দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ডুমুরজলায় সভা থেকে শুভেন্দু অধিকারীর ‘ফাঁকা করে দেওয়া’র মন্তব্যের ২৪ ঘণ্টাও কাটেনি। তার মধ্য়েই অভিষেকের গড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে ভাঙন! এবার তৃণমূল থেকে ইস্তফা দিলেন ডায়মন্ডহারবারের বিধায়ক দীপক হালদার। স্পিড পোস্টের মাধ্যমে ইতিমধ্যেই নিজের পদত্যাগের চিঠি তৃণমূল ভবন ও দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলা সভাপতি শুভাশিষ চক্রবর্তীর কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন।সূত্র মারফৎ এমনটাই জানা যাচ্ছে।
সম্প্রতি দীপকের বিজেপি-তে যোগদানের জল্পনা ছড়ায়। তাঁর তৃণমূল ত্যাগের ফলে সেই জল্পনা অনেক জল-হাওয়া পেল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। উল্লেখ্য, হাওড়ার ডুমুরজলার সভায় শুভেন্দু বলেছিলেন, ‘দক্ষিণ ২৪ পরগনা, কলকাতা আগামী ২৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ফাঁকা করে দেব’।
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগে প্রাক্তন তৃণমূল নেতা তথা বিজেপি-র কলকাতা জোনের পর্যবেক্ষক শোভন চট্টোপাধ্যারের বাড়িতে যান দীপক হালদার। তারপর থেকেই তাঁর বিজেপি-তে যোগদানের জল্পনা তৈরি হয় বঙ্গ রাজনীতির অলিন্দে। সম্প্রতি কুলতলিতে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় গরহাজির ছিলেন দীপক। সেদিনের সভায় দীপকের অনুপস্থিতিতেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল যে, দলের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কে চিড় ধরেছে।
বিধানসভা নির্বাচনের মুখে গত শনিবারই দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বাসভবনে বিজেপি-তে যোগ দেন প্রাক্তন বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, বালির বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়া, উত্তরপাড়ার বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল, হাওড়ার প্রাক্তন মেয়র রথীন চক্রবর্তী, তৃণমূল ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ। রবিবার হাওড়ার ডুমুরজলায় বিজেপি-র সভায় একমঞ্চে তাঁদের দেখা যায়। ওই সভা থেকে তৃণমূল কংগ্রেসকে তীব্র ভাষায় নিশানা করেন রাজীবরা। এর আগে, গত বছরের শেষলগ্নে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল ফেলে দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। এরপর মন্ত্রীত্ব ও দল থেকে ইস্তফা দেন লক্ষ্মীরতন শুল্কা। একুশের মহারণের মুখে একের পর এক দলীয় নেতার পদত্যাগের জেরে তৃণমূলের কাছে এবারের নির্বাচন কার্যত ‘কঠিন চ্যালেঞ্জ’ বলে ব্যাখ্যা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের।
অন্যদিকে, সম্প্রতি দলত্যাগীদের নিশানা করে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘যাঁরা চলে যাচ্ছেন, বুঝবেন আপদ বিদেয় হয়েছে। তিন ধরনের লোক রয়েছে রাজনীতিতে। লোভী, ভোগী, ত্যাগী’। পাশাপাশি, তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে যাঁরা গিয়েছেন, তাঁদের যে আর দলে ফেরানো হবে না, তাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন মমতা। এ প্রসঙ্গে দলনেত্রীর বার্তা, ‘এরপর আর তৃণমূলে আসার চেষ্টা করবেন না। আপনাদের নেব না। তোমাদের মতো চোরকে নেব না।’ দলত্যাগীদের উদ্দেশ্যে তৃণমূল সুপ্রিমোর প্রশ্ন, ‘তৃণমূল টিকিট দেবে না। তাই ভয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। কেন টিকিট দেব?’ সেই সঙ্গে হার্ড টাস্ক মাস্টার দলনেত্রী এও বলেছেন, ‘কেউ ভুল করলে দল তাঁকে শাস্তি দেবে। এই দল শৃঙ্খলাবদ্ধ দল’।