দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ আমেরিকা’স গট ট্যালেন্ট’ নামে জনপ্রিয় রিয়ালিটি শোয়ের মঞ্চ ইতিমধ্যেই মাতিয়ে দিয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বাগদার মেয়ে সোনালী মজুমদার । সঙ্গী সুমনকে সঙ্গে নিয়ে তার নাচের পারফরম্যান্স এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল।ব্যাড সালসা’ দলের হয়ে ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া বাগদা গ্রামের মেয়ে পনেরো বছরের সোনালি লস অ্যাঞ্জেলেসের অনুষ্ঠান মঞ্চে পারফরম্যান্সে মুগ্ধ করেছেন বিচারকদের, দর্শকদেরও মন জয় করেছেন একই ভাবে৷
অনুষ্ঠান মঞ্চে ভুবনেশ্বরের বাসিন্দা সুমন জানান, সোনালির বাবা পেশায় ভাগচাষি তাঁর দিনে রোজগার মাত্র ৭৫ টাকার কাছাকাছি
অনুষ্ঠান মঞ্চে ভুবনেশ্বরের বাসিন্দা সুমন জানান, সোনালির বাবা পেশায় ভাগচাষি তাঁর দিনে রোজগার মাত্র ৭৫ টাকার কাছাকাছি বছর কয়েক আগেও বিদ্যুৎ ছিল না সোনালিদের বাগদার সালুয়ারদাড়ির গ্রামের বাড়িতে। বাবা সন্ন্যাসী জানান, ‘‘একটা সময় ছিল, যখন ঠিকমতো খাওয়া জুটত না আমাদের। কিন্তু নিজেরা না খেয়েও সোনালির যত্ন নিয়েছি যতটুকু পেরেছি। এখন মনে হয়, সেই কষ্টের ভাল ফল পাচ্ছি যা আমাদেরকে এবং আমাদের গ্রামের সকলেরই আনন্দ।’’
সোনালীর বয়স তখন মাত্র তিন বছর হবে, বাড়ির সামনের রাস্তায় মাইক বাজিয়ে আইসক্রিম ফেরি করতে আসতো বিক্রেতারা। সেই আইসক্রিমের গাড়ির গানের সঙ্গে আপনমনে নাচত ছোট্ট সোনালী,মেয়ের আগ্রহ দেখে গ্রামের নাচের শিক্ষিকা পিঙ্কি পালের কাছে তালিম নিতে পাঠিয়েছিলেন সন্ন্যাসী ও তাঁর স্ত্রী আলপনা। কিন্তু পরিবারের এমনই হাল, মেয়ে কত দূর এগোতে পারবে, তা নিয়ে যথেষ্ঠ চিন্তায় ছিল পরিবারের সকলেই৷
সোনালীর প্রতিভা সেই সময় থেকেই সকলের নজর কাড়ে। যোগাযোগ হয়ে যায় কলকাতার লেক গার্ডেন্সে বিভাস চৌধুরীর সঙ্গে।
৬বছর বয়সে সোনালীব বিভাসের কাছে প্রশিক্ষণ নেওয়া শুরু করে। পাশাপাশি চলে পড়াশোনাও। বিভাসের কথায় , কয়েক বছর ধরে ছাত্র ছাত্রীদের নিয়ে তিনি থাকেন মুম্বইয়ে। ২০১২-তে ‘ইন্ডিয়া’স গট ট্যালেন্ট’ প্রতিযোগিতায় নজর কাড়ে সোনালী। একটি টিভি চ্যানেলের সর্বভারতীয় প্রতিযোগিতায় সোনালী মুম্বইয়ে তারকাদের সামনে নাচের সুযোগ পায়।
২০১৯-এ যোগ দেয় ‘ব্রিটেন’স গট ট্যালেন্ট’ প্রতিযোগিতায়। মার্চে পারফর্ম করে মুম্বইয়ে ফিরেছে সে। সেপ্টেম্বরে ফের আমেরিকা যাওয়ার কথা।
সোনালীর মা আলপনা বলেন, গত নভেম্বরে বাড়ি এসেছিল মেয়ে। সন্ন্যাসী জানান, এবার সামান্য কিছু জমিতে কলাচাষ করেছিলেন। আমপানে সেসব নষ্ট হয়েগেছে। এসব কষ্ট সব ভুলে যান তাঁরা, যখন মেয়ের সাফল্যের কথা শোনেন। আর মঞ্চে সোনালী বলেছে, ‘‘বাবা-মা আমার জন্য খুবই কষ্ট করেছেন। এখন ভাল লাগছে, যখন সবাই আমাকে দেখে চিনতে পারে। স্বীকৃতি দেয় এক জন শিল্পী হিসাবে।’’ দেখুন সেই ভিডিও:
There's nothing BAD about them! @badsalsagroup danced their way into our hearts! 💃 pic.twitter.com/DfrqslEAti
— America's Got Talent (@AGT) May 27, 2020