ইন্দ্রজিৎ রায়, শান্তিনিকেতন :
বীরভূম:- শ্রাবর্ণি চট্টোপাধ্যায় ৬৮৫ (ষষ্ঠ) (রামপুরহাট হাইস্কুল),
সৌকর্য বিশ্বাস ৬৮২ (নবম) ( বক্রেশ্বর থার্মাল পাওয়ার প্রবীর সেনগুপ্ত উচ্চ বিদ্যালয় ) ,
অরিত্র বহড়া ৬৮১ (দশম) সিউড়ি নেতাজি স্কুল।
জীবনে প্রথম বড়ো পরীক্ষা মাধ্যমিকে বড়োসড়ো সাফল্য পেল বীরভূম। মেধা তালিকায় জায়গা করে নিল বীরভূমের তিনজন। ৬৮৫ নাম্বার পেয়ে মাধ্যমিকে ষষ্ঠ বীরভূমের রামপুরহাট হাই স্কুলের ছাত্র শ্রাবর্ণি চট্টোপাধ্যায়। বাড়ি বীরভূমের রামপুরহাটের নিশ্চিন্তপুরের দীঘির পাড়ে। মায়ের নাম শ্রাবনী চ্যাটার্জী। মা রামপুরহাট হাইস্কুলেরই শিক্ষিকা।মাধ্যমিকে এবছর ষষ্ঠ স্থান অধিকার করার কথা জানতে পেরেই শ্রাবর্ণি জানায়, “খুবই উৎসাহিত এবং আনন্দিত।
বিশ্বাস করতে পারছিনা এরকম রেজাল্ট হবে। ভেবেছিলাম ভালো ফল হবে, তবে এতটা ভাবেনি।”এত ভাল ফলাফলের শ্রাবর্ণ সম্পূর্ণ অবদান দিয়েছেন তার মাকে। এছাড়াও রয়েছে স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকাদের কৃতিত্ব বলে জানায় শ্রাবর্ণি । শ্রাবর্ণির প্রথম জীবনের পড়াশোনা শুরু হয় ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে। পরবর্তীকালে সে সেখান থেকে ট্রান্সফার নিয়ে ভর্তি রামপুরহাট হাইস্কুলে। তারপরেই জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায় এত বড় সাফল্য পেল সে।
বীরভূমের দ্বিতীয় ও রাজ্যের নবম স্থান অধিকার করেছে বক্রেশ্বর থার্মাল পাওয়ার প্রবীর সেনগুপ্ত উচ্চ বিদ্যালয়ের সৌকর্য বিশ্বাস। তার প্রাপ্ত নম্বর 682। বড় হয়ে তার ইচ্ছা প্রোফেসর হওয়ার। ছবি আঁকতে ভালোবাসে সে, বাজাতে ভালো বাসে বঁসি। তার মতে দিনে বেশিক্ষণ পড়াশোনা করতো না সে, তিন থেকে চার ঘণ্টা পড়াশুনো করতো, কখনো বা একটু বেশি। তার এই সাফল্যের পেছনে কৃতিত্ব রয়েছে স্কুলের মাস্টার মশাই ও বাবা মায়ের এমনটাই জানিয়েছে সে।
IAS অফিসার হওয়ার স্বপ্ন দেখছে মাধ্যমিকে দশম স্থানাধিকারী সিউড়ির অরিত্র। সিউড়ি নেতাজি বিদ্যাভবন থেকে পরীক্ষা দিয়ে এবার অরিত্র মাহারা রাজ্যে দশম স্থান অধিকার করেছে, জেলায় তৃতীয়। এই স্থান অধিকার করে অরিত্র একসাথে দুটি স্কুলের নাম উজ্জ্বল করল। কেন! এখানেই বিস্ময়কর।
সিউড়ির শুড়িপুকুর পাড়ার বাসিন্দা অরিত্র প্রথম থেকেই পড়াশোনা চালিয়ে ছিল সিউড়ির পাইকপাড়ার সরস্বতী শিশু মন্দিরে। কিন্তু ওই স্কুলের এবছর প্রথম মাধ্যমিক ব্যাচ কোনো কারণবশত রেজিস্টেশনে সমস্যার সম্মুখীন হয়। তারপর সে মাধ্যমিকে বসে সিউড়ির নেতাজি বিদ্যাভবন স্কুল থেকে রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে। তাই তারা আজ এই সাফল্যে একইসাথে গর্বিত সিউড়ির দুটি স্কুল। আর বলাই বাহুল্য, সিউড়ির পাইক পাড়ার ওই সরস্বতী শিশু মন্দির প্রথম বছরেই ধামাকা দিল।
পরীক্ষায় এই বড় সাফল্যের পর অরিত্র জানাই, পড়াশোনার জন্য নির্দিষ্ট কোন সময় তার ছিল না। যেদিন যেমন, কখনো তিন ঘন্টা, কখনো ১০ ঘন্টা করে পড়াশোনা করত। তবে তার পড়াশোনার সময় বাবা-মা অতন্দ্র প্রহরীর মতো সজাগ থাকতে সে কথা তার মুখ থেকেই শোনা যায়। এমন বড় সাফল্যের জন্য অরিত্র যেমন বাবা মায়ের কৃতিত্বকে স্বীকার করেছে, ঠিক তেমনই কৃতিত্ব দিয়েছেন নতুন ও পুরাতন স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকাদের।