দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ এক, দুই, তিন, চার…

সুপার সাইক্লোন চলে যাওয়ার পর চার রাত কেটে গিয়েছে। তবু আঁধার ছেয়ে রয়েছে কলকাতার অনেকাংশে। একই অবস্থা দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলাতেও।

সোমবার দুপুর আড়াইটে পর্যন্ত খবর, দক্ষিণ কলকাতার নিউ আলিপুর, চেতলা, শরৎ বোস রোড থেকে বেহালার বিভিন্ন অংশ, যাদবপুরের কয়েকটি জায়গা, ইস্টার্ন বাইপাস সংলগ্ন বেশ কিছু এলাকায় এখনও কারেন্ট আসেনি। তথৈবচ অবস্থা পানীয় জলেরও।

শনিবার সন্ধে থেকে শহরে সেনাবাহিনী কাজ করছে। উপড়ে পড়া গাছ, বিদ্যুতের খুঁটি সরিয়ে জনজীবন স্বাভাবিক করতে বাংলায় ৫০০ জনের র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স পাঠিয়েছে ওড়িশার নবীন পট্টনায়ক সরকার। কাজ করছেন পুরসভার কর্মীরাও। কিন্তু তারপরও রাজ্যের রাজধানী শহরের অনেক এলাকা এখনও জল-বিদ্যুৎহীন। ১০০ ঘণ্টার বেশি বিদ্যুৎ না থাকার পর শনিবার রাতে বিদ্যুৎ সংযোগ এসেছে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিবের বাড়িতে।

নাগরিকদের অসন্তোষ ক্রমশ তীব্র হচ্ছে। ফোনে চার্জ নেই, ইন্টারনেট পরিষেবা ভেঙে পড়েছে। এর সঙ্গেই যুক্ত হয়েছে তীব্র জলকষ্ট। বহু ফ্ল্যাটবাড়িতে আবাসিকরা নিজেদের উদ্যোগে জেনারেটর ভাড়া করে জল তুলছেন। কিন্তু তাতে এই প্রবল গ্রীষ্মে কুলোচ্ছে না।

এদিন কলকাতা পুরসভার প্রশাসক তথা রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “পুরসভা, ইলেকট্রিক সাপ্লাইয়ের কর্মীরা দিনরাত এক করে কাজ করছেন। শহরের অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ সংযোগ ফিরেছে। যে এলাকাগুলো এখনও বিদ্যুৎহীন রয়েছে সেখানে মঙ্গলবারের মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলেই আশা করা যাচ্ছে।”

কলকাতার মতো একই অবস্থা জেলাতেও। হাওড়া, হুগলি, দুই চব্বিশ পরগনার গ্রামাঞ্চল তো বটেই, বহু শহর-মফস্বলেও এখনও বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। কাজ করছে না মোবাইল নেট ওয়ার্ক। সোমবার সকালে পান্ডুয়া স্টেশনে মোবাইল চার্জ দিতে যান কয়েকজন যুবক। আরপিএফ বাধা দিলে বচসা বাঁধে।

রাজারহাটের বেশ কিছু জায়গা এখনও বিদ্যুৎহীন। কারেন্ট নেই সল্টলেকের সেক্টর ফাইভ লাগোয়া মহিষবাথানের অনেক বাড়িতে। নদিয়াতেও বহু জায়গায় বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন। রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদের হেল্প লাইন নম্বর কাজ করছে না বলেও অভিযোগ নাগরিকদের।

সীমান্ত শহর বনগাঁয় এদিন ফের দীর্ঘক্ষণ যশোর রোড অবরোধ করেন জয়পুর ফুলতলা ৩নং ওয়ার্ড এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় অতিরিক্ত টাকা খরচে বিদ্যুৎ সংযোগ করা হচ্ছে, কিন্তু ৩নং ওয়ার্ডে বহু গরীব মানুষ আছেন তাঁদের অতিরিক্ত টাকা খরচ করে বিদ্যুৎ সংযোগের সামর্থ নেই তাই এই এলাকায় এখনও পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগের কাজ শুরু হয়নি।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ প্রশাসন প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে কিন্তু কাজ তথৈবচ।

যদিও এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন বনগাঁর পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্য,তিনি জানান গভীর রাত পর্যন্ত কর্মীরা কাজ করছেন, কিছু জায়গায় এখনও কাজ বাকি আছে কারণ বড় বড় গাছ কেটে পরিষ্কার করতে সময় লাগছে৷বিশেষ করে যশোর রোড এবং তার আশপাশ এলাকায় ঝড়ের তাণ্ডব খুবই প্রখর ছিল,ফলে গাছ ভেঙে পড়েছে বাড়ির উপরে তাই যাতে আরও বেশি ক্ষতি না হয় সেই দিকে নজড় রেখে কাজ করা হচ্ছে৷আশা করা হচ্ছে দু এক দিনের মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

রাতে এভাবে জীবনের ঝুঁকিনিয়ে কাজ করছেন বিদ্যুৎ কর্মীরা বনগাঁ বি এসএফ ক্যাম্প মোড় এলাকায়৷

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here