দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ কলকাতা পুলিশের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ আনল বিজেপি। ভোটে প্রভাব খাটাতে পুলিশ কর্মীদের পরিচয়পত্র সংগ্রহ করছে লালবাজার। পোস্টাল ব্যালটে কারচুপির সম্ভাবনার কথা জানিয়ে নগরপালকে চিঠি দিল গেরুয়া শিবির। সঙ্গে কালীঘাট থানার ওসি সহ তিন পুলিশ আধিকারিককে সাসপেন্ড করারও আবেদন জানানো হয়েছে।
সোমবার সকালে কলকাতা পুলিশ কমিশনারকে একটি চিঠি পাঠিয়েছে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে কারচুপি চলছে লালবাজারের অন্দরেই। পোস্টাল ব্যালটের জন্য পুলিশ কর্মীদের পরিচয়পত্র সংগ্রহ করা হচ্ছে। যা আদতে ভোটে প্রভাব খাটানোর পরিকল্পনা। আর এই ঘটনায় জড়িত রয়েছেন কালীঘাট থানার ওসি শান্তনু সিনহা বিশ্বাস। বিজেপি-র অভিযোগ, তাঁর নেতৃত্বেই এই বেআইনি কাজ চলছে। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে আরও দুই এস আই তপন কুমার মাইতি এবং বিজিতাশ্ব রাউতের নামও। অভিযোগ, প্রক্সি ভোটের জন্য এই পরিচয়পত্র সংগ্রহের কাজ করছেন এই দুই আধিকারিক।
বিজেপি প্রতিনিধিদের এই চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি কলকাতার উত্তীর্ণ সভাঘরে রাজ্য শাসকদলের একটি সভায় উপস্থিত ছিলেন বেশ কিছু পুলিশ কর্মী। যেখানে তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সির উপস্থিতিতে কলকাতা পুলিশের একাধিক কর্মীর হাতে শাসকদলের পতাকা দেখা যায় বলেও অভিযোগ।
কলকাতা পুলিশ কমিশনারের কাছে কালীঘাট থানার ওসি সহ তিন আধিকারিককে সাসপেন্ড করার দাবি জানিয়েছে বিজেপি। একইসঙ্গে ভোটে কারচুপির এই কারবার অবিলম্বে বন্ধ করার জন্যও উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৭ নভেম্বর লালবাজার থেকে কলকাতা পুলিশের ওসি এবং অতিরিক্ত ওসি পদে রদবদলের নির্দেশিকা জারি হয়। যা তৎকালীন পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা অবিলম্বে কার্যকর করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সাধারণত, এমন নির্দেশিকা জারি হওয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই নতুন আধিকারিকদের দায়িত্ব গ্রহণ করতে দেখা যায়। তবে উলটপুরাণ দেখা যায় কালীঘাট থানার ক্ষেত্রে। প্রাক্তন পুলিশ কমিশনারের ওই নির্দেশিকা-পত্রের ২৯ নম্বরে লেখা ছিল, কালীঘাট থানার ওসি শান্তনু সিংহ বিশ্বাসকে পাঠানো হচ্ছে স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চে। সেই জায়গায় কালীঘাট থানার ওসি হিসেবে আসছেন রবীন্দ্র সরোবর থানার ওসি জয়ন্ত মুখোপাধ্যায়। কালীঘাট থানারই অতিরিক্ত ওসি সত্যজিৎ কর্মকারের যাওয়ার কথা ছিল রবীন্দ্র সরোবরের ওসি পদে। কিন্তু পুরো ব্যাপারটাই এখনও থমকে রয়েছে বলে খবর। কালীঘাট থানার ওসি রাজ্য প্রশাসনের ঘনিষ্ঠ বলেও অভিযোগ ওঠে একাধিকবার। রাজ্য পুলিশ কল্যাণ পর্ষদের নোডাল অফিসার হিসেবেও তাঁকে নিয়োগ করা হয়েছে। রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরের নির্দেশে কলকাতা এবং রাজ্য পুলিশের কমিটির মধ্যে সমন্বয় সাধন করার দায়িত্ব রয়েছে তাঁর উপর।