দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ সোমবার লতা মঙ্গেশকরের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে রবীন্দ্র সদনে উপস্থিত হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷সেখানে রাখা হয়েছে সুর সম্রাজ্ঞীর প্রতিকৃতি। সেখানে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্য সরকারের তরফে আয়োজিত এই শ্রদ্ধাজ্ঞাপন অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন অরূপ রায়, শশী পাঁজা, মদন মিত্র, দেবাশিস কুমার, ইন্দ্রনীল সেন প্রমুখ। সোমবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত সেখানে শ্রদ্ধা জানাতে ভিড় করেন সাধারণ মানুষ।
রবীন্দ্র সদনের এই অনুষ্ঠানে বাজানো হচ্ছে লতা মঙ্গেশকরের কালজয়ী গানগুলি। এছাড়াও আগামী ১৫ দিন লতার স্মরণে রাজ্যে বাজানো হবে লতা মঙ্গেশকরের গান। এদিন অর্ধদিবস ছুটিও ঘোষণা করা হয়েছে সরকারের তরফে।
রবিবার মুম্বইয়ের শিবাজী পার্কে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় লতা মঙ্গেশকর-এর। সম্পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ। তাঁর প্রয়াণ সংবাদ শুনে তড়িঘড়ি মুম্বইয়ে পৌঁছন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এছাড়াও সুর সম্রাজ্ঞীকে শ্রদ্ধা জানাতে উপস্থিত ছিলেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে, রাজ ঠাকরে,শাহরুখ খান, সচিন তেন্ডুলকর , জাভেদ আখতার, শংকর মহাদেবন সহ শিল্প ও রাজনৈতিক জগতের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। এদিন লতা মঙ্গেশকরের মৃত্যু সংবাদ পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন আশা ভোঁসলে।
রবিবার সকালে মুম্বইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সঙ্গীতজগৎ-এর উজ্জ্বলতম নক্ষত্র লতা মঙ্গেশকর। সম্প্রতি করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। ধীরে ধীরে সুস্থও হয়ে উঠছিলেন লতা মঙ্গেশকর। সরস্বতী পুজোর দিন, শনিবার আচমকাই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। তাঁর আরোগ্য কামনায় প্রার্থনা প্রাথনা করছিল দেশবাসী। কিন্তু, সকলকে কাঁদিয়ে রবিবার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
শোকবার্তায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লেখেন, ”সুর সম্রাজ্ঞী ও অনন্য প্রতিভাময়ী সর্বজনশ্রদ্ধেয় লতা মঙ্গেশকর দীর্ঘ আট দশক ধরে কণ্ঠের জাদুতে শ্রোতাদের মুগ্ধ করে রেখেছিলেন। হিন্দি, মারাঠি, বাংলা সহ ছত্রিশটিরও বেশি ভারতীয় ও বিদেশি ভাষায় তাঁর গাওয়া অগণিত ক্লাসিকাল,গজল, ভজন, আধুনিক ও সিনেমার গান আজও সমান জনপ্রিয়। বাংলার সঙ্গীতজগতের সঙ্গে তাঁর গভীর যোগ ছিল। আমাদের নক্ষত্রদের সাধনা ও তাঁর প্রতিভা পরস্পরকে সমৃদ্ধ ও অভিষিক্ত করেছিল।” কিংবদন্তী শিল্পীর স্নেহের পরশ পেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে বহুবার কথাও হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ২০১১ সালে প্রথমবার বাংলার মুখ্যমন্ত্রী পদে প্রথমবার নির্বাচিত হওয়ার পর ভারতরত্ন প্রাপ্ত শিল্পী লতাজির থেকে একটি উপহার পেয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সম্পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় রবিবার যখন মুম্বইয়ের শিবাজী পার্কে শেষকৃত্য সম্পন্ন করার কাজ চলছে লতা মঙ্গেশকর-এর। তাঁর প্রয়াণ সংবাদ শুনে তড়িঘড়ি ঠিক তখনই মুম্বই থেকে ১৯৮০ কিলো মিটার দূরে ভারতের সীমান্ত শহর বনগাঁর শিমুলতলার এক ভাস্কর্য শিল্পী সেন্টু ভট্টাচার্য সুর সম্রাজ্ঞীর প্রতিকৃতি তৈরী করলেন ওইদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ ৷ শিল্পী সেন্টুর কথায় কিংবদন্তিকে শ্রদ্ধা জানাতে অত দূর যেতে পারবনা জেনে, মনেমনে ঠিক করেছিলাম তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন করার শেষ মুহুর্তের মধ্যে তাঁর প্রতিকৃতি গড়ব। আমার বিশ্বাস কোন কিংবদন্তিদের মৃত্যু হয় না৷ তিনি আছেন আমাদের প্রাণে৷