আজ থেকেই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হচ্ছে জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ,হারাল রাজ্যের মর্যাদা

0
812

দেশের সময়ওয়েবডেস্কঃ আজই সেই দিন। ৩১ অক্টোবর। তিন মাসের নানা উত্থান-পতন, টানাপড়েনের পরিসর পেরিয়ে আজ থেকেই সরকারি ভাবে দুটি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হতে চলেছে জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ। গত ৫ অগস্ট সংসদে পাশ হয়েছিল জম্মু-কাশ্মীর বিভাজন বিল।

ওই বিল অনুযায়ী জম্মু-কাশ্মীরকে ভেঙে জম্মু-কাশ্মীর এবং লাদাখকে আলাদা আলাদা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার সিদ্ধান্ত হয়। সেই সিদ্ধান্ত কার্যকরী হচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার থেকে।

লাদাখে কোনও বিধানসভা থাকবে না। কিন্তু জম্মু-কাশ্মীরে বিধানসভা থাকবে। দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলেই প্রশাসনের শীর্ষে থাকবেন একজন করে লেফটেন্যান্ট গভর্নর।

লাদাখ সম্পর্কে রাষ্ট্রপতির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, ওই অঞ্চলের আয়তন যথেষ্ট বড়। সেখানে খুব কম লোক বাস করেন। সেখানকার ভূপ্রকৃতি বন্ধুর। লাদাখের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন, ওই অঞ্চলটি কেন্দ্রের শাসনের আওতায় আনা হোক। তাতে সেখানকার মানুষের আকাঙ্ক্ষা পূরণ হবে।

জম্মু-কাশ্মীর সম্পর্কে বলা হয়েছিল, সীমান্তের ওপার থেকে এসে সন্ত্রাসবাদীরা সেখানে অশান্তি সৃষ্টি করছে। সেই পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে জম্মু ও কাশ্মীরকেও পৃথক একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করা হচ্ছে।

আজ থেকে দুই আমলা গিরিশচন্দ্র মুর্মু শ্রীনগরে এবং আর কে মাথুর লাদাখে উপরাজ্যপাল হিসেবে শপথ নিতে চলেছেন। দুটি অঞ্চলেরই আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা থাকবে কেন্দ্রের হাতে। জমির বিষয়টি দেখবে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের নির্বাচিত সরকার।

গিরিশচন্দ্র মুর্মু ১৯৮৫ সালের গুজরাত ক্যাডারের অফিসার। এখন তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যয় সংক্রান্ত দফতরের সচিবের পদে আছেন। ২০০২-এর গুজরাত দাঙ্গা থেকে ইশরত জহান ভুয়ো সংঘর্ষ মামলা—প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহ, দু’জনেরই রাজনৈতিক কেরিয়ারের স্পর্শকাতর সময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় দেখা গিয়েছে এই অফিসারকে।

লাদাখের উপরাজ্যপালের পদে যিনি শপথ নিতে চলেছেন রামকৃষ্ণ মাথুর, তিনি একসময় মুখ্য তথ্য কমিশনার ছিলেন। গত বছর নভেম্বরে অবসর নিয়েছেন। জম্মু-কাশ্মীরের বর্তমান রাজ্যপাল সত্যপাল মালিককে গোয়ার রাজ্যপাল করে উপত্যকা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। জম্মু-কাশ্মীরে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কর্মরত, ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর প্রাক্তন ডিরেক্টর দিনেশ্বর শর্মাকে লক্ষদ্বীপের প্রশাসক নিয়োগ করা হচ্ছে।

৩৭০ ধারা বাতিলের পর থেকে দফায় দফায় সেনা মোতায়েন করা হয়েছে উপত্যকায়। গৃহবন্দি করা হয়েছে কাশ্মীরের নেতাদের। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ফোন ও ইন্টারনেট পরিষেবা। তবে জম্মু-কাশ্মীরের পরিস্থিতি ধরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে বলে গত কয়েক মাসে একাধিক বার দাবি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। ধাপে ধাপে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার কথাও জানানো হয়েছে।

কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা বলছেন, গত একমাসে জঙ্গিদের দাপট অনেকটাই বেড়েছে উপত্যকায়। নিজেদের অস্তিত্বের প্রমাণ দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে জইশ, লস্কর। আজও হামলার আশঙ্কার রয়েছে উপত্যকায়। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা এমন আশঙ্কা করে নির্দিষ্ট তথ্য দেওয়ার পরেই রাজধানী দিল্লিতে জারি হয়েছে হাই অ্যালার্ট। আগামী ৭২ ঘণ্টার জন্য চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সব ক’টি নিরাপত্তা সংস্থাকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। জম্মু-কাশ্মীরে বাড়ছে টহল ও নজরদারি।

Previous article৩১ বছরের মধ্যে ভেসে যাবে মুম্বই, অশনিসঙ্কেত দিল ক্লাইমেট কন্ট্রোল
Next articleরোমান্টিক দীঘা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here