দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ গতমাসেই একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ বলেছিলেন, ২০২১ সালে বাংলায় দুই-তৃতীয়াংশ আসন নিয়ে সরকার গড়বে গেরুয়া শিবির।
মঙ্গলবার নেতাজি ইনডোরে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ শিক্ষকদের সঙ্গে প্রীতি বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘কেউ যদি মনে করে থাকে ২০২১ সালে আমাদের সরকার হবে সাফ, তাদের আমি বলি, তোমাদের কথা বলাটাই হচ্ছে মানুষ মনে করে পাপ।
সেই জন্য তোমরা হবে সাফ। তৈরি থাকো, আগামী দিন মা–মাটি–মানুষের যে সরকার, সেই সরকারই থাকবে। এবং গর্বের সঙ্গে কাজ করবে। বিভেদ করে নয়, বিভাজন করে নয়, গন্ডগোল করে নয়, দাঙ্গা করে নয়, ইতিহাস বদলে নয়, ব্যাঙ্ক বন্ধ করে নয়।’ শিক্ষকদের উদ্দেশে বলেন, ‘আর কিছু বলব না। শুধু বলব সঙ্গে থাকবেন। ভাল থাকবেন। এই লড়াই মানুষের বাঁচার জন্য, উন্নয়নের জন্য, নিরাপত্তার জন্য।’
মুখ্যমন্ত্রী এদিন বিভিন্ন ব্যাঙ্ক সংযুক্তিকরণ, টাকা তোলার ঊর্ধ্বসীমা, ফোনে আড়িপাতা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন। বলেন, ‘কোনও গোপনীয়তা নেই। টাকা রাখার নিরাপত্তা নেই। মহারাষ্ট্রে একটা ব্যাঙ্ক থেকে ১ লক্ষের বেশি টাকা তুলতে দেওয়া হচ্ছে না। ব্যাঙ্ক তুলে দেওয়া হচ্ছে। বলে দেওয়া হচ্ছে টাকা পাবেন না।
আমাদের মনে রাখতে হবে, সঙ্কটটা ঘনীভূত। সুতরাং নিজেরটা নিজেদের সামলে রাখতে হবে। নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে।’ মঞ্চে উপস্থিত বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি চাই ভয় পেয়ে নয়, আপনারা ভাল করে শান্তিপূর্ণভাবে কাজ করুন। কে কী ডেকে বলল, এত চিন্তা করবেন না। মনে রাখবেন আমাদের সরকার নির্বাচিত সরকার। সংবিধান নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতা দিয়েছে অন্য কাউকে নয়। কেন্দ্র সরকার যেমন নির্বাচিত সরকার তেমন রাজ্য সরকারও নির্বাচিত।
কোনও সমস্যায় পড়লে সরাসরি আমায় জানাবেন। আমাদের সরকার শিক্ষক সমাজের ওপর নির্ভর করে। আমাদের সরকারকে আশীর্বাদ করবেন, শুভেচ্ছা দেবেন। মনে রাখবেন আমাদের সরকার আপনাদের বিরক্ত করবে না। আপনাদের কোনও ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করবে না।’ গত কয়েক বছরে শিক্ষাক্ষেত্রে সরকারের নেওয়া বেশ কয়েকটি উন্নয়নমূলক প্রকল্প–সহ বেতন ও অবসরের বয়সবৃদ্ধির মতো কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
বলেন, ‘২০১১ সালে রাজ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ছিল মাত্র ১২। এখন বেড়ে হয়েছে ৪২। বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজের সংখ্যা বাড়ায় উচ্চশিক্ষায় পড়ুয়া ভর্তির হার অনেক বেড়েছে। বাংলাকে এডুকেশন হাব করার লক্ষ্য রয়েছে। মাত্র সাড়ে ৮ বছরেই এই কাজগুলো হয়েছে। যারা এখন থেকেই চিৎকার করছে, তাদের বলি, কাজের মধ্যে দিয়ে বিচার হোক।’