দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃচিনের লাল সেনাকে ঠেকাতে পুরোপুরি যুদ্ধ প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে ভারতের দুর্ধর্ষ পদাতিক বাহিনী। লেহ-র ১৪ নম্বর কোরের ‘ফায়ার অ্যান্ড ফিউরি’ শাখার সেনারাই চিনের বাহিনীর যম। পূর্ব লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় পিপলস লিবারেশন আর্মির আগ্রাসন ঠেকানোর দায়িত্ব রয়েছে ভারতীয় সেনার এই ফায়ার অ্যান্ড ফিউরি কোরের উপরেই। এই বাহিনীরই দায়িত্বভার নিতে চলেছেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল পি জে কে মেনন।
সূত্রের খবর, ফায়ার অ্যান্ড ফিউরি কোরের বর্তমান দায়িত্বপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট হরবিন্দর সিংয়ের বদলে নতুন লেফটেল্যান্ট জেনারেল হতে চলেছেন মেনন। দেহরাদূনে এই মিলিটারি অ্যাকাডেমির দায়িত্ব নেবেন তিনি।
পি জে কে মেননের বাবাও ছিলেন সেনাবাহিনীতে, সুবেদার এস কে মেনন (অবসরপ্রাপ্ত)। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা তথা এলএসি-তে চিনের সঙ্গে ভারতীয় বাহিনীর সংঘাতের পর থেকে দুই দেশের সেনা কম্যান্ডার পর্যায়ের বৈঠকের নেতৃ্ত্ব দিয়েছিলেন মেনন। ২১ সেপ্টেম্বর থেকে চুসুল সেক্টরে দুই দেশের বাহিনীর বৈঠকে লেফটেন্যান্ট জেনারেল হরেন্দ্র সিংহের সঙ্গে মেননও অংশ নিয়েছিলেন।
লাদাখ সীমান্তে সেনা কমানোর মাধ্যমে উত্তেজনা প্রশমন করা, প্যাঙ্গং হ্রদ সংলগ্ন পাহাড়ি এলাকায় টহলদারির প্রোটোকল তৈরি করার মতো বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয় দুই তরফে।
একসময় শিখ রেজিমেন্টের ১৭ নম্বর ব্যাটেলিয়নের দায়িত্বে ছিলেন মেনন। ২০০৮ সালে লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় ৩ ডিভিশন আর্মির কর্নেল হয়ে যোগ দেন মেনন। চিনের বাহিনীকে কীভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় সে অভিজ্ঞতা তাঁর আছে। পরে ১৪ নম্বর ফায়ার অ্যান্ড ফিউরি কোরে আসার পরে এতদিন চিনের সেনা কম্যান্ডারদের সঙ্গে মুখোমুখি আলোচনাও হয়েছে তাঁর।
১৯৬২ সালে চিন ভারত যুদ্ধের পরে তৈরি হয় লেহ-র ফায়ার অ্যান্ড ফিউরি কোর। কার্গিল-লেহ-র সীমান্ত রক্ষার পাশাপাশি চিন ও পাকিস্তানের বাহিনীকে ঠেকিয়ে রাখা এই কোরের বাহিনীর অন্যতম বড় দায়িত্ব। পাশাপাশি, সিয়াচেনের বরফে আচ্ছাদিত উপত্যকায় রসন ও সামরিক সরঞ্জাম পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বও রয়েছে এই বাহিনীর উপরে। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলেন, সারা পৃথিবীতে একমাত্র ভারতীয় সেনার এই ফায়ার অ্যান্ড ফিউরি কোরই প্রতিকূল আবহাওয়ায় যুদ্ধ করতে সক্ষম। এই বাহিনীর সাহস ও দক্ষতার মুখোমুখি হওয়ার ক্ষমতা খুব কম দেশের বাহিনীরই আছে।
পাহাড়ি দুর্গম এলাকায় যুদ্ধ করার মতো প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় এই কোরের বাহিনীকে। যুদ্ধট্যাঙ্ক ও সামরিক সরঞ্জাম নিয়ে গিয়ে বিপক্ষের সেনাকে চ্যালেঞ্জ করার ক্ষমতা আছে ফায়ার অ্যান্ড ফিউরি কোরের সেনাদের। অস্ত্র প্রশিক্ষণ শুধু নয়, রণকৌশলেও সেরা এই বাহিনী।
প্রতিরক্ষা বিশেশজ্ঞরা বলেন, ভারতীয় সেনার মেকানাইজড ইনফ্যান্ট্রি বা সংগঠিত সশস্ত্র পদাতিক বাহিনীর মধ্যে সবচেয়ে উন্নত এই ফায়ার অ্যান্ড ফিউরি কোর। শত্রুপক্ষকে দ্রুত ঘায়েল করার জন্য এই পার্বত্য বাহিনীর বিশেষ স্ট্র্যাটেজি রয়েছে। এই কোরের জওয়ানরা যে কোনও রকম যুদ্ধাস্ত্র চালাতে পটু। যে কোনও চরম পরিবেশে ও আবহাওয়ার পরিস্থিতিতে যুদ্ধ করার মতো প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত।