দেশের সময় ওয়েবডেস্ক: করোনা ভাইরাসে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৭৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর ফলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৬৩৬।

মৃতদের অধিকাংশই করোনা ভাইরাসের আঁতুড়ঘর হুবেই প্রদেশের বাসিন্দা। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত ৭৩ জনের মধ্যে ৬৯ জনই হুবেই প্রদেশের। তার মধ্যে শুধুমাত্র ইউহানেই মৃত্যু হয়েছে ৬৪ জনের। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চীনে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩১,১৬১। তার মধ্যে ৪৮০০ জনের অবস্থা গুরুতর। নতুন করে ফের আক্রান্ত হয়েছেন ৩,১৪৩ জন।
সংক্রমণ আটকাতে চীনের ১৯টি শহরকে বাকি বিশ্বের থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে। উড়ান তো বটেই, ট্রেন–বাস–ফেরি–সহ গণপরিবহণের সমস্ত ব্যবস্থা বন্ধ। স্কুল–কলেজ–অফিস রয়েছে বন্ধ। স্থানীয় বাসিন্দারা রীতিমতো ঘরবন্দি। এমনকি, বাজার করতে বেরোনোতেও রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। তার উপরে রোগীর সংখ্যা যে মাত্রায় বাড়ছে, তাঁদের চিকিৎসার সমস্ত সুবিধা দেওয়াও সমস্যা হয়ে যাচ্ছে চীন সরকারের পক্ষে।

১ দিনের শিশুর দেহেও করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ছে। যা রীতিমতো চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
করোনা ভাইরাসের মোকাবিলা নিয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং জানিয়েছেন, রোগ নিয়ন্ত্রণের খুব গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে এখন দাঁড়িয়ে চীন। এই অবস্থায় স্থানীয় প্রশাসনকে তিনি অনুরোধ করেছেন, ভাইরাস আক্রান্তের খবর পাওয়া মাত্র যেন দ্রুত আইসোলেশনের ব্যবস্থা করা হয়। এই রোগ নিয়ে গুজব ছড়ানো বন্ধ করার উপরেও জোর দিয়েছেন চীনের প্রেসিডেন্ট

বেজিং সরকারের তথ্য অনুযায়ী, ভাইরাসজনিত রোগে মৃত্যু হয়েছে ৫৬০ জনের। অথচ তাইওয়ানের একটি সংস্থার রিপোর্ট বলছে, সত্যিটা চেপে দিচ্ছে কমিউনিস্ট পার্টি। মৃতের সংখ্যা ২৫ হাজারের কাছাকাছি। সংক্রমিত অন্তত দেড় লাখ। হুবেইয়ের রাজধানী উহান থেকে এই ভাইরাস প্রথম ছড়াতে শুরু করে। এখন চিনের সব প্রান্ত তো বটেই, এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বজুড়ে। বিশ্বের অন্তত ২৪টি দেশে ভাইরাসের সংক্রমণের খবর মিলেছে।
করোনাভাইরাসের আতঙ্কে হংকংয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন চিকিৎসাকর্মীদের একাংশ। তাঁরা দাবি করেছেন, চিনের সঙ্গে এই শহরের সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হোক। এই দাবি মানা না হলে আরও বহু চিকিৎসাকর্মী এই ধর্মঘটে যোগ দেবেন বলে হুমকি দিয়ে রেখেছেন। হংকংয়ে এখনও পর্যন্ত পনেরো জন করোনাভাইরাস আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গেছে।

নোভেল করোনাভাইরাস উৎস নিয়ে ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক মহলে নানা তর্ক-বিতর্ক চলছে। ইজরায়েলি মাইক্রোবায়োলজিস্টরা আগেই জানিয়েছিলেন ডিসেম্বরে নয় বরং ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়েছিল তারও অনেক আগে থেকে। সেই সংক্রমণের কথা চেপে গিয়েছিল কমিউনিস্ট পার্টি। এমন খবরও সামনে আসে যে এই ভাইরাসের জন্মদাতা উহানের জৈব রাসায়নিক মারণাস্ত্র তৈরির কারখানা বায়ো-সেফটি লেভেল ৪ (BSL-4) ল্যাবোরেটরি। ইজরায়েলি এক সেনা কর্তা দাবি করেছিলেন, গবেষণাগার থেকেই ছড়িয়েছে ভাইরাসের সংক্রমণ।

ঠিক যেভাবে একটা সময় সার্স এবং ইবোলা প্রাণঘাতী হয়ে উঠলে আঙুল উঠেছিল এই ল্যাবোরেটরির দিকেই। ওয়াশিংটন পোস্ট তাদের রিপোর্টে সামনে এনেছিল চাঞ্চল্যকর তথ্য। তাদের দাবি, সিঙ্গল-স্ট্র্যান্ডেড এই আরএনএ ভাইরাসকে তৈরি করা হয়েছে মারণাস্ত্র হিসেবেই। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের ছোবলে শত শত প্রাণনাশ করা সম্ভব।

উহান ইনস্টিটিউট অবভাইরোলজির বিএসএল-৪ ল্যাবোরটরিতে অতি গোপনে এই জৈব রাসায়নিক মারণাস্ত্র তৈরির কাজ চলছিল দীর্ঘ সময় ধরেই। হয় সেখান থেকেই ভাইরাস কোনওভাবে বাইরে চলে গেছে, অথবা ইচ্ছাকৃতভাবেই সংক্রমণ ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here