দেশের সময় ওয়েবডেস্ক: ফের আরও এক করোনা আক্রান্তের মৃত্যু হল বাংলায়। ফলে এই নিয়ে করোনা আক্রান্ত হয়ে রাজ্যে দু’জন মারা গেলেন। এই ঘটনায় রীতিমতো আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। কারণ এটাই কী শেষ? নাকি আরও বাড়বে? এই প্রশ্নই সবার মনে ঘুরপাক খাচ্ছে।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত কালিম্পঙের মহিলার বিদেশযোগের কথা সামনে এসেছে ইতিমধ্যেই। তবে সে ব্যাপারে স্পষ্ট তথ্য না মিললেও এটুকু জানা গেছে দিন কয়েক আগেই চেন্নাই থেকে উত্তরবঙ্গে ফেরেন তিনি। তারপরে জ্বর, সর্দি সহ করোনার লক্ষণ দেখা দেওয়ায় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে এসে পরীক্ষা করেন।
২৬ মার্চ তিনি ভর্তি হন। শনিবার রাতে নাইসেড থেকে পাওয়া রিপোর্টে ওই মহিলার শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। তারপরেই ওই মহিলার গতিবিধি এবং তিনি কতজনের সংস্পর্শে সরাসরি এবং পরোক্ষভাবে এসেছিলেন তারই খোঁজ শুরু করে দেয় প্রশাসন।
জানা গেছে ওই মহিলা গত ৭ মার্চ তাঁর মেয়েকে চিকিৎসার জন্য চেন্নাই নিয়ে যান। তারপর সেখান থেকে তাঁরা গত ১৯ মার্চ বিমানে বাগডোগরা নামেন। সেখান থেকে নিজেদের গাড়ি করেই শিলিগুড়ির জ্যোতিনগরে এক আত্মীয়র বাড়িতে আসেন। সেখানে আধাঘন্টার মতো থাকেন। ওই গাড়ি করেই এরপর চলে যান কালিম্পঙে নিজের বাড়িতে। জ্বর হওয়ায় ২০ মার্চ স্থানীয় এক ডাক্তারের কাছে পরীক্ষা করান। এরপর ২৬ মার্চ আবার গাড়ি নিয়ে শিলিগুড়ির আত্মীয়র বাড়িতে এসে ওঠেন।
সেখানে থেকে শহরের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ডাক্তারের পরামর্শ মতো সিটিস্ক্যান ও এক্স-রে করান। রিপোর্ট পাওয়ার পর উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের কোভিড ক্লিনিকে যান। এরপর ডাক্তারদের পরামর্শে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে ভর্তি হন তিনি।
কিন্তু তার মাঝে তিনি অনেকের সংস্পর্শে এসেছেন বলে জানা গেছে। ওই মহিলার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন কালিম্পং এর বাসিন্দা ছ’জন। তাদের হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। তাঁর গাড়ির চালককেও পরিবার-সহ কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে।
শিলিগুড়ির ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের বোতল কোম্পানি সংলগ্ন জ্যোতিনগরের বাসিন্দা যে আত্মীয়ের বাড়িতে তিনি দু’দফায় এসেছিলেন, তাঁদেরও স্ক্রিনিং করে হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। খোঁজ চলছে তাঁদের গাড়ির চালকেরও। শুধু তাই নয় ওই মহিলা শিলিগুড়ির এক ডাক্তারের কাছে আগে পরীক্ষা করেন। সেই ডাক্তারও কোয়ারেন্টাইনে গিয়েছেন বলে জানা গেছে। তাঁর চেম্বারও বন্ধ। কালিম্পঙে যে ডাক্তার তাঁকে দেখেছিলেন তিনি এতদিন আরও অনেক রোগীকে দেখেছেন। তাঁদেরও চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়, ওই মহিলা ভিনরাজ্য থেকে জীবাণু বহন করে আনতে পারেন। কিংবা বিমানের অন্য যাত্রীদের থেকেও সংক্রমিত হতে পারেন। তাই চেন্নাই থেকে ফেরার সময় এবং পরে তিনি কোথায় কোথায় গিয়েছেন বা কাদের সঙ্গে মেলামেশা করেছেন তার বিস্তারিত খোঁজখবর নেওয়া শুরু হয়েছে।
দার্জিলিং এর মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য বলেন, ‘‘আমরা খোঁজখবর করছি। আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সেইসব মানুষকে হোম আইসোলেশনে পাঠানো হবে। স্বাস্থ্যদফতরের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেই পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’
রবিবার রাত ২টো নাগাদ উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে ৪৪ বছরের মহিলার। তিনি কালিম্পংয়ের বাসিন্দা।