দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ একদিকে যখন নিট-জয়েন্ট স্থগিত করার দাবিতে এককাট্টা বিরোধীরা, তখন প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখলেন দেশ-বিদেশের ১৫০ জন শিক্ষাবিদ। সেই চিঠিতে তাঁরা প্রধানমন্ত্রীকে লিখেছেন, এই পরীক্ষা গ্রহণে আর যদি বিলম্ব হয় তাহলে ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হবে।
গতকালই কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধীর আহ্বানে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন সাত অবিজেপি মুখ্যমন্ত্রী। সেই বৈঠক থেকে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, সুপ্রিম কেন্দ্রীয় সরকার সুপ্রিম কোর্টের কাছে রায় পুনর্বিবেচনার অনুরধ করুক। তা যদি কেন্দ্র না করে তাহলে তাঁরাই শীর্ষ আদালতে রিট পিটিশন দাখিল করবেন। শুক্রবার এই ইস্যুতে দেশজোড়া প্রতিবাদের ডাক দিয়েছে কংগ্রেস। ঠিক তখনই এই শিক্ষাবিদরা চিঠি লিখলেন প্রধানমন্ত্রীকে। মোদীকে লেখা চিঠিতে বলা হয়েছে, “কেউ কেউ তাঁদের রাজনৈতিক স্বার্থে ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে খেলছেন!”
প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে এই শিক্ষাবিদরা আরও লিখেছেন, “পরীক্ষা ও ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে দেশের লক্ষ লক্ষ ছেলেমেয়ের মধ্যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। সরকারের উচিত দ্রুত তা নিরসন করা।” তাঁদের বক্তব্য, “মহামারীর অযুহাতে ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ, স্বপ্ন নিয়ে আপস করা উচিত হবে না। যে দিন নির্ধারিত হয়েছে, সেই দিনগুলিতেই ইঞ্জিনিয়ারিং ও ডাক্তারির প্রবেশিকা পরীক্ষা হোক। আর দেরি করলে ছাত্রছাত্রীদের সর্বনাশ হবে। কোনও কিছুর বিনিময়েই এই সময় আমরা লক্ষ লক্ষ ছাত্রছাত্রীদের ফিরিয়ে দিতে পারব না।”
যাঁরা চিঠি লিখেছেন তাঁদের মধ্যে রয়েছেন জেএনইউ, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়, বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটি, আইআইটি দিল্লি, লখনউ বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো দেশের নামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যাপক, উপাচার্যরা। একই সঙ্গে ইউনিভার্সিটি অফ লন্ডন, ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া-সহ জেরুজালেম, ইসরালের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত ভারতীয় অধ্যাপকরাও এই চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন।
জয়েন্ট এন্ট্রান্স বা নিট পরীক্ষা সাধারণত এপ্রিল-মে মাসেই হয়। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে সুরক্ষাবিধির কথা মাথায় রেখে পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। প্রথমে বলা হয়েছিল, সব পরীক্ষাই হবে জুলাইতে। জয়েন্ট পরীক্ষার দিন ফেলা হয়েছিল ১৮ থেকে ২৩ জুলাই এবং নিট পরীক্ষার দিন ঠিক হয়েছিল ২৬ জুলাই। কিন্তু, জুলাই মাসেও দেশজুড়ে সংক্রমণ বাড়তে থাকায় পরীক্ষা ফের পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
পরে ঠিক হয় সেপ্টেম্বরে ১-৬ ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ১৩ সেপ্টেম্বর ডাক্তারি পড়ার প্রবেশিকা পরীক্ষা হবে। সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন ১১ জন ছাত্র ও তাঁদের অভিভাবকরা। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অরুণ মিশ্রের বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, “করোনা সংক্রমণের কারণে জীবন থমকে থাকবে না। স্বাস্থ্য বিপর্যয়ের কারণে এমনিতেই ছাত্রছাত্রীদের কেরিয়ারের অনেক ক্ষতি হয়েছে। পরীক্ষা পিছিয়ে দিলে তাদের আরও একটা বছর নষ্ট হবে। সেদিকটা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”