পার্থ সারথি নন্দী,পেট্রাপোল: ওমিক্রন নিয়ে বিশ্বজুড়ে বাড়ছে আতঙ্ক। এ দেশেও জারি হয়েছে নানা কড়াকড়ি। বিশেষ করে নজর রাখা হচ্ছে আন্তর্জাতিক বিমানের ওপর। কিন্তু তাতেও কি বিপদ এড়ানো গেল না! কারণ ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়েছে এরকম দেশ থেকে আসা ৬ জন যাত্রীর কোভিড রিপোর্ট প্রথম দিনেই পজিটিভ এসেছে! আক্রান্তরা ওমিক্রন আক্রান্ত কিনা তা নিশ্চিত হতে ল্যাবরেটরিতে নমুনা পাঠানো হয়েছে জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য।
তাহলে এবার ওমিক্রন কি ভারতে এল! এই প্রশ্ন যেমন দেশজুড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে ঠিক তখনই ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের পেট্রাপোল বন্দরের ইমিগ্রেশনে যাত্রীদের আরটিপিসিআর টেস্টের পরিসংখ্যানের ফসকা গেরো সেই আতঙ্কের মাপকাঠিতে দ্বিগুন বাড়িয়ে দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে৷
পেট্রাপোল বন্দরে ওমিক্রন নিয়ে কেন এত আতঙ্ক?
কারণ হিসাবে পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্টস এন্ড স্টাফ ওয়েলফেয়ার এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী জানান, দিল্লিতে লন্ডন – আমস্টারডাম থেকে আসা ৬ যাত্রীর রিপোর্ট পজিটিভ হওয়ার খবর প্রকাশ্যে আসার পরে দেশজুড়ে ওমিক্রন নিয়ে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে হুহু করে৷ এই অবস্থায় ফসকা গেরো স্পষ্ট পেট্রাপোল বন্দরে ৷ পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন শ’য়ে শ’য়ে বাংলাদেশ যাত্রীরা যাতায়াত করছেন৷ বুধবার এক হাজার যাত্রীর মধ্যে মাএ ৫০ জন যাত্রীর আরটিপিসিআর টেস্ট করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে৷ ফলে ইমিগ্রেশন মাত্র ৫% বাংলাদেশি যাত্রীর আরটিপিসিআর টেস্ট করার চিএটাই বুঝিয়ে দিচ্ছে এই সীমান্ত দিয়ে খুব সহজেই ওমিক্রন ভারতে ঢুকে পড়তেপারে আর সেই কারনেই তীব্র হচ্ছে ওমিক্রন আতঙ্ক৷ তবে কি কারণে এখানে এত কম সংখ্যক নমুনা সংগ্রহ চলছে সে বিষয়ে পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন দফতরের কোন আধিকারিক মুখ খুলতে রাজি নয়৷
ভারতের বাসিন্দা বাংলাদেশ ফেরত এক যাত্রীর কথায় সে দেশে বেনাপোল ইমিগ্রেশনে ভারত থেকে আসা প্রত্যেক যাত্রীর আরটিপিসিআর টেস্ট বাধ্যতামূলক করা হয়েছে৷
এদিকে দিল্লিতে লন্ডন – আমস্টারডাম থেকে আসা ৬ যাত্রীর রিপোর্ট পজিটিভ পাওয়ার পর আক্রান্তদের ভর্তি করা হয়েছে দিল্লির হাসপাতালে। তাঁরা সকলেই আমস্টারডাম ও লন্ডন থেকে আসা বিমানের যাত্রী ছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড, ব্রাজিল, বৎসোয়ানা, চিন, মরিশাস, নিউজিল্য়ান্ড, জিম্বাবোয়ে, সিঙ্গাপুর, হংকং, ইজরায়েল– এই দেশগুলি আপাতত ওমিক্রন-ঝুঁকির মুখে আছে বলে জানা গেছে।
বুধবার কেন্দ্রীয় সরকার জানায়, লখনউ ছাড়া দেশের অন্যান্য বিমানবন্দরে রাত ১২টা থেকে বিকেল ৪ পর্যন্ত ১১টি দেশ থেকে বিমান অবতরণ করেছে। মোট ৩ হাজার ৪৭৬ জন দেশে এসেছেন। প্রত্যেকের আরটিপিসিআর পরীক্ষা করা হয়েছে, যার মধ্যে ৬ জনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য ইতিমধ্যেই পাঠানো হয়েছে নমুনা।
ওমিক্রন নিয়ে ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলি থেকে যে সব বিমান এ দেশে আসছে, অথবা যে সব বিমান এ দেশে আসার পথে কোনও ওমিক্রন আক্রান্ত দেশের মাটি স্পর্শ করছে, সেই সব বিমানের যাত্রীদের জন্য মঙ্গলবার রাত ১২টার পর থেকে দেশের সব আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে নতুন নিয়ম চালু করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। সকলের আরটিপিসিআর টেস্ট করতেই হবে।
সেই টেস্ট করেই প্রথম দিনেই ৬ জন করোনা পজিটিভ রোগীর খোঁজ মিলেছে। সামনেই আসছে বড়দিন, নিউ ইয়ার। বিশ্বজুড়ে উৎসবের আবহ। দেশে দেশে যাওয়া-আসা বেড়েছে মানুষের। এর মধ্যেই দক্ষিণ আফ্রিকা এবং তার পর আরও ১৭টি দেশে করোনার নতুন ওমিক্রন স্ট্রেনের খোঁজ মিলেছে। শোনা যাচ্ছে, এই স্ট্রেনের প্রভাব খুব বেশি ক্ষতিকর না হলেও, সংক্রমণের হার অত্যন্ত বেশি। তাই সতর্কতার পারদও চড়ছে সর্বত্রই।
ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে বুধবার থেকেই বাংলাদেশি যাত্রীদের স্পট করোনা পরীক্ষার কাজ শুরু করেছে পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন তবে তারসংখ্যা মাএ ৫০জন।
আজ বৃহস্পতিবার সকালেও একই ছবি সেখানে৷ অথচ বাংলাদেশ হয়ে ভারতে আসা এক যাত্রীর কথায় সে দেশে তারই এক সঙ্গী কে ১৪ দিনের জন্য কোয়ারেন্টাইনে পাঠিয়েছে বেনাপোল ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত স্থাস্থ্য কর্মীরা৷ তাঁর কথায় ওই বেক্তি অন্য দেশ থেকে বাংলাদেশ হ’য়ে ভারতে ঢুকছিলেন বলে শোনা গিয়েছে৷
ভারতেও ওমিক্রন নিয়ে বাড়ছে আতঙ্কের পারদ। এ দেশেও জারি হয়েছে নানা কড়াকড়ি। বিশেষ করে নজর রাখা হচ্ছে আন্তর্জাতিক বিমানের ওপর। কিন্তু তাতেও কি বিপদ এড়ানো গেল না! কারণ ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়েছে এরকম দেশ থেকে আসা ৬ জন যাত্রীর কোভিড রিপোর্ট প্রথম দিনেই পজিটিভ এসেছে! আক্রান্তরা ওমিক্রন আক্রান্ত কিনা তা নিশ্চিত হতে ল্যাবরেটরিতে নমুনা পাঠানো হয়েছে জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য। এদিকে ফসকা গেরো পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে ভারতে আসছেন হাজার হাজার যাত্রী৷ এখন একটাই আতঙ্ক পেট্রাপোল সীমান্তের বাসিন্দাদেরে মনেও ঘুরপাক খাচ্ছে ‘ওমিক্রন’ কি ভারতে প্রবেশ করতে পারে এই এই পথে সীমান্ত পেরিয়ে !