দেশের সময়ওয়েব ডেস্ক: দুই বাঘের লড়াই এটা নতুন কিছু ঘটনা নয়, তবে লড়াই শেষে মৃত বাঘকে ছিঁড়ে খাচ্ছে অপর বাঘ, এই দৃশ্য সত্যিই বিরল। আর সেটাই হয়েছে মধ্যপ্রদেশের কানহা ন্যাশনাল পার্কে। এমন ‘বাঘ-খেকো’ বাঘকে নিয়ে রীতিমতো আতঙ্কে পড়েছেন বনকর্তারা।

কানহার এর এক বনকর্তার কথায়, দু’টো বাঘের লড়াই বেঁধেছে এই খবর পেয়েই জঙ্গলের কোর এলাকায় ছুটেছিলেন তাঁরা। তার মধ্যে একটা পূর্ণবয়স্ক পুরুষ বাঘ ও একটি কমবয়সী বাঘিনী। বাঘিনী যুদ্ধে পরাজিত হবে এটাই নিশ্চিত ছিল। বাঘিনীকে উদ্ধার করতেই তাই জঙ্গলে ঢোকেন বনকর্মীরা। তাদের কথায়, ‘‘আমরা পৌঁছনোর আগেই সব শেষ। তাজ্জবের ব্যাপার বাঘিনীর দেহ উদ্ধার করতে গিয়ে দেখি ঘটনাস্থলে পড়ে রয়েছে শুধু খুলি ও থাবার কিছু অংশ। পুরোটাই ছিঁড়েখুঁড়ে খেয়ে গিয়েছে বাঘ। এমনটা দেখা যায় না।’’

এলাকা দখলের লড়াই হতে পারে। দাবি কানহার ফিল্ড ডিরেক্টর কৃষ্ণমূর্তির। বাঘিনীর দেহের অবশিষ্ট অংশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। শিকারি বাঘটিকেও শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। ঘটনার খবর পেয়েই কানহাতে পৌঁছেছেন ডব্লু ডব্লু এফ ও ডব্লু টি এফ,এর বিশেষজ্ঞেরা। তাঁদের দাবি, দুই বাঘের লড়াই বাঁধলে, একজন নতি স্বীকার না করা পর্যন্ত লড়াই চলতে থাকে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দুর্বল পক্ষকে নিকেশ করেই শান্ত হয় বাঘ। কিন্তু এখানে বাঘিনীকে মেরে তার মাংস খাওয়া হয়েছে, যেটা সাধারণত বাঘের স্বভাব নয়।

বাঘ বিশেষজ্ঞদের মতে, অনেক সময়েই নিজের শাবকদের খেতে দেখা যায় বাঘকে। তাই প্রসবের পরই শাবকদের নিয়ে আড়ালে চলে যায় বাঘিনী। অনেক সময়েই নিজের সন্তানদের বাঁচাতে পরিচিত এলাকা থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূর পর্যন্তও পাড়ি দিতে দেখা গেছে বাঘিনীদের। কৃষ্ণমূর্তি জানিয়েছেন, কানহা ন্যাশনার পার্কে বাঘের সংখ্যা ভারতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রায় ২০ শতাংশ। এখানে বাঘের শিকারেরও কোনও অভাব নেই। সেখান থেকে কী ভাবে একটি বাঘ এমন করল, সেটাই চিন্তার বিষয়। ন্যাশনাল পার্কের অন্যান্য বাঘেদের জন্য সেটা মোটেও সুখবর নয়।নিছক এলাকা দখলের লড়াই, নাকি শিকারের নেশা এই ভাবনাই ঘুম কেড়েছে বন দফতরের কর্তাদের৷

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here