্দোলনকে সমর্থন জানাবে। আজ  ব্লকে ব্লকে ধর্না কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী। 

বনধকে সমর্থন রাজনৈতিক দলগুলির:

কৃষকদের আন্দোলন ও বনধকে সমর্থন জানাল ১১টি রাজনৈতিক দল। সেই তালিকায় রয়েছে কংগ্রেস, ডিএমকে, ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি, রাষ্ট্রীয় জনতা দল, সমাজবাদী পার্টি, সিপিআই(এম), সিপিআই-এমএল, অল ইন্ডিয়া ফরওয়ার্ড ব্লক, রেভলিউশনারি সোশালিস্ট পার্টি ও কমিউনিস্ট পার্টি অফ ইন্ডিয়া। সমর্থন জানিয়েছে জম্মু-কাশ্মীরের পিএজিডি জোটও।

দেশ জুড়ে ভারত বনধ:

সিঙ্ঘু সীমান্তে কৃষক বিক্ষোভ অব্যাহত। এই নিয়ে আজ ১৩  দিনে পড়ল কৃষক আন্দোলন। আজ তারা ভারত বনধের ডাক দিয়েছে। 

Previous articleগয়েশপুরের তৃণমূলকর্মী খুন, আততায়ীর খোঁজে পুলিশ
Next article‘চেনা অচেনা মমতা’ বনগাঁয়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here