দেশেরসময় ওয়েব ডেস্ক: আজ মঙ্গলবার থেকে শুরু মাধ্যমিক পরীক্ষা। জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা। ছাত্রছাত্রীদের যাতে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে কোনও অসুবিধা না হয়, সেদিকে কড়া নজর রেখেছে প্রশাসন।
গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার মোড়গুলিতে যেমন বাড়তি পুলিশ মোতায়েন থাকছে, তেমনই দ্রুত কাউকে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়ার জন্য থাকছে আলাদা গাড়ির ব্যবস্থা। শুধু পুলিশকর্মীরাই নন, উচ্চপদস্থ কর্তারাও মঙ্গলবার সকাল থেকে রাস্তায় থাকবেন।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলা শিক্ষা দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই বছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসবেন ৯০,৩১৯ জন পরীক্ষার্থী। এর মধ্যে ছাত্রের সংখ্যা ৪২,৬৭৬ জন। ছাত্রী ৫০,৬৪৩। পরীক্ষার্থীর সংখ্যা এ বার ছ’ হাজার কমেছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৮৪,১৪৩ জন। ছাত্রের সংখ্যা ৩৬ হাজারের কিছু বেশি। ছাত্রীর সংখ্যা ৪৭ হাজার ছাড়িয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর পরীক্ষার্থীর সংখ্যা দু’হাজার কম।
উত্তর ২৪ পরগনার গুরুত্বপূর্ণ মহকুমা, বনগাঁ ও ব্যারাকপুর। ব্যারাকপুরে কোনও পরীক্ষার্থীর পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে যাতে অসুবিধা না হয় সে জন্য সদা সজাগ থাকবে পুলিশ। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার শুধু ব্যারাকপুর মহাকুমায় ১১১টি স্কুলকে পরীক্ষাকেন্দ্র করা হয়েছে। যেখানে প্রায় ৩২ হাজার ৮০০ জন ছাত্রছাত্রী পরীক্ষায় বসবে। পরীক্ষার্থীদের সুবিধার্থে প্রতিটি কেন্দ্রে পানীয় জলের গাড়ির যেমন ব্যবস্থা থাকছে তেমনই, যেখানে শৌচালয়ের উপযুক্ত পরিকাঠামো নেই সেখানে মোবাইল টয়লেটের ব্যবস্থাও রাখা হচ্ছে।
প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্রে স্বাস্থ্য দপ্তর থেকেও একজন করে রাখা হচ্ছে৷ যদি হঠাৎ কোনও পরীক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ে, তা হলে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসা এবং প্রয়োজনে হাসপাতালে পাঠানোর সবরকম ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ব্যারাকপুর শিক্ষা জেলার ডিআই দীপঙ্কর রায় জানান, ‘ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষা দিতে যাতে কোনও রকম অসুবিধা না হয় সে জন্য যা যা ব্যবস্থা নেওয়ার সবই নেওয়া হয়েছে।’
বনগাঁ পুরসভার পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্য বলেন,পরীক্ষা চলাকালীন শহর সম্পূর্ণ যানজট মুক্ত রাখতে পুরসভার কর্মীরা সকাল থেকেই গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার মোড়ে যান চলাচল নিয়ন্ত্রন করতে শুরু করেছেন, পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসনের সম্পূর্ণ সহ যোগীতায় পরীক্ষার্থীদের জন্য সমস্ত রকম ব্যাবস্থা নেওয়া হয়েছে।বিশেষ করে এই সময় যাতে কোন রকম ভাবে ভারি যান চলাচল করতে না পারে তার জন্য শহরের বাইরেও কর্মীদেরকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। পুরসভার পক্ষ থেকে অতিরিক্ত গাড়ি ব্যাবস্থা এবং এ্যম্বুলেন্স এর ব্যাবস্থা রাখা হয়েছে৷ পথে বা পরীক্ষা চলাকালীন কোন পরীক্ষার্থী বা তাদের অবিভাবকরা অসুস্থ হয়ে পড়লে যাতে দ্রুত ব্যাবস্থা গ্রহণ করা যায়৷.
কমিশনারেট এলাকার গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে বাড়ানো হয়েছে পুলিশ কর্মীর সংখ্যা। বিটি রোড ও কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েতে যেমন নির্দিষ্ট জায়গায় পুলিশ মোতায়েন থাকবে, তেমনই থাকবে পুলিশি টহলদারি ভ্যানও। পরীক্ষার দিনগুলিতে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত খড়দহ স্টেশন রোডের মতো যে সব রাস্তায় অতিরিক্ত গাড়ির চাপ থাকে, সেখানে বড় গাড়ি ঢুকতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ।
যানজটে যাতে পরীক্ষার্থীদের নাকাল হতে না হয়, সে জন্য একগুচ্ছ পরিকল্পনা নিয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর জেলা পুলিশ। যানজট নিয়ন্ত্রণে বিশেষ দল গড়া হয়েছে। বারুইপুর, নরেন্দ্রপুর, সোনারপুর, জয়নগর, ক্যানিং ও ভাঙড় থানা এলাকার দশটি এলাকা যানজটপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই দশ জায়গায় সকাল থেকেই রাখা হবে অতিরিক্ত পুলিশ কর্মীদের।