দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ গত ১৫ জুন লাদাখের গালওয়াল উপত্যকায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে ভারত ও চিনের সেনা। ভারতের ২০ জন সৈনিক নিহত হন। চিনেরও কয়েকজন হতাহত হয়। ভারতের কয়েকজন সৈনিককে চিনারা বন্দি করেছিল। এরপরে ভারতীয় সেনার এক মেজর জেনারেলের নেতৃত্বে দুই দেশের সেনাবাহিনীর বৈঠক হয়। তিন দিন বৈঠকের পরে শুক্রবার বন্দি চার অফিসার সহ ১০ জন সৈনিককে মুক্তি দিয়েছে চিন। তাঁদের মধ্যে দু’জন মেজর আছেন।
বৃহস্পতিবার সেনাবাহিনী জানিয়েছিল, “সংঘর্ষে কোনও সৈনিক নিখোঁজ হয়নি।” শুক্রবার চিন জানিয়েছে, ভারতের কোনও সেনাকে তারা আটক করেনি। চিনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান এদিন বলেন, “গালওয়ান উপত্যকায় গুরুতর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। কে অন্যায় করেছে, তা এখন পরিষ্কার। যা ঘটেছে, তার পুরো দায়িত্বই ভারতের। উত্তেজনা কমানোর জন্য দুই দেশের মধ্যে আলোচনা হচ্ছে।”
সোমবার রাতের সংঘর্ষের পরে ৭৬ জন ভারতীয় সেনা আহত হন। তাঁরা এখন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। আশা করা হচ্ছে, ১৫ দিনের মধ্যে সকলেই সুস্থ হয়ে কাজে যোগ দিতে পারবেন। চিনারা লোহার রড ও কাঁটা লাগানো লাঠি দিয়ে ভারতীয় সেনাদের মারধর করে। চিনের তরফে কতজন হতাহত হয়েছে সেদেশের সরকার জানায়নি। তবে সেনা সূত্রের খবর, অন্তত ৪৫ জন চিনা সৈনিক হতাহত হয়েছে।
উপগ্রহ চিত্রে দেখা গিয়েছে, সীমান্তের এক কিলোমিটারের মধ্যে সেনা সমাবেশ ঘটিয়েছে চিন। ভারতের সঙ্গে তারা শান্তি বৈঠকে বসছে বটে কিন্তু সেনা সরিয়ে নেওয়ার কোনও লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না। গালওয়ান নদীর গতিধারা ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে চিন। যেখানে সংঘর্ষ হয়েছিল, তার থেকে এক কিলোমিটারেরও কম দূরত্বে ওই চেষ্টা হচ্ছে।
উপগ্রহ চিত্রে স্পষ্ট দেখা গিয়েছে, সীমান্ত বরাবর চিনারা অনেকগুলি বুলডোজার জড়ো করেছে। সেখানে নদীর গতিধারা ঘুরে গিয়ে সরু কর্দমাক্ত জলধারায় পরিণত হয়েছে। অপর একটি ছবিতে দেখা গিয়েছে, গালওয়ান উপত্যকায় নদীর মধ্যে দাঁড় করানো আছে ভারতীয় সেনার কয়েকটি ট্রাক। সেখানে নদীখাত প্রায় শুকনো। চিনারা যেখানে বুলডোজার নিয়ে গিয়েছে, জায়গাটি তার থেকে দু’কিলোমিটার দূরে।
এর আগে ১৯৬২ সালে গালওয়ান উপত্যকায় ভারত ও চিনের সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়। অন্তত ৩০ জন ভারতীয় সেনা মারা যান। কয়েক ডজন ভারতীয় সেনাকে চিনারা বন্দি করে।