করোনাভাইরাস আতঙ্ক: ভারতে জারি সতর্কতা, পেট্রাপোল সীমান্তে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সীমান্ত পারাপারের বিষয়টির দিকে কতটা কড়া নজর রাখছে প্রশাসন!তারই খোঁজে দেশের সময়:

0
924

চিনে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২১৩বিশ্বজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করল হু

রতন সিনহা,দেশের সময় চিনের বাইরে ক্রমেই প্রসারিত হচ্ছে করোনাভাইরাসের থাবা। উদ্বেগ বাড়ছে সর্বত্র। বৃহস্পতিবার জেনেভায় একটি জরুরি বৈঠকের পরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) সারা বিশ্বজুড়ে জরুরি অবস্থার কথা ঘোষণা করল। অন্যদিকে শুক্রবার চিনে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২১৩। সংক্রমিত হয়েছেন প্রায় ১০ হাজার জন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস অ্যাডানম গ্যাব্রিয়েসুস বলেন, “এই মুহূর্তে করোনাভাইরাসের আক্রমণে চিনে কী হচ্ছে, তার চেয়েও বেশি জরুরি বিশ্বের অন্যান্য দেশে কী ঘটছে। কারণ এ ভাইরাস ক্রমেই বিভিন্ন দেশে পৌঁছে যাওয়ার খবর আসছে। এখন উদ্বেগের বিষয় হল, দুর্বল স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দেশগুলোতে এ ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে।”

তিনি আরও জানান, যদিও চিনের বাইরে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা এখনও খুব কম, কিন্তু তা সত্ত্বেও এটি মহামারীর মতো ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে যে কোনও সময়ে। কারণ এই ভাইরাসটি মানুষের শ্বাসের সঙ্গে ছড়িয়ে পড়ছে। মারাত্মক সংক্রমণ ঘটাচ্ছে আক্রান্তের দেহে। আক্রান্তদের নির্দিষ্ট চিকিৎসা বা প্রতিষেধকও নেই। সে কারণেই বিশ্বজুড়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হেলথ এমার্জেন্সি বিভাগের প্রধান মাইকেল রায়ান বলেন, “যে কোনও পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য গোটা বিশ্বে সতর্কতা ও প্রস্তুতি প্রয়োজন।”

চিনের উহান থেকে যে ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়েছিল সেটা এখনও থাবা বসিয়েছে সে দেশের অন্যান্য শহরেও। বেজিংয়ে ১১১ জনের ভাইরাস-জনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে। সাংঘাই শহরে আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১০০। এমন বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে বার্তা দিয়েছেন চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং। মঙ্গলবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি বলেছেন, করোনাভাইরাস নামের দৈত্যকে প্রতিরোধ করতে হবে। লড়াই করছে গোটা দেশ।

শুধু চিন নয়, রোজই নতুন নতুন দেশে খোঁজ মিলছে করোনাভাইরাসের। ১৬টি দেশে ৬০ জন আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। মঙ্গলবার জার্মানি ও শ্রীলঙ্কায় প্রথম করোনাভাইরাস সংক্রমণের খবর মিলেছে। আমেরিকা, ফ্রান্স, কানাডা, সিঙ্গাপুর, নেপাল, তাইল্যান্ড, জাপান-সহ অন্য দেশে এই ভাইরাসের খোঁজ মিলেছিল আগেই।

ভাইরাস সংক্রমণ ভয়ানক আকার ধারণ করায় মঙ্গলবার থেকে দেশের সমস্ত স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে রেল পরিষেবা। হুবেই থেকে আসা মানুষদের ১৪ দিন পর্যবেক্ষণে রাখার ব্যবস্থা করেছে বেজিং ও সাংহাই। হুবেই, উহান-সহ দেশের ১৮টি শহরকে নজরবন্দি করে রাখা হয়েছে।

আমেরিকা ইতিমধ্যেই নাগরিকদের চিনে যাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। চিনা নাগরিকদের জন্য আপাতত ভিসা বন্ধ করে দিয়েছে শ্রীলঙ্কা এবং ফিলিপিন্স।

সামগ্রিক পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই চিন সরকার নাগরিকদের বিদেশ ভ্রমণ আপাতত স্থগিত রাখার আর্জি জানিয়েছে। অভিবাসন দফতর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সীমান্ত পারাপারের বিষয়টির দিকেও কড়া নজর রাখা হচ্ছে। এরই মধ্যে নিজেদের দেশের নাগরিকদের বিমানে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে বেশ কয়েকটি দেশ।

ভারতেও জারি সতর্কতা

ভারত -বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াতের সবচেয়ে গুরুত্ব পূর্ণ সড়ক পথ পেট্রাপোল সীমান্ত।এই পথেই রোজ হাজার হাজার বিদেশিরা ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে যাতায়াত করেন তাঁদের ব্যাবসা বা বিভিন্ন রোগের চিকিৎসার জন্য৷ভারতের এক ব্যাবসায়ীর কথায় বাংলাদেশের বহুমানুষ চিনে ব্যাবসার প্রয়োজনে বছরের পর যাতায়াত করেন এবং তাঁদের মধ্যে অনেকেই আবার পেট্রাপোল দিয়ে ভারতে ঢোকেন এবং খুব অনায়াসেই এই পথে কলকাতা হয়ে চিনে পাড়ি দেন বৈধ পাশ পোর্টের মাধ্যমে। কিন্তু প্রশ্ন হল এখন তারা বাংলাদেশে ফিরে ভারতে ঢুকছেন অথচ কোন সংক্রমণ ঢুকছে কিনা সেটাই দেখা উচিত প্রশাসনের। যদিও শুক্রবার পেট্রাপোল সীমান্তে অভিবাসন দফতরে গিয়ে দেখাগেল তেমন কোন পরিকাঠামো নেই,এক কথায় অবাধ যাতায়াত চলছে,এক প্রশাসনিক কর্তার কথা ছিল এমন,’চিন থেকে কি হাওয়ায় উড়ে আসবে করোনা ভাইরাস’ যত সব আজগুবি প্রশ্ন৷ যদিও এদিন বাংলাদেশের অনেক যাত্রীদের মুখে মাস্ক পড়ে থাকতে দেখা যায়৷ তাদেরকে প্রশ্ন করলে বলেন ঠান্ডায় সর্দি লেগেছে তাই মাস্ক ব্যাবহার করছি৷ ভারতের এক রপ্তানী কারক প্রদীপ দে জানান,চিনে এই মাস্ক এর অভাব পড়েছে ভারত থেকে চিনের বাজারে যাচ্ছে প্রচুর মাস্ক।অনেক বাংদেশী ব্যাবসায়ীরা চিনের সাথে যুক্ত বিভিন্ন ব্যাবসার প্রয়োজনে এবং প্রচুর শ্রমিক কাজ করেন চিনে তারা অনেকেই দেশে ফিরে ভারতে ঢোকেন এই পথেই, চিন্তার যথেষ্ঠ কারণ থেকেই যায়।

উহানের পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে ২০৬ জন জাপানিকে দেশে ফিরিয়ে এনেছে সে দেশের সরকার। চিনে বিমান চলাচল বন্ধ করেছে জার্মানি, অস্ট্রিয়া, সুইৎজারল্যান্ডের বিমান সংস্থা। মার্কিন নাগরিকদের উদ্ধারে উদ্যোগী হয়েছে আমেরিকাও। এদিকে চিনে আটকে পড়া ভারতীয়দের উদ্ধারের জন্য খুব দ্রুত ৪৩০ সিটের জাম্বো বোয়িং পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে এয়ার ইন্ডিয়া।

ইতিমধ্যে প্রথম ভাইরাস আক্রান্ত রোগীর খোঁজ মিলল ভারতেও। কেরলে চিন-ফেরত এক পড়ুয়ার রক্ত পরীক্ষা করে ভাইরাসের সংক্রমণ নিশ্চিত করেছে স্বাস্থ্য দফতর। হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ২৪ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে তাঁকে।

উহান ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করতেন ওই ছাত্র। দেশে ফেরার পরেই জ্বরে আক্রান্ত হন তিনি। নিউমোনিয়া ধরা পড়ে। হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তাররা জানান, সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটারি সিন্ড্রোমে আক্রান্ত হয়েছেন ওই ছাত্র। যার কারণ নোভেল করোনাভাইরাস। এক বিবৃতিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, আইসোলেশন ওয়ার্ডে ছাত্রের চিকিৎসা করছেন অভিজ্ঞ ডাক্তাররা। তাঁর অবস্থা এখন স্থিতিশীল।

ভারতেও জারি সতর্কতা

২০০২ থেকে ২০০৩ সাল। মহামারীর আকার নিয়েছিল ‘সার্স’ (সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম) । চিনের মূল ভূখণ্ডেই মৃত্যু হয়েছিল প্রায় ৪০০ জনের। হংকংয়ে অন্তত ৩০০। ২০০৯ সালে ফের সোয়াইন ফ্লুয়ের ছোবল। শয়ে শয়ে মৃত্যু। সরকারি হিসেবেই সংখ্যাটা ছিল সাতশোর কাছাকাছি। দশ বছরে সংক্রমণের ধাক্কাটা থিতিয়ে যাওয়ার মুখেই চিনের মাটিতে ফের শুরু হল মৃত্যুমিছিল। এবারের হানাদার এক ‘রহস্য ভাইরাস।’ ফুসফুসে যক্ষ্মা, নিউমোনিয়া, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিকল এবং শেষ পরিণতি মর্মান্তিক মৃত্যু—এই রহস্য ভাইরাসের আক্রমণের পদ্ধতি ঘুম উড়িয়ে দিয়েছে চিকিৎসক-বিজ্ঞানীদের। চিন থেকে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইল্যান্ড হয়ে এই ভাইরাসের সংক্রমণের সতর্কতা জারি হয়েছে ভারতেও।
করোনাভাইরাস। করোনাভিরিডি (Coronaviridae) গোত্রের এই ভাইরাস পরিবারের অনেক ভয়ঙ্কর সদস্যেরা আছে, যাদের প্রভাব প্রাণঘাতী। চিনে যে করোনাভাইরাস হামলা চালাচ্ছে সেটির নাম নোভেল করোনাভাইরাস (Novel Coronavirus 2019-nCoV)। এর এক ছোবল পাঁচদিনের মধ্যেই ফুসফুসের দফারফা করে দেয়। প্রথমে শ্বাসকষ্ট, টিবি সংক্রমণ ছড়িয়ে তারপর শরীরের প্রতিটি অঙ্গকে কাবু করে ফেলে। শেষে মৃত্যু। এখনও অবধি এই ভাইরাসের সংক্রমণে চিনে প্রাণ হারিয়েছেন চার জন। সংক্রামিত আরও ২২০। কয়েকজনের অবস্থা শঙ্কাজনক। চিনের উহান প্রদেশের সি-ফুড বাজার থেকেই এই ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা উহানের স্বাস্থ্য দফতরের। তাইল্যান্ড ও জাপান থেকেও এই ভাইরাস সংক্রমণের খবর মিলেছে। কিন্তু দু’দেশের ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, আক্রান্তেরা সম্প্রতি চিনের উহান প্রদেশে গিয়েছিলেন। ভারতও যে এই সংক্রমণের তালিকা থেকে বাদ নয় সে সতর্কতাও জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)

কী এই নোবেল করোনাভাইরাস?

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এই ভাইরাসকে চিহ্নিত করেছিল 2019-nCoV নামে। গবেষকরা এখন এই ভাইরাসকে ডাকছেন উহান করোনাভাইরাস (Wuhan coronavirus) নামে। নিউমোনিয়ার সঙ্গেই সাঁড়াশি আক্রমণ চালাচ্ছে এই ভাইরাস, তাই এর নাম উহান নিউমোনিয়াও রেখেছেন গবেষকরা। এর প্রকৃতি, স্বভাব এখনও অনেকটাই আড়ালে রয়েছে। এই সিঙ্গল-স্ট্র্যান্ড আরএনএ ভাইরাসের দেখা প্রথম মিলেছিল ২০১৯ সালে। ২০২০-র জানুয়ারির মধ্যেই এর সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে চিনের মূল ভূখণ্ডে। এমনকি উহান থেকে যাঁরা বাইরে গেছেন তাঁদের অনেকেই ভাইরাসের সংক্রমণ নিজের শরীরে বহন করে নিয়ে গেছেন। প্রাথমিকভাবে বিজ্ঞানীদের ধারণা, পশু-পাখির থেকেই এই ভাইরাস বাসা বেঁধেছে মানুষের শরীরে। তবে অনুমান করা হচ্ছে, মানুষের থেকে মানুষেও ক্রমশই ছড়াচ্ছে সংক্রমণ, যার প্রমাণ মিলেছে চিনের গুয়ানডঙ প্রদেশে। ব্যাংকক, টোকিও, দক্ষিণ কোরিয়া, বেজিং, সাংঘাই, হংকং, ভিয়েতনাম ও সিঙ্গাপুরে নোভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি।


বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই ভাইরাসের সঙ্গে বিটা-করোনাভাইরাসের বিস্তর মিল। বিটা-করোনাভাইরাস ছড়ায় বাদুর থেকে। সার্স (SARS) এবং মিডল-ইস্ট রেসপিরেটরি সিনড্রোম-রিলেটেড করোনাভাইরাসের (MERS)সঙ্গে এর স্বভাবে কিছু মিল থকালেও জিনগতভাবে এরা অনেকটাই আলাদা। চিনের সিডিসি ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট, ইনস্টিটিউট অব প্যাথোজেন বায়োলজি এবং উহান জিনিইনটান হাসপাতালের গবেষকরা নোভেল করোনার পাঁচটি জিনোম আলাদা করে পরীক্ষা করছেন। এর থেকেই এই ভাইরাসের ঠিকুজিকুষ্ঠী জানা যাবে বলে মনে করছেন গবেষকরা।

নিউমোনিয়া থেকে কিডনি বিকল—নোভেল করোনারা প্রাণঘাতী

নোভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ‘গ্লোবাল হেলথ ক্রাইসিস’ বলে অবিহিত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। আক্রান্ত মানুষদের উপসর্গের ধরন দেখে বোঝা যাচ্ছে, এই ভাইরাসরা হানা দেয় চুপিসাড়ে। শরীরের ভেতর বাড়তে থাকে আড়েবহরে। বিস্ফোরণ ঘটায় আচমকাই। শুরুটা হয় সর্দি-কাশি. জ্বর দিয়ে। শ্বাসকষ্ট বাড়তে থাকে ধীরে ধীরে। কাবু করে নিউমোনিয়া। অনেকের ক্ষেত্রেই দেখা দেয় সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম। ভাইরাসের শান্তি হয় না তাতেও। ছড়িয়ে পড়ে গোটা শরীরেই।


একাধিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে তার নিশানা বানায়। রোগ প্রতিরোধের স্বাভাবিক ক্ষমতাকে ভেঙে তছনছ করে দেয়। শরীরে রক্ত প্রবাহ কমতে থাকে। কাজ করার শক্তি হারিয়ে ফেলে ফুসফুস, কিডনি। সর্বশেষ পরিণতি মৃত্যু।
গত বছর ৮ ডিসেম্বর উহানেই প্রথম নিউমোনিয়া আক্রান্ত এক ব্যক্তির মধ্যে এই রহস্যজনক ভাইরাসের খোঁজ মিলেছিল। ডিসেম্বর শেষের মধ্যেই একাধিক জনের মধ্যে একই রকম সংক্রমণ দেখা দেয়। জানুয়ারি ৭, চিনের একাধিক প্রদেশের স্বাস্থ্য দফতর জানায় 2019-nCoV হল এই নিউমোনিয়ার কারণ। চার ছ’দিন পরেই, জানুয়ারি ১২, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায় চিনের ৪১ জনের মধ্যে এই আরএনএ ভাইরাসের খোঁজ মিলেছে যা ছড়াচ্ছে আক্রান্ত মানুষের সংস্পর্শ থেকেই। এখনও অবধি ২২০ জন আক্রান্তের হদিশ মিলেছে যার মধ্যে ১৯৮ জনই উহান প্রদেশের।

ভিলেন এখন মানুষ, সংক্রমণ ছড়িয়েছে কোরিয়াতেও:

ন্যাশনাল হেলথ কমিশনের বিশেষজ্ঞ ঝঙ নানশান বলেছেন, ১৪ জন এমন আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে যাদের সংক্রমণের কারণ হয় তাঁদের পরিবারের লোকজন, অথবা পেশা বা অন্যকারণে আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসার ফল। এদের থেকেই বাহিত হয়ে মহামারীর আকার নিচ্ছে নোভেল করোনাভাইরাস। দক্ষিণ কোরিয়ায় ৩৫ বছর বয়সী এক মহিলার শরীরে এই ভাইরাসের খোঁজ মিলেছে যিনি কিছুদিন আগেই উহানে গিয়েছিলেন। উহান থেকে ফ্লাইট রুট রয়েছে নিউ ইয়র্ক, সান ফ্রান্সিসকো, সিডনি, প্যারিস, লন্ডনে। তাছাড়াও রেল যোগাযোগের মাধ্যমে অন্যান্য প্রদেশের সঙ্গে যোগসূত্র রয়েছে উহানের। হংকং সেন্টার ফর হেলথ প্রোটেকশন (CHP) জানিয়েছে, চিনের বাইরে হুহু করে ছড়াচ্ছে এই ভাইরাসের সংক্রমণ। তালিকার বাইরে নয় ভারতও। গোটা বিশ্বের কাছেই যা অ্যালার্মিং।

রোখা যাবে কি এই সংক্রমণ?

নোভেল করোনাভাইরাসের প্রকৃতি হাতে না আসা অবধি এই ভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণে আনার পদ্ধতি জানা যাবে না। হু জানিয়েছে, প্রতিরোধের উপায় গড়ে তোলা যেতে পারে কয়েকভাবে। যেমন,

মৃত পশুপাখির সংস্পর্শে না আসা।

ভাইরাস আক্রান্ত মানুষের সংস্পর্শ ত্যাগ করা। আক্রান্তদের সঙ্গে খাবার ভাগ করে খাওয়া অথবা একই বিছানায় শোয়া নৈব নৈব চ।

সামান্য সর্দি-কাশি-জ্বরেই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। শ্বাসকষ্টকে অবহেলা করা যাবে না কোনওভাবেই।

খোলা মাছ বা মাংসের বাজারে গেলে হাত-পা ভাল করে ধোয়াটা আবশ্যক। পোষ্যের শরীরে হাত দিলে সেই হাত কখনওই নাকে-চোখে বা মুখে দেওয়াটা ঠিক হবে না।

মাংস ভাল করে রান্না করে খাওয়াই উচিত। অর্ধসিদ্ধ মাংস বা দুধ না ফুটিয়ে খাওয়াটা উচিত হবে না।

Previous articleফের ব্যাঙ্ক ধর্মঘট
Next articleকরোনাভাইরাস আতঙ্ক: ৩২৫ জন ভারতীয় উহান থেকে দেশে ফিরছেন,সৌজন্যে এয়ার ইন্ডিয়া

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here