দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ দেশে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। ছড়াচ্ছে আতঙ্ক। এই পরিস্থিতিতে কাজও হারাচ্ছেন অনেকে। দিন আনেন দিন খান এমন কাজ যাঁরা করেন তাঁরা সবচেয়ে মুশকিলে। পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে তাতে বড় সমস্যায় পড়তে পারেন গরিব মানুষ। এই অবস্থায় দরিদ্র ও কোভিড-১৯ প্যানডেমিকে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে এককালীন টাকা দিতে পারে কেন্দ্র। সেক্ষেত্রে দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা দেবে মোদী সরকার। ইতিমধ্যেই এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর দফতর ভাবনা চিন্তা শুরু করেছে বলে দাবি করেছে সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম লাইভ মিন্ট।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই সরকারি কর্তার বক্তব্য অনুসারে ওই খবর প্রকাশিত হয়েছে। বলা হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীর দফতর ও অর্থমন্ত্রক এনিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে। কী ভাবে এই প্রকল্প কার্যকর করা যায় তা নিয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকও হয়েছে বলে দাবি। এর ফলে কত টাকা দেওয়া হতে পারে বা কাদের দেওয়া হতে পারে এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।
এর মধ্যেই বড় ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় খাদ্য ও গণবণ্টন মন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ান৷ তিনি জানিয়েছেন, এবার থেকে রেশনে একসঙ্গে ৬ মাসের খাদ্যশস্য তোলা যাবে৷ দেশের ৭৫ কোটি মানুষ গণবণ্টন সিস্টেমের আওতায় পড়েন। এবার থেকে চাইলে তাঁরা ৬ মাসের খাদ্যশস্য একসঙ্গে তুলে নিতে পারবেন। এ ব্যাপারে রাজ্য সরকারগুলির কাছেও নির্দেশ পাঠানো হচ্ছে।
এতদিন পর্যন্ত দু’মাসের খাদ্যশস্য একবারে মজুত করার নিয়ম ছিল। তবে করোনা সতর্কতায় সেই মেয়াদ বাড়িয়ে ছ’মাস করা হয়েছে। বুধবার এই ঘোষণা করেছেন রামবিলাস পাসওয়ান।
পাঞ্জাব সরকার আগেই এই নিয়ম চালু করেছিল। এবার সারা দেশেই চালু হবে নয়া নিয়ম। রামবিলাস পাসওয়ানের কথায়, সরকারের গুদামে যথেষ্ট পরিমাণ খাদ্যশস্য মজুত রয়েছে। তাই সমস্ত রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে বলা হয়েছে গরিব মানুষ যেন রেশনে একবারে ৬ মাসের খাদ্যশস্য মজুত করতে পারেন সেদিকে নজর রাখতে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আরও জানিয়েছেন যে আপাতত সরকারের গুদামে ৪৩৫ লক্ষ টন উদ্বৃত্ত খাদ্যশস্য মজুত রয়েছে। যার মধ্যে ২৭২.১৯ লক্ষ টন চাল এবং ১৬২.৭৯ লক্ষ গম রয়েছে। পাসওয়ানের কথায়, আসন্ন এপ্রিল মাসের ক্ষেত্রে গণবন্টন ব্যবস্থার জন্য প্রয়োজন ১৩৫ লক্ষ টন চাল আর ৭৪.২ লক্ষ টন গম।
করোনাভাইরাসের আতঙ্কে সাধারণ মানুষ যে বড় আর্থিক চাপে পড়তে পারেন তা বলছেন অনেকেই। বড় ধাক্কা খেতে পারেন পর্যটন-সহ বিভিন্ন শিল্পে যুক্ত স্বনির্ভর কর্মীরা। খুচরো ব্যবসায়ীদেরও সমস্যায় পড়ার ভয় রয়েছে। এই প্রসঙ্গে ইন্টারন্যাশনাল মনেটারি ফান্ডের প্রাক্তন কর্তা অরবিন্দ ভিরমানি জানিয়েছেন, “কেন্দ্রের উচিত এখনই সব রাজ্যকে তথ্য সংগ্রহের নির্দেশ দেওয়া। স্বনির্ভর মানুষের ভোটার পরিচয়পত্র, আধার, মোবাইল নম্বর, কাজের জায়গা ইত্যাদি তথ্য সংগ্রহ করা দরকার।”
কেন্দ্রীয় সরকার একাই নয়, উত্তরপ্রদেশ সরকারও বর্তমান পরিস্থিতিতে গরিব ও দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে আয় হয় এমন পরিবারের পাশে কীভাবে দাঁড়ানো যায় তা নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেছে। যোগী আদিত্যনাথ মন্ত্রিসভা ইতিমধ্যেই রাজ্যের অর্থমন্ত্রীকে মাথায় রেখে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে। এই কমিটির কাজ গরিব মানুষের পাশে আর্থিকভাবে দাঁড়াতে কী করা যায় তা নির্ধারণ করা।