দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বিশ্বজোড়া করোনা পরিস্থিতি ও ভ্যাকসিন গবেষণায় বড় সাফল্য মিলেছে বলে দাবি করলেন রুশ বিজ্ঞানীরা। এই প্রথম মানব শরীরে করোনার ভ্যাকসিনের প্রয়োগ সফল হয়েছে বলে জানিয়েছে সে দেশের সেচেনভ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষক দল। এ দাবি সত্যি হলে, বিশ্বে নজির গড়েছে তারা।
সেচেনভ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ‘ইনস্টিটিউট অফ ট্রান্সন্যাশনাল মেডিসিন অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি’র ডিরেক্টর ভাদিম তারাসোভ জানিয়েছেন, এক দল স্বেচ্ছাসেবকের উপরে নতুন ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চালানো হয়েছিল। এই ট্রায়ালে স্বেচ্ছায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে থেকে প্রথম দলটির উপর পর্যবেক্ষণ প্রায় শেষের মুখে। তাঁদের আগামী বুধবার ছেড়ে দেওয়া হতে পারে। অন্য দলটিও ট্রায়ালের অধীনে, তাঁরা সম্ভবত আগামী ২০ জুলাই বাড়িতে ফিরে যেতে পারবেন।
করোনাভাইরাসের মহামারীর প্রকোপে কার্যত স্তব্ধ গোটা বিশ্ব। এ কথা প্রায় সকলেই বুঝে গেছেন যে এই অসুখের ভ্যাকসিন আবিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত সংক্রমণ থেকে সম্পূর্ণ মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়। তাই নোভেল করোনাভাইরাসের প্রতিষেধকের অপেক্ষায় যেন দিন গুনছে মানুষ। এমনই সময়ে জ্বলল আশার আলো।
রাশিয়ার স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ‘গামালেই ইন্সটিটিউট অফ এপিডেমোলজি অ্যান্ড মাইক্রোবায়োলজি’ করোনার এই ভাকসিনটি তৈরি করেছে গত মাসে। এর পরে গত মাসেরই মাঝামাঝি করে সেচেনভ বিশ্ববিদ্যালয়ে এটির হিউম্যান ট্রায়াল শুরু হয়। বিশ্বের প্রথম প্রতিষ্ঠান হিসেবে তাঁরাই স্বেচ্ছাসেবকদের উপরে এই ওষুধের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করল বলে দাবি করেছেন সেচেনভ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
সেচেনভ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ইনস্টটিউট অফ মেডিক্যাল প্যারাসাইটোলজি’, ‘ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ভেক্টর বর্ন ডিজিসেস’-এর ডিরেক্টর আলেকজান্দ্রা লুকাসেভ জানিয়েছেন, ট্রায়ালের শেষ পর্যায়ের মূল লক্ষ্য ছিল মানব শরীরে এই ভ্যাকসিন কতটা নিরাপদ তা খতিয়ে দেখা। সাফল্য মিলেছে। এই ভ্যাকসিনটি মানবদেহে সম্পূর্ণ নিরাপদ হিসেবে প্রতিপন্ন হয়েছে।
রুশ স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে এক বিবৃতিতে আগেই বলা হয়েছিল, দুই ধরনের ভ্যাকসিন (তরল ও পাউডার) উদ্ভাবন করেছে মস্কো। ৩৮ জন মানুষের দু’টি গ্রুপে দু’ধরনের ভ্যাকসিনের পরীক্ষা চালানো হবে। স্বেচ্ছাসেবীদের ওই দু’টি গ্রুপে সামরিক ও বেসামরিক ব্যক্তিরা রয়েছেন। তাঁদের ২১ দিন অন্তর দু’টি ডোজ দিয়ে মস্কোর দু’টি হাসপাতালে আইসোলেশনে রাখা হবে বলে জানা গিয়েছিল।
তবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকেই বেশ কয়েক বার করোনাভাইরাসের টিকা ও ওষুধ আবিষ্কারের খবর সামনে এসেও শেষমেশ তা সঠিক নয় বলেই প্রকাশিত হয়েছে। আশার আলো জ্বলার পরেও নিভে গেছে বারবার। আর এরই মধ্যে বিশ্বজুড়ে মৃত্যুমিছিল বাড়তে বাড়তে তা কোটি পার করে ফেলেছে। তাই আশঙ্কা একটা থেকেই গেছে রাশিয়ার দাবি নিয়ে। এবারও একেবারে শেষে পৌঁছেও সব ঘেঁটে যাবে না তো, আশঙ্কায় ভুগছে চিকিৎসক মহল।