দেশের সময় ওয়েব ডেস্কঃ কচুয়ার নিরাপত্তা নিয়ে বৈঠক করলেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। স্থানীয় পঞ্চায়েত, লোকনাথ মন্দির কর্তৃপক্ষ এবং প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘আর কখনও যাতে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়, সে ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেওয়া হবে।
পুণ্যার্থীদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, ভিড় হলেও কোনও বিশৃঙ্খল পরিস্থতি যাতে তৈরি না হয়, সে ব্যাপারে মন্দির কর্তৃপক্ষ উদ্যোগী হবে। তেমনি পঞ্চায়েত ও প্রশাসন এ ব্যাপারে সমস্ত ধরনের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবে। বৈঠকে অন্যদের মধ্যে ছিলেন লোকনাথ মিশনের সচিব তুষার বসাক, বসিরহাটের আইসি প্রমাশিস চট্টরাজ, প্রাক্তন বিধায়ক এটিএম আবদুল্লা রনি, বিশিষ্ট সমাজসেবী সরোজ
ব্যানার্জি প্রমুখ।
জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘আজকের বৈঠকে দুই পক্ষের আলোচনা খুবই ফলপ্রসূ হয়েছে। মন্দির কমিটির বিশেষ কোনও চাহিদা নেই। তবে রাস্তা চওড়া করার ব্যাপারে মন্দির কমিটির সঙ্গে আমরাও সহমত। মন্দির কমিটি এবং আমাদের একই চিন্তা–ভাবনা, দর্শনার্থীদের আসা যাওয়ার ক্ষেত্রে রাস্তা একমুখী করতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে পাঠিয়েছেন যতদূর সাহায্য করার আমাদের করতে হবে। এ ব্যাপারে উভয় পক্ষের বক্তব্যই ইতিবাচক।’ তিনি বলেন, ‘সব থেকে আনন্দের কথা হল কচুয়া এবং চাকলা একসঙ্গে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এবার একটা কমিটি তৈরি হবে।
ওই কমিটি বলেছে আমাদের আগামিদিনে আরও ভালভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে হবে। টানা ৩০ বছর ধরে এই মেলা হয়ে আসছে। কোনওদিন কোনও অঘটন ঘটেনি। এবারের এই ঘটনা একটা দুর্ঘটনা ছাড়া আর কিছু নয়। আকস্মিকভাবেই এই দুর্ঘটনা ঘটে গেছে। প্রবল বর্ষণে বহু ভক্ত এখানে–ওখানে আটকে গিয়েছিলেন। বৃষ্টি থামতেই সকলে একসঙ্গে বেরিয়ে পড়েছিলেন। কে আগে মন্দিরে পৌঁছবেন, তা নিেয় তাড়া ছিল। তাতেই এই দুর্ঘটনা ঘটে।’
জ্যোতিপ্রিয়বাবু এদিন বলেন, ‘পুলিশ একটা মামলা রুজু করেছে। তবে সেটা অজানা নামে মামলা হয়েছে। পুলিস তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে। সেক্ষেত্রে আমরা হস্তক্ষেপ করব না। আমরা চাই, আইন সব সময় আইনের পথে চলুক। এ ক্ষেত্রেও তার অন্যথা হবে না।
আগামিদিনে এমন একটা পরিবেশ করে তৈরি করে দেব, সবাই আবাক হয়ে দেখবেন।’ সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারাই আগামী বছর এসে বলবেন একবছরে এতটা করে ফেলেছেন! মুখ্যমন্ত্রী এটা নিজে দেখছেন। তিনি নিজেই তত্ত্বাবধান করবেন।’ জ্যোতিপ্রিয় আরও বলেন, ‘মন্দিরের রাস্তা চওড়া করা হবে। জেলাশাসক পূর্ত দপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছে। পূর্ত দপ্তরের ইঞ্জিনিয়াররা মাপজোক করে দেখবেন। পুকুর ও পাশের জমির মালিকরাও আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।
মন্দিরের স্বার্থে তঁারাও এগিয়ে আসবেন বলে কথা হয়েছে।’
লোকনাথ মিশনের সম্পাদক তুষার বসাক বলেন, ‘আমরা রাস্তা চওড়া করার ভাবনাচিন্তা করেছি। সেদিক থেকে এদিনের বৈঠক খুবই আশাপ্রদ হয়েছে। মাননীয় মন্ত্রী আমাদের সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন।’
এদিকে, কচুয়া লোকনাথ মন্দিরের আশপাশ তো বটেই টাকি রোডের ওপরে পড়ে থাকা প্লাস্টিক, থার্মোকল দূষণ ছড়াচ্ছে। সেইসব আবর্জনা সরাতে নেমে পড়েছে পাশের শ্রীনগর–মাটিয়া পঞ্চায়েত। পঞ্চায়েতের প্রধান মুস্তাক আহমেদ বলেন, ‘কচুয়া লোকনাথ মন্দিরে ৩ ধরে উৎসবের জেরে টাকি রোডের দু’ধারে থার্মোকল ও প্লাস্টিকের বর্জ্য দূষণ ছড়াচ্ছে।
পঞ্চায়েত থেকে সাফাই অভিযান শুরু করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, ফি বছর এভাবে প্লাস্টিক দূষণ রুখতে পঞ্চায়েত সিদ্ধান্ত নিয়েছে, পরের বার থেকে একেবারে প্লাস্টিক বর্জন করা হবে। কাগজ ও মাটির পাত্রে ব্যবহারে জোর দেওয়া হবে।’