দেশের সময়, পূর্ব বর্ধমান: মেদিনীপুরের মহা যোগদানে রাজ্য জুড়ে সাড়া পড়েছে। তারপরেই মঙ্গলবারে পূর্ব বর্ধমানে পা রাখছেন বিজেপি নেতারা। সোমবার পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুরে কর্মসূচির পর আজ দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের কর্মসূচি পূর্ব বর্ধমানে। সভায় থাকার কথা সদ্য তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে আসা রাজ্যের হেভিওয়েট নেতা শুভেন্দু অধিকারীর।
সভার আগেই বিজেপির সাংগঠনিক জেলা সভাপতি কৃষ্ণ ঘোষ দাবি করেছেন, কেতুগ্রাম ও পূর্বস্থলীতে তাঁদের কর্মীদের মারধর করা হচ্ছে। পোস্টার ফেস্টুন ছিড়ে ফেলা হচ্ছে। ভয় দেখানো হচ্ছে। রবিবার কাটোয়া শহরে দলের কর্মীরা পতাকা বাঁধতে গেলে তৃণমূলের লোকজন তাঁদের মারধর করে। পুলিশ কার্যত নিক্রিয় আছে।
অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য কমিটির সদস্য দেবু টুডু জানিয়েছেন, তারা একাজ করেন না। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা এ রাজ্যে আছে। যে কেউ সভা করতে পারেন। ওরা ঠিক বলছেন না। একই মত তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথের। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী সমর্থকরা হিংসা, মারামারি পছন্দ করেন না। বিজেপির অভিযোগ পুরোটাই মনগড়া।’’
সোমবার বিকেলে বর্ধমান উত্তর বিধানসভার বিধায়ক নিশীথ মালিক বঙ্গধ্বনি যাত্রা কর্মসূচিতে মিছিল করার পর সাংসদ সুনীল মণ্ডল ও শুভেন্দু অধিকারীর কুশপুতুল দাহ করেন। বলেন, ‘‘যাঁরা দলে থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে মানুষ তাদের রেয়াত করবে না।’’ তবে বিজেপি জেলা সভাপতি সন্দীপ নন্দী বলেন, ‘‘মানুষ ঠিক করে নিয়েছে এবার বিধানসভা নির্বাচনে কাকে ভোট দেবে। বিজেপির মিটিং মিছিল বা সভাতে জনসমাগম দেখে তৃণমূল নেতাদের মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছে।’’
এই চাপানউতোরের মাঝেই কেতুগ্রাম ও পূর্বস্থলীর সভাকে কেন্দ্র করে আগ্রহ দেখা দিয়েছে। তিনদিন আগে জেলার এক সাংসদ সুনীল মণ্ডল ও দুই বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডু ও সৈকত পাঁজা তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। জেলার নানা এলাকায় তৃণমূল কর্মীরা তাদের ‘গদ্দার’ বলে প্রচারে নেমেছে। পোড়ানো হয়েছে কুশপুত্তলিকা। এর আগেই বর্ধমান শহর ও সদরে অন্তত আরো দু’জন নেতা দলের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন। দল ছাড়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন কেউ কেউ। যদি তারা মেদিনীপুর যাননি। এর মধ্যেই দলের নতুন কিছু পদ দিয়ে ড্যামেজ কন্ট্রোলের চেষ্টা করা হচ্ছে। যেমন সোমবার বর্ধমান শহরে জয়হিন্দ বাহিনীর সভাপতি করা হয়েছে দলের পুরনো কর্মী পল্লব দাসকে। চেয়ারম্যান করা হয়েছে পুরনো আরেক কর্মী সমরজিৎ দাসকে।
অন্যদিকে পশ্চিম বর্ধমানের মত না হলেও বিজেপি পূর্ব বর্ধমানের নানা এলাকাতেও নতুন করে থাবা বসাচ্ছে। তাদের সংগঠন এখন অনেক গোছানো। জেলায় অনেকদিন যাবৎ তাদের সংগঠন দুটি সাংগঠনিক জেলায় সাজানো। একের পর এক কর্মসূচি করছেন তারা। এর উপর তিনজন বড় নেতার যোগদানে তারা আরও চাঙ্গা। পূর্ব বর্ধমানের কালনা ও পূর্বস্থলীতে বিজেপির পুরনো প্রভাবের ক্ষেত্র রয়েছে। তাই সভার দিকে তাকিয়ে আছেন রাজনৈতিক মহল। সকাল সকাল শ্রীচৈতন্যের মন্দিরে পুজো দিয়ে সভার প্রস্তুতি শুরু করে ফেলেছেন দিলীপ ঘোষ।