ইউক্রেন সীমান্তে বিশাল সেনা সমাবেশ, মিসাইল-যুদ্ধ ট্যাঙ্ক,হুঙ্কার দিচ্ছে রাশিয়া! যুদ্ধের দামামা কি তবে বাজল?

0
1129

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের চরম পরিণতি হতে চলেছে বলেই মনে করা হচ্ছে। সাম্প্রতিক উপগ্রহ চিত্র যে দৃশ্য দেখিয়েছে তা পিলে চমকে ওঠার মতোই। বিপুল সেনা, অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ইউক্রেনকে ঘিরে ফেলেছে রাশিয়া। লক্ষাধিক সেনার সমাবেশ সীমান্ত এলাকাগুলিতে। পর পর সাজানো হয়েছে যুদ্ধ-ট্যাঙ্ক। তাক করে বসানো মিসাইল। রাইফেল ডিভিশ মোতায়েন হয়েছে সীমান্তে। যুদ্ধ সাজে ইউক্রেনের দরজায় হুঙ্কার দিচ্ছে রাশিয়া।

ম্যাক্সারের হাই রেজোলিউশন স্যাটেলাইট ইমেজে দেখা গেছে, গত ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ইউক্রেনের সীমান্তে লক্ষাধিক সেনার সমাবেশ হয়েছে। বেলারুজ, ক্রিমিয়া ও পশ্চিম রাশিয়া সীমান্ত এলাকায় অস্থায়ী সামরিক পরিকাঠামো তৈরি হয়ছে। অ্যাটাক হেলিকপ্টার চক্কর দিচ্ছে আকাশে।
উপগ্রহ চিত্র ভয় ধরিয়ে দেওয়ারই মতো। রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্তে এখন যুদ্ধের আবহ। ফাইটার-বোম জেট উড়ে বেড়াচ্ছে আকাশে। সেনা কনভয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে যাতায়াত করছে। কমব্যাট ইউনিট তৈরি হয়েছে। মিসাইল নিক্ষেপ করার পরিকাঠামোও তৈরি। সারি সারি যুদ্ধ-ট্যাঙ্ক নির্দেশের অপেক্ষা করছে।

বেলারুশের জায়াব্রোভকা অঞ্চলে সেনাবাহিনী, সাঁজোয়া গাড়ি ও হেলিকপ্টার দেখা গিয়েছে। ওই জায়গাটি ইউক্রেনের সীমান্ত থেকে মাত্র ২৫ কিলোমিটার দূরে। ইউক্রেন সীমান্ত থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে রেচিস্তা শহরে মোতায়েন হয়েছে বাড়তি সেনা।

এই সপ্তাহেই ফ্রন্ট ব্রাগ, ক্যারোলিনা থেকে পোলান্ড এবং জার্মানিতে প্রায় দুহাজার সেনা পাঠিয়েছে আমেরিকা। ন্যাটোর সচিব জেনারেল জেনস স্টলটেনবার্গ বলেছেন, “ন্যাটো তাদের মিত্রদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তায় সবরকম পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত। ইউরোপের পূর্বাঞ্চলের দেশগুলির সামরিক শক্তি বাড়ানোও লক্ষ্য। যে কোনও হুমকি ও প্রত্যাঘাতের মোকাবিলা করতে আমরা তৈরি।” আমেরিকা জানিয়েছে, আট হাজার সেনাকে রাশিয়ার সীমান্তের কাছেই মোতায়েন করে রাখা হয়েছে। প্রয়োজনে সেনার সংখ্যা বাড়ানো হবে। ন্যাটো বাহিনীও রুশ সীমান্তের কাছে যুদ্ধবিমান ও যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আগেই বলেছিলেন, রাশিয়া আগ্রাসন দেখালে ভয়ঙ্কর যুদ্ধ শুরু হবে। হোয়াইট হাউসের তরফে একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট বাইডেনের প্রশাসন এব‌ং তাঁর ইউরোপীয় মিত্র শক্তি ইউক্রেন সীমান্তে রুশ আগ্রাসন নিয়ে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। রাশিয়াকে বলা হয়েছে, সামরিক আগ্রাসনের নীতি ছেড়ে অবিলম্বে কূটনৈতিক আলোচনার রাস্তায় হাঁটতে। রাশিয়ার সমঝোতার পথে না গেলে নিষেধাজ্ঞা চাপাতে বাধ্য হবে আমেরিকা। ২০১৪ সাল থেকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যে সব আর্থিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছিল, সেগুলি ফিরিয়ে আনা হবে বলে হুঁশিয়ারিও দিয়েছে আমেরিকা।

এদিকে ইউক্রেনের পূর্ব সীমান্তে ক্রাইমিয়ার কাছে বিশাল সেনাবাহিনী জড়ো করেছে রাশিয়া, তা ধরা পড়েছে উপগ্রহ চিত্রে। আমেরিকা এবং ন্যাটো একযোগে রাশিয়াকে প্রতিহত করার জন্য প্রস্তুত। এর মধ্যেই চীনকে দুষল আমেরিকা। পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কার্বি সোমবার জানালেন, ইউক্রেন আক্রমণে তলায় তলায় রাশিয়াকে মদত জোগাচ্ছে চীন। তিনি বলেন, ‘চীনের রাশিয়াকে এমন কৌশলগত সমর্থন অত্যন্ত উদ্বেগজনক এবং ইউরোপের সুরক্ষা পরিস্থিতির জন্য আরও বেশি টালমাটাল করা।’

এদিকে মুখপাত্রটি আরও বললেন, ইউক্রেন আক্রমণ নিয়ে এখনও স্থির সিদ্ধান্তে আসেননি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তবে যে কোনও সময় খুব সামান্য নোটিস অথবা বিনা নোটিসেই আক্রমণ শুরু করতে পারে ক্রেমলিন। আমেরিকার প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন মঙ্গলবারই ইউরোপে যাচ্ছেন। ব্রাসেলসে ন্যাটোর সদর দপ্তরে বৈঠক করবেন তিনি।

পোল্যান্ডেও যাবেন যেখানে আরও ৩০০০ মার্কিন সেনা মোতায়েন করার পরিকল্পনা রয়েছে। সেনা মোতায়েন হবে লিথুয়ানিয়াতেও।  তবে স্টেট ডিপার্টমেন্ট মুখপাত্র নেড প্রাইস মনে করছেন আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা এখনও সম্ভব। যদিও রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্তে অশান্তি কমার কোনও চিহ্ন পায়নি আমেরিকা।   

Previous articleWeather :বসন্ত এসে গেছে বাংলায়! হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস
Next articleLaluprasad Yadav: পশুখাদ্য কেলেঙ্কারি মামলায় নতুন করে দোষী সাব্যস্ত লালুপ্রসাদ যাদব, ফের জেলে ফেরার সম্ভাবনা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here