লেহ-তে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পা রাখতেই উত্তেজনা কমানোর বার্তা দিল বেজিং

0
2344

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ আগাম কোনও ঘোষণা না করেই শুক্রবার সকালে লেহতে ভারতীয় সেনা ঘাঁটিতে পৌঁছে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর সঙ্গে গিয়েছেন, চিফ অফ আর্মি স্টাফ বিপিন রাওয়াত।

তার পর কয়েক ঘন্টাও অতিবাহিত হল না। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর লেহ সফরের কথা উল্লেখ না করেও উত্তেজনা কমানোর বার্তা দিল বেজিং। চিনা বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান একটি বিবৃতিতে বলেছেন, “উত্তেজনার পারদ নামাতে ভারত ও চিনের মধ্যে কূটনৈতিক ও সামরিক স্তরে আলোচনা চলছে। এই অবস্থায় কোনও পক্ষের এমন কিছু করা উচিত হবে না যার ফলে উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়।”

সিন্ধু নদের তীরে জানস্কার রেঞ্জে প্রধানমন্ত্রী এদিন সেনাবাহিনী এবং আইটিবিপি-র জওয়ান ও অফিসারদের সঙ্গে বৈঠক করেন। লাদাখ সীমান্তে দেশের সামরিক পরিস্থিতি কতটা টানটান তা পর্যালোচনা করেন। তা ছাড়া ২০ জন জওয়ান শহিদ হওয়ার ঘটনায় শোক প্রকাশ করে সেনাবহিনীর অফিসার ও জওয়ানদের অসীম সাহস ও আত্মত্যাগের তারিফ করেন।

কূটনৈতিক কর্তাদের মতে, এমন নয় যে লাদাখ সীমান্তে সেনা প্রস্তুতি দেখার জন্য প্রধানমন্ত্রীর সশরীরে লেহ-তে যাওয়া অপরিহার্য ছিল। কিন্তু ঘটনা হল, কূটনীতির বহুস্তর। তার ভাষাও পৃথক। প্রধানমন্ত্রীর লেহ-তে যাওয়া শুধু সেনাবাহিনীর মনের বল বাড়িয়েছে তা নয়, তা প্রকারান্তরে বার্তা বেজিংকেও। কমিউনিস্ট চিন ও তাদের লাল ফৌজ যে চোখ রাঙাচ্ছে, তার পাল্টা চোখ রাঙানো।

নয়াদিল্লির এক কূটনীতিকের কথায়, এমন নয় যে লাদাখে চার ছটাক জমি জবরদখল করাই চিনের লক্ষ্য। শি চিনফিংদের আসল লক্ষ্য বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ভারতকে চাপে রাখা। এবং চলতি মন্দার সুযোগ নিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় তাদের বাণিজ্যিক প্রভাব ও পরিকাঠামো বাড়ানো। সে জন্য বেজিং যে ধরনের কট্টর সামরিক ও কূটনৈতিক খেলা শুরু করেছে, তার পাল্টা জবাব দিতে নয়াদিল্লিকেও কট্টর অবস্থান নিতেই হবে। সেটাই সময় ও কূটনীতির দাবি। মোদী সরকার তাই করেছে।

স্বাভাবিক ভাবেই চিন তার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে আজ। কূটনৈতিক কর্তাদের মতে, চিনা বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্রের বিবৃতিতে দু’ভাবে দেখা যেতে পারে। এক, বেজিং চাইছে উত্তেজনা যেন আর না বাড়ে। দুই, প্রধানমন্ত্রী লেহ সফরে যাওয়ার পর পাল্টা হুশিয়ারি দিচ্ছে কমিউনিস্ট চিন। বোঝাতে চাইছে তারা এটা ভাল ভাবে দেখছে না। এ ক্ষেত্রে দ্বিতীয় কারণটাই সঠিক বলে মনে করা হচ্ছে।

কিন্তু এখনই বলে দেওয়া যায় যে, চিনের এই চোখ রাঙানির পরোয়া করবে না নয়াদিল্লি। বরং সাউথ ব্লকও কৌশলে পা ফেলছে। দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় চিনকে কূটনৈতিক ভাবে চাপে ফেলতে নয়া অক্ষ মজবুত করতে চাইছে। তার প্রমাণ আজ সকালেই পাওয়া গিয়েছে। এদিন নয়াদিল্লিতে স্থিত জাপানের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক করেন বিদেশ সচিব হর্ষবর্ধন সিংলা। তার পর জাপানের রাষ্ট্রদূত চিনের উদ্দেশে কড়া বার্তা দিয়ে বলেন, লাদাখ সীমান্তে একতরফা কেউ যদি স্থিতাবস্থা বদলানোর চেষ্টা করে তা ভাল হবে না। উত্তেজনা কমাতে বরং আলোচনা শুরু হোক।

Previous articleলেহ-তে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, ভারত-চিন সীমান্ত পরিস্থিতি খতিয়ে দেখলেন নিজে, সঙ্গী রাওয়াত
Next article‘সাম্রাজ্য বিস্তারের জমানা খতম হয়ে গেছে’ চিনকে কড়া বার্তা প্রধানমন্ত্রীর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here