দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ প্রায় এক সপ্তাহ হল দিদি-র বিশেষ দেখা মিলছেনা! দুপুরের দিকে নবান্ন যাচ্ছেন। তারপর সন্ধ্যায় সেখান থেকে সোজা কালীঘাটের বাড়ি। প্রকাশ্য মঞ্চে শেষ দেখা গিয়েছিল দোলের আগের দিন। মাড়োয়ারি সমাজের হোলি উৎসবে।
বাংলার মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচনী প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়বেন এপ্রিলের ২ তারিখ থেকে। তৃণমূল সূত্রে এই খবর মিলেছে। আর রাজ্যবাসীও মঞ্চে ফিরে পাবেন তাঁদের পছন্দের নেত্রীকে। তাতে গোটা দেশের রাজনীতিতে ঝড় উঠবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
তৃণমূলের দাবি অনুযায়ী, এপ্রিলের ২ তারিখ থেকেই রাতারাতি বদলে যাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রুটিন। বাংলায় এ বার ৭ দফায় ভোট হবে। ১৯ মে শেষ দফার ভোট। তার আগে প্রচার চলবে ১৭ তারিখ পর্যন্ত। ২ তারিখ থেকে শুরু করে কমবেশি চল্লিশ দিন প্রায় একটানা প্রচার করবেন দিদি। এখনও পর্যন্ত যা সূচি তৈরি হয়েছে, তাতে সব মিলিয়ে ৯০টি সভা করতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শাসক দলের শীর্ষ সূত্রের খবর,পর্যবেক্ষকদের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, প্রতিটি লোকসভা কেন্দ্র পিছু দুটি করে সভা করবেন তিনি। ৪২ টি লোকসভা আসনের জন্য ৮৪ টি সভা হবে তাঁর। এ ছাড়াও প্রয়োজন পড়লে কোনও কোনও আসনের জন্য সেই সংখ্যাটা বাড়তে পারে।
দলের দিদি ঘনিষ্ঠ এক নেতার কথায়, দিদি বলেছেন ঠিকই যে প্রতিটি লোকসভা আসনের জন্য দুটি করে সভা করবেন। তবে ভাল করে দেখলে বোঝা যাবে, কোনও কোনও লোকসভা কেন্দ্র কার্যত তিনটি করে সভার সুবিধা পাবেন। কারণ, পাশের লোকসভা আসনের দিদির সভার সুবিধা পেয়ে যাবে লাগোয়া কেন্দ্রগুলি।
বরাবরের মতই এ বারও তারকা প্রচারকদের একটি তালিকা তৈরি করেছে তৃণমূল। তবে বলা বাহুল্য শাসক দলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর পর শুভেন্দু অধিকারী ছাড়া কারও জনসভায় খুব একটা ভিড় হয় না। ইদানীং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় কোথাও কোথাও লোক হচ্ছে ঠিকই। তবে সেটাও যতটা না স্বতঃস্ফূর্ত, তার থেকে বেশি আয়োজন করা ভিড়।
সব মিলিয়ে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ থেকে ধুন্ধুমার হতে চলেছে রাজ্য রাজনীতিতে। আপাতত চলবে দেড়মাস।
অন্যদিকে ৩ এপ্রিল একই দিনে ব্রিগেড ও শিলিগুড়িতে জোড়া সভা দিয়ে বাংলায় চূড়ান্ত পর্বের প্রচারে নামতে চলেছেন বিজেপি-র প্রধান কাণ্ডারী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
রাজ্য বিজেপি সূত্রের খবর,আপাতত দুটি সভার জন্য দিল্লি থেকে সবুজ সংকেত পাওয়া গিয়েছে। ৩ এপ্রিল বাংলায় জোড়া সভা করবেন প্রধানমন্ত্রী। দুপুর ১ টায় শিলিগুড়িতে তাঁর প্রথম সভা হবে। বিকেল ৩ টেয় দ্বিতীয় সভা হবে ব্রিগেডে। ব্রিগেডে সভা করার জন্য সেনাবহিনীর কাছে অনুমতিও চাওয়া হয়েছে।
তবে ওই দুই সভাই শেষ নয়। বাংলায় এ বার ভোট হবে সাত দফায়। প্রতিটি দফাতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে দিয়ে অন্তত একটা করে সভা করানোর লক্ষ্য রয়েছে দলের। তবে এমনও হতে পারে এক দিন এসে পর পর দু’টি দফার ভোটের জন্য একাধিক সভা করবেন প্রধানমন্ত্রী।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে সংখ্যায় সভা করবেন, তার সঙ্গে বিজেপি’র পাল্লা দেওয়াটা কার্যত চ্যালেঞ্জ। তাই বিজেপি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের মতো কেন্দ্রীয় নেতাদের ওপরেই ভরসা করা হচ্ছে। যদিও তাতে কতটা লাভ হবে তা নিয়ে সন্দিহান সবপক্ষই।