দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ টুলকিট মামলায় জামিন পেয়েছেন পরিবেশ কর্মী দিশা রবি। মঙ্গলবার রাতে দিল্লির তিহাড় জেল থেকে বেরিয়ে আসেন তিনি। তাঁর জামিনের শুনানিতে অতিরিক্ত সেশনস আদালতের বিচারক ধর্মেন্দ্র রানা জানিয়েছেন, তাঁর বিরুদ্ধে দিল্লি পুলিশ যে প্রমাণ দাখিল করেছে তা খুবই অল্প ও অসম্পূর্ণ। তাই তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ করার কোনও অকাট্য যুক্তি নেই। কারণ এর আগে কোনও রকমের অপরাধের রেকর্ড নেই তাঁর।
গত সপ্তাহেও এই মামলার শুনানিতে একাধিক বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন বিচারক। তিনি বলেন, দিশা রবির বিরুদ্ধে যে যে ধারায় অভিযোগ নিয়ে আসা হয়েছে তার পক্ষে পর্যাপ্ত প্রমাণ জোগাড় করতে পারেনি দিল্লি পুলিশ। শুধুমাত্র ধারণার বশবর্তী হয়ে রাষ্ট্রদ্রোহের মতো অভিযোগ আনা যায় না। তাড়াতাড়ি প্রমাণ জোগাড় করতে না পারলে দিশার জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করার সুযোগ দিল্লি পুলিশের থাকবে না বলেই সেদিন জানান ধর্মেন্দ্র। সেটাই হল।
দিল্লি পুলিশের তরফে আদালতে জানানো হয়েছে, রাজধানীতে ট্র্যাক্টর র্যালির আগে জুম কলে নিজেদের মধ্যে কথা বলেছিলেন দিশা রবি এবং আরও দুই সমাজকর্মী শান্তনু মুলুক ও নিকিতা জেকব। এই বিষয়ে নাকি খালিস্তান পন্থী সংগঠন পোয়েটিক জাস্টিস ফাউন্ডেশনের প্রধান মো ধালিওয়ালের সঙ্গেও একাধিক বার জুম কলে কথা হয়েছে তাঁদের।
এই প্রসঙ্গে মঙ্গলবার আদালত জানায়, যদি তাঁদের মধ্যে কথা হয়ে থাকে তাতে এটা প্রমাণ হচ্ছে না যে তাঁরা দেশবিরোধী চক্রান্ত করছেন কিংবা দিল্লিতে সংঘর্ষের পিছনে তাঁরা যুক্ত। কারণ কী কথা হয়েছিল তা এখনও স্পষ্ট নয়। কিন্তু কোনও তথ্য প্রমাণ ছাড়া শুধুমাত্র অনুমানের উপর ভিত্তি করে কাউকে দিনের পর দিন জেলের মধ্যে রাখা যায় না।
দিল্লি পুলিশের উদ্দেশে বিচারক ধর্মেন্দ্রর নির্দেশ, যে যে অভিযোগ তারা এনেছে তা প্রমাণ করার জন্য অনেক বেশি ও স্পষ্ট তথ্য দরকার। নইলে শুধুমাত্র অনুমানের ভিত্তিতে কোনও নাগরিককে এভাবে হেনস্থা করার অধিকার পুলিশের নেই। কারণ যে যে অভিযোগ পুলিশ এনেছে তা প্রমাণ করতে না পারলে দেশের আইন ব্যবস্থার উপর থেকেই মানুষের বিশ্বাস উঠে যাবে বলেই আশঙ্কা বিচারকের।
অন্যদিকে দিশা রবি জামিন পাওয়ার পরে তাঁর মা জানিয়েছেন, দেশের আইন ব্যবস্থার প্রতি তাঁর পূর্ণ আস্থা রয়েছে। তাঁর মেয়ে সম্পূর্ণ নির্দোষ। আগামী দিনে তা প্রমাণ হয়ে যাবে বলেই মনে করেন তিনি।