এবার বঙ্গ সফরে এসে ঠাকুরনগরের মতুয়াধাম থেকে ইস্কন মন্দিরে যাবেন শাহ

0
816

দেশের সময়ওয়েবডেস্কঃ বঙ্গবাসীর ধর্মীয় আবেগ ছুঁয়ে ফেলাই লক্ষ্য বিজেপি–র। তাই রাজ্যে সমস্ত কর্মসূচির আগে বিজেপি–র শীর্ষনেতারা ছুটে যান কোনও মন্দিরে। ভিক্টোরিয়ায় প্রধানমন্ত্রীর ভাষণেও বাঙালি দেশনেতাদের সঙ্গে উঠে আসে বাঙালি ধর্মগুরুদের নাম। চৈতন্যদেব, মা আনন্দময়ী, অনুকূল ঠাকুর, হরিচাঁদ ঠাকুর, গুরুচাঁদ ঠাকুর— একে একে নাম নেন মোদী। এবার এঁদের মধ্যে তিন গুরুকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা মন্দির, আশ্রমে যাবেন অমিত শাহ।

জানুয়ারি মাসের শেষে দু’‌দিনের বঙ্গ সফরে আসছেন অমিত শাহ। জানা গেছে, এবার এসে তিনি মায়াপুরে ইস্কনের মন্দির, ঠাকুরনগরে হরিচাঁদ ঠাকুরের মন্দির এবং বালিগঞ্জে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘে যাবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। 

সব ঠিকঠাক থাকলে ২৯ জানুয়ারি রাতে কলকাতায় আসছেন শাহ।
দ্বিতীয় দিন ৩০ জানুয়ারি তিনি যাবেন উত্তর ২৪ পরগনার ঠাকুরনগরে। সেখানে মতুয়া সম্প্রদায়ের মন পাওয়াই এখন অমিত শাহর লক্ষ্য। জানা গেছে, সেখানে কোনও মতুয়া পরিবারে দুপুরে খেতে পারেন অমিত। পুজো দিতে পারেন মতুয়াদের ধর্মগুরু হরিচাঁদ ঠাকুরের মন্দিরে। 

এদিকে গত শুক্রবার মতুয়া দলপতি এবং পাগল গোঁসাইদের কে নিয়ে বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ৩ টি জায়গায় বৈঠক করেন তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রী-সাংসদেরা। সেই মঞ্চ থেকে সরাসরিই আসন্ন বিধানসভা ভোটে তৃণমূলকে সমর্থন জানানোর আহ্বান জানান দলের নেতারা। 

সাংসদ সৌগত রায় মতুয়াদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘‘আপনারা যাঁরা চলে গিয়েছিলেন, সেই সব মতুয়া দলপতিদের কাছে হাতজোড় করে প্রার্থনা করছি, আপনারা ফিরে আসুন।’’

‘‘ওঁরা এক একজনের বাড়িতে এসে খাবেন। কিন্তু ওঁরা আপনাদের পাশে থাকবেন না। তৃণমূলই তিনশো পঁয়ষট্টি দিন মানুষের পাশে থাকে।’’ সৌগত বাবু আরও বলেন, ‘‘অতিমারির মধ্যে সরকারের কাজ চলছে। শুধু নাগরিকত্ব আইনের রুল নাকি করা যায়নি।’’

অন্যদিকে মতুয়া-মন পেতে তৃণমূলের এই চেষ্টাকে কোন রকম গুরুত্ব দিতে নারাজ শান্তনু ঠাকুর। তিনি জানান, ‘‘সৌগতবাবুর কথা বনগাঁ লোকসভার জনতার মধ্যে প্রভাব ফেলবে না।’’

গত লোকসভা ভোটে মতুয়া সমাজের একটা বড় অংশ বিজেপি-র শান্তনু ঠাকুরের পাশে দাঁড়িয়েছিল। বিপুল ভোটে জেতেন শান্তনু ঠাকুর৷

গত কয়েক মাসে নাগরিকত্ব আইন কার্যকর করা নিয়ে মতুয়াদের মধ্যে ফের ফাটল স্পষ্ট হচ্ছে। এক দিকে, শান্তনুর দাবি, নাগরিকত্ব আইন কার্যকর করা হোক। না হলে অন্তত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গাইঘাটায় এসে আইন কার্যকর করা নিয়ে কেন্দ্রের অবস্থান স্পষ্ট করুন। অন্য দিকে, তৃণমূল শিবির বরাবরই বলে আসছে, সিএএ-র মাধ্যমে নয়, মতুয়ারা যেহেতু ভোট দেন, ভোটার কার্ড, রেশন কার্ড আছে, তাঁরা ইতিমধ্যেই নাগরিক। তাঁদের নিঃশর্ত নাগরিকত্ব দিতে হবে।

বনগাঁর বিজেপি নেতা দেবদাস মন্ডল বলেন মুতুয়ারা প্রকৃত মানুষ চেনেন তাঁরা অনেক আগেই মনদিয়ে দিয়েছেন প্রধান মন্ত্রীকে তাঁদের প্রয়াত বড় মায়ের আশীর্বাদ নিয়ে তাঁদের প্রাণের ঠাকুর শান্তনুকে লোক সভা ভোটে জিতিয়ে মানুষের কাজে লাগিয়েছেন ৷ প্রকৃত উন্নয়নের জন্য মতুয়া ভক্তরা সকলেই বিজেপির সঙ্গে আছেন।তাঁদেরকে ভূল পথে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে তৃণমূল, সেটা বুঝে গেছেন মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ ৷কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আসছেন মতুয়া মম্প্রদায়ের সমস্ত মানুষকে আরও কী ভাবে সুরক্ষিত করা যায় এবং তাঁদেরকে ভাল রাখা যায় তার জন্য ৷ বিজেপি মতুয়াদের কাছে বিশ্বাসের প্রতীক ৷

এর পর সেখান থেকেই চলে যাবেন মায়াপুরে। ইস্কনের মন্দিরে আরতি দেখবেন তিনি। পরের দিন, ৩১ জানুয়ারি সকালে অমিত যেতে পারেন বালিগঞ্জে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের প্রধান কার্যালয়ে। ওই দিনই হাওড়ার ডুমুরজোলায় অমিতের সমাবেশ ও উলুবেড়িয়ায় রোডশো হওয়ার কথা। রাজ্যসভাপতি দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন, বাংলার শ্রদ্ধাস্থানে যাবেন শাহ ।

শাহর এই ধর্মীয়স্থানে যাওয়ার গোটা বিষয় তদারকি করছেন পুরুলিয়ার বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাত। তিনি নাকি এর মধ্যেই ঠাকুরনগর, বালিগঞ্জ এবং মায়াপুরে গিয়ে প্রস্তুতি দেখে এসেছেন। তবে এ ক্ষেত্রে শুধুমাত্র রাজ্য নেতৃত্বই শেষ কথা বলবে না। সমস্ত ব্যবস্থাপনা খতিয়ে দেখবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও।

অমিত শাহর পরে ফেব্রুয়ারির শুরুতে রাজ্যে আসছেন বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডা। তাঁর কর্মসূচি উত্তরবঙ্গে। সেখানেও তিনি বিভিন্ন ধর্মস্থানে ঘুরবেন। শাহ ও নাড্ডা— এই দু’‌জনেরই বাংলা সফরের প্রস্তুতি যাচাই করতে রবিবার রাজ্যে চলে এসেছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বি এল সন্তোষ।

Previous articleফোটো ফাইট:PHOTO FIGHT: EDITOR’S CHOICE PICTURE
Next articleইন্টারনেট-বিভ্রাট: পুরশুড়ার সভায় বেজায় চটলেন মমতা বললেন ‘যাঁরা চাইছেন, তাড়াতাড়ি চলে যান, ট্রেন ছেড়ে দেবে’!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here