বিশেষ প্রতিবেদন
দেশের সময়ঃ-রাজ্য বিজেপির অন্দরমোহলে উঁকি দিলে যে কেউ বুঝবেন সেই আগের জৌলুস অনেকটাই কমে গেছে।রাজ্য বিজেপির নেতাদের সেই আক্রমনাত্বক শারীরিক ভাষা যেন অনেকটাই ম্রিয়মান।সকলেই কেমন যেন একটা অশঙ্কায় ভুগছেন বলে মনে হয়।যে দিলীপ ঘোষ এই কিছুদিন আগেও রাজ্যের শাসক দলকে সমানে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়তেন তিনিও যেন ঠিক আর আগের মুডে নেই।গোটা রাজ্য বিজেপির অন্দরমোহল জুড়ে কেমন যেন একটা ছন্নছাড়া ভাব।অথচ সামনে মহারণ সকলেররই তো প্রবলভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ার কথা।কী এমন হল যে সবাই এমন আচমকা গুটিয়ে গেল!এই প্রশ্ন করলে অবশ্য বিজেপির রাজ্য নেতারা কিছুই স্বীকার করতে চাইছেন না,বলছেন কেউ গুটিয়ে যায় নি,শুধু আইনি চক্করে তাদের কর্মসূচি নির্ধারণ করতে একটু সময় লাগছে মাত্র।আবার তারা এ রাজ্যে কিছুদিনের মধ্যেই রাজ্যজুড়ে লাগাতার প্রচার অভিযান শুরু করবেন।কিন্তু তাই যদি হয় তাহলে তাদের সেই প্রস্তুতির জোর দেখা যাচ্ছে না কেন,জেলাতেই বা কোথায় বুথ ভিত্তক প্রচার অভিযানের সেই সক্রিয়তা?আসল খবরটা হল রাজ্য বিজেপির নেতারা দলের শীর্ষ মোহলের একটা রিপোর্ট সম্পর্কে অবগত হয়ে গেছেন,সেই রিপোর্ট হল এবার গোটা দেশেই লোকসভায় বিজেপি দলের অবস্থা ভাল নয়,ক্ষমতায় ফেরা নিয়ে ঘোর সংশয় আছে।ঐ রিপোর্টে বলা হয়েছে এখন থেকেই সর্বাত্মক প্রয়াস শুরু না করলে বিজেপির পক্ষে ২০১৯ এর পর ক্ষমতায় থাকা অসম্ভব।সেই জন্য সব রাজ্য নেতাদের এথনই ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।এবং সেই কারণেই যে সব রাজ্যে বিজেপির ক্ষমতা কম ও যে সব রাজ্যের ক্ষমতাসীন দলগুলো ভবিষ্যতে বিজেপির সহায়ক হয়ে উঠতে পারে তাদের বিষয়ে বিজেপিকে কৌশলী ভূমিকা নিতে হবে।আর সেই কৌশলের কারণেই এ রাজ্যে বিজেপি তৃণমূলের সঙ্গে অলআউট লড়াইতে যাবে কীনা তা নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতারা এখনও সিদ্ধান্ত স্থির করে উঠতে পারে নি।তাই রাজ্য বিজেপিতে ভোটের অনেক আগেই ছন্নছাড়া দশা ফুটে উঠতে শুরু করেছে।রাজ্য বিজেপির এক নেতার কতায় সর্বভারতীয় দল হওয়ার এই এক মুশকিল জাতীয় রাজনীতির বাধ্যবাধকতা মেনে চলতে গিয়ে নিজেদের বিশ্বাস যোগ্যতাই প্রশ্নের মুখে পড়ে যায় বার বার।এই বাধ্যবাধকতাতেই বিজেপির রাজ্য সভাপতি মমতাকে বাঙালি প্রধানমন্ত্রীত্বের দাবিদার বলে সাংবাদিক সম্মেলন করতে বাধ্য হন।

যে ভাবে বিজেপি এখন এ রাজ্যে চলছে তাতে যে কেউ বুঝতে পারবেন তাদের আগের সেই ঝাঁঝ আর নেই।এমনকী এরই মধ্যে বাজারে প্রবল গুঞ্জন যে মুকুল রায় আবার তৃমমূলে ফিরতে পারেন।সব মিলিয়ে রাজ্য বিজেপি এই মূহুর্তে একেবারে ঘেটে রয়েছে।এই বিজেপি রাজ্যের শাসক দলকে কতটা লড়াই দিতে পারবে তা নিয়ে তৈরি হয়েছে ঘোর সংশয়।হতাশা ব্যক্ত করতে ছাড়ছেন না কোন কোন নেতা,তবে এখনও তারা প্রকাশ্যে কিছু বলছেন না।অনেকেই প্রত্যাশা করছেন কেন্দ্রীয় নেতারা শেষ পর্যন্ত রাজ্য নেতাদের তৃণমূলের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক লড়াইয়ের অনুমতি দেবেন।যেভাবে মমতা বিরোধী মুখ হয়ে উঠতে চাইছেন তাতে তাঁকে ভরসা করলে বিজেপি ডুববে এটা বুঝে যদি কেন্দ্রীয় নেতারা লড়াইয়ে ঝাঁপাতে বলেন তার অপেক্ষাই করছেন রাজ্য বিজেপি নেতারা।তবে যে ভাবে অমিত শাহ থেকে জেটলি অসুস্থ হয়ে পড়ছেন তাতে কেউ কেউ মজা করে বলছেন লড়াইয়ের আগেই বিজেপি মাঠ ছেড়ে দিচ্ছে না তো!তবে এ রাজ্যে ভাগ্য কিন্তু ঝুলেই আছে,ঝুলে থাকা অবস্থায় কী করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না রাজ্য বিজেপির নেতারা,রাজ্য বিজেপির এই করুণ অবস্থাটা সকলেরই বেশ চোখে লাগছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here