দেশের সময় ওয়েবডেস্ক: হঠাৎ করে থমকে গেল সকলের চোখ। আপ লালগোলা প্যাসেঞ্জার তখন ঢুকছে রানাঘাট স্টেশনে। দেখা যায় ট্রেনের ‘কাউক্যাচার’-এ রক্তাক্ত অবস্হায় আটকে এক শিশু। ততক্ষণে পুলিশ জানতে পেরেছে ঘন্টাখানেক আগে খড়দহ স্টেশন থেকে উদ্ধার হয়েছে শিশুটির বাবা বিশ্বরুপ দে(৪০)-এর দেহ। মৃত শিশু কন্যার নাম ধৃতিস্মিতা। প্রাথমিক সূত্রে পুলিশের অনুমান মৃত বিশ্বরুপ দে তার শিশু কন্যাকে নিয়ে ঝাঁপ দেয় থ্রু লালগোলা প্যাসেঞ্জার-এর সামনে। দূরন্ত গতিতে থাকা ট্রেনের ধাক্কায় বিশ্বরুপের দেহ ছিটকে গেলেও ট্রেনের ‘কাউক্যাচার’-এ আটকে যায় ধৃতিস্মিতা। সেই অবস্হায় ট্রেন পৌঁছায় রানাঘাট। সূত্রের খবর, মন্দিরপাড়া ওল্ড ক্যালকাটা রোডের বাসিন্দা বিশ্বরুপ দে পেশায় ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। তিনি একটি বেসরকারি সংস্হায় কর্মরত ছিলেন। গত ১২ই সেপ্টেম্বর অন্নপ্রাশন সম্পুর্ন হয়েছিল ধৃতিস্মিতার। স্হানীয়দের মতে, কিছুদিন ধরেই লক্ষ্য করা যাচ্ছিল উদাস মনে এদিক ওদিক ঘোরাফেরা করছে বিশ্বরুপ। ঘনিষ্ঠ কিছু ব্যাক্তিকে সে জানিয়েছিল, “মোটা অঙ্কের দেনা রয়েছে তার”। এদিন সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ মেয়েকে কোলে নিয়ে লাইন পার হচ্ছিলেন বিশ্বরুপ। তখন সেই লাইনে আসছিল আপ শিয়ালদহ-লালগোলা প্যাসেঞ্জার। ট্রেনের ধাক্কায় ঘটনাস্হলে মৃত্যু হয় বিশ্বরুপের। তার প্যান্টের পকেট থেকে একটি চিরকুট উদ্ধার করে পুলিশ। যেখানে বিশ্বরুপ নিজের নাম ও ঠিকানা লিখে রেখেছিলেন। খবর দেওয়া হয় তার বাড়িতে। তবে দুঃসংবাদ শুনে ছুটে এসে তার প্রিয়জনেরা বিশ্বরুপের দেহ শনাক্ত করলেও খোঁজ মিলছিল না ধৃতিস্মিতার। ঘন্টাখানেক পর রানাঘাট স্টেশন থেকে উদ্ধার হয় ছোট্ট ধৃতিস্মিতার রক্তাক্ত মৃতদেহ। এমন মর্মান্তিক ঘটনায় শোকস্তব্ধ গোটা এলাকা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here