দেশের সময়ঃ ওয়েবডেস্কঃবুধবার সিকিম থেকে কফিন বন্দি হয়ে ফিরলেন পাঠক পরিবারের চার জন এলাকার জনপ্রিয় চিকিৎসক বিভাসকান্তি, তাঁর বাবা ব্রজেন্দ্রনাথ, মা আশালতা, জ্যাঠতুতো দিদি লিলি কফিনবন্দি দেহ মছলন্দপুরের নতুনপল্লির প্রাথমিক স্কুলের মাঠে এসে পৌঁছাতেই ছুটে আসেন গোটা মছলন্দপুরের মানুষ, কান্নায় ভেঙে পড়েন পাঠক পরিবার।এদিন দুপুরে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এলাকায় গিয়ে পাঠক পরিবারের সদস্যদের স্বান্তনা দিয়ে যান রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী তথা হাবড়ার বিধায়ক জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তিনি এই পরিবারের পরিজনদের পাশাপাশি স্থানীয় মানুষের সঙ্গে কথা বলেন এবং মৃতদের পরিবারের যেকোনও রকম সহযোগিতার জন্য পাশে থাকার আশ্বাস দেন তিনি। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‌কিছু বলার ভাষা নেই। খুবই মর্মান্তিক ঘটনা।পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেবের সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ রেখে মৃতদেহ নির্বিঘ্নে বাড়িতে আনার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আহতরাও বাড়ি ফিরে আসছেন। তাঁদের চিকিৎসার ব্যাপারেও প্রয়োজনীয় সাহায্য করা হবে।’‌ তিনি আরও‌ বলেন, ‘‌ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় পরিবার নিয়ে বেড়াতে গেলে পর্যটকদের আরও বেশি সাবধানী হতে হবে।’‌ বুধবার দুপুরে চিকিৎসক পরিবারের ৪ জনের কফিনবন্দি মৃতদেহ এসে পৌঁছয় মছলন্দপুর নতুনপল্লীতে। বিকেলে বারাসতের নীহারেন্দু বিশ্বাসের মৃতদেহও এসে পৌঁছয় তাঁর নবপল্লির বাড়িতে। সকাল থেকেই আত্মীয়–স্বজন ও প্রতিবেশীদের ভিড় জমছিল মৃতদের বাড়িতে। এলাকায় এদিন লক্ষ্মীপুজোর কোনও আয়োজন ছিল না। প্রতিবেশীরা ব্যস্ত ছিলেন মৃতদের পরিবারকে সমবেদনা জানাতে। দুপুর গড়াতেই একের পর এক কফিনবন্দি দেহ এসে পৌঁছয় এলাকায়। কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিজন থেকে পড়শিরা। এদিন দুপুরের বিমানে শিলিগুড়ি থেকে মৃতদেহগুলি দমদম বিমানবন্দরে এসে পৌঁছয়। সেখান থেকে দুপুর ৩টে নাগাদ দেহ এসে পৌঁছায় মছলন্দ‌পুরের বাড়িতে। গ্রামে দেহ এসে পৌঁছতেই শোকের ছায়া নেমে আসে গোটা গ্রামে। এলাকার জনপ্রিয় মানুষ এবং চিকিৎসক বিভাস পাঠক এবং তাঁর পরিবারের মৃত সদস্যদের একবার শেষ দেখা দেখতে শয়ে শয়ে মানুষ হাজির হন পাঠক বাড়িতে। অবশেষে মানুষের চাপ সামলাতে মৃতদেহগুলি স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে নিয়ে যাওয়া হয়। বিভাস পাঠকের বাবার ইচ্ছেতে মৃতদেহগুলির শেষকৃত্য সম্পন্ন করতে ব্যারাকপুরের গান্ধীঘাটে নিয়ে যাওয়া হয়। সোমবার সিকিমের চারধাম থেকে গ্যাংটকে যাওয়ার পথে খাদে গাড়ি উল্টে মৃত্যু হয় নীহারেন্দুর। ওই দুর্ঘটনায় মারা যান মছলন্দপুরের আরও চার জন। নিহারেন্দুর কফিনবন্দি অবস্থায় নবপল্লী ছোট বাজার এলাকায় পৌঁছতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তাঁর স্ত্রী সবিতা বিশ্বাস। কাঁদতে কাঁদতে জ্ঞান হারান সবিতাদেবী। চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি নিহারেন্দুর ছেলেও। আক্ষেপের সঙ্গে কাঁদতে কাঁদতে সবিতাদেবী বলেন, ‘‌যদি ওকে ঘুরতে যাওয়ার জন্য জোর না করতাম তা হলে এইদিন কখনই দেখতে হত না।’‌ সবিতাদেবীকে এদিন পাড়াপ্রতিবেশীদের পাশাপাশি সান্ত্বনা দেন বারাসত পুরসভার পুরপারিষদ সদস্য চম্পক দাস ও কাউন্সিলর কণিকা রায়চৌধুরি–সহ আরও অনেকে। নিমতলা শ্মশানে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় নিহারেন্দুর। মছলন্দপুরের তৃণমূল নেতা অজিৎ সাহা’ র কথায়, কোজাগরীর রাতে মৃতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে নিস্প্রদীপ রাখা হয়েছিল এই গ্রামে৷শোকাহত গোটা মছলন্দপুর।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here