ভোট গণনার শুরু থেকেই ,রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ এবং ছত্তিশগড়— তিন রাজ্যেই বিজেপি-কে পিছনে ফেলে এগোচ্ছে কংগ্রেস।
রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, তেলেঙ্গানা— সর্বত্রই চাপে বিজেপি। মিজোরামেও মুখ থুবড়ে পড়েছে গেরুয়া বাহিনী।পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলে বিজেপি-র ভরাডুবিতে স্বভাবতই উচ্ছ্বসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই ফলাফল ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের ফলে ইঙ্গিতবাহী বলে দাবি করে সাধারণ মানুষকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। টুইট বার্তায় মমতা লিখেছেন, ‘‘মানুষ বিজেপি-র বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে। জনতার রায়ে দেশের জয় হয়েছে। অবিচার, অত্যাচার, প্রতিষ্ঠানগুলিকে ধ্বংস করা, এজেন্সির অপব্যবহার, বেকারত্বের বিরুদ্ধে এই জয়। সেমি ফাইনালই বুঝিয়ে দিল যে, কোনও রাজ্যেই বিজেপি নেই। ২০১৯ সালের ফাইনাল ম্যাচে কী ফলাফল হতে চলেছে, এটা তার গণতান্ত্রিক ইঙ্গিত। গণতন্ত্রে জনগণই সবসময় ‘ম্যান অফ দ্য ম্যাচ’। জয়ীদের আমি অভিনন্দন জানাই।’’
তেলেঙ্গানায় টিআরএস এবং কংগ্রেসের মধ্যে জোর লড়াই হচ্ছে। আর মিজোরামেও এমএনএফ এবং কংগ্রেসের মধ্য কড়া টক্কর চলছে। দুই রাজ্যেই অনেক পিছিয়ে বিজেপি। বুথ ফেরত সমীক্ষাতেই অবশ্য এরকমই ইঙ্গিত ছিল। প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার কারণেই হোক বা কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে কৃষক এবং আমজনতার ক্ষোভ, লোকসভা ভোটের আগে চিন্তা বাড়ছে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের।
এ বার টিআরএস-কে রুখতে দক্ষিণের এই রাজ্যে জোট বেঁধেছে কংগ্রেস এবং চন্দ্রবাবু নায়ডুর তেলেগু দেশম পার্টি। সেই জোটে সামিল হয়েছে সিপিআই এবং তেলেঙ্গানা জনশক্তি পার্টির মতো দলও। বিজেপি-র সঙ্গে কেসিআর-এর সখ্য থাকলেও এই ভোটে কোনও জোটের রাস্তায় হাঁটেননি কেসিআর। বরং নির্বাচনী প্রচারে কংগ্রেস বিজেপি-কে ‘দুই ভাই’ বলে কটাক্ষ করেছেন। যদি ম্যাজিক ফিগারের থেকে দু’চারটে আসন কমে দৌড় শেষ করেন চন্দ্রশেখর আর বিজেপি-র যদি ম্যানেজ করার মতো আসন থাকে, তাহলে পুরনো সখ্য ফেরে কিনা এখন সেটাই দেখার।তেলেঙ্গানায় সমস্ত বুথ ফেরত সমীক্ষাই জানাচ্ছে টিআরএস বেশ কয়েক কদম এগিয়ে রয়েছে কংগ্রেস টিডিপি জোটের থেকে। এখন দেখার ভোটের ফল এক্সিট পোলের সঙ্গে মেলে কিনা।এক টানা পনেরো বছর শাসন কম নয়! মধ্যপ্রদেশ জুড়ে তীব্র প্রতিষ্ঠান-বিরোধী হাওয়া যে বইছে ঠাওর করতে অসুবিধা হচ্ছে না নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহর। শিবরাজ সিংহ চৌহানের নেতৃত্বে মধ্যপ্রদেশে গত ১৫ বছর ধরে বিজেপি সরকার চলছে। গত বিধানসভা ভোটেও রাজ্যের মোট ২৩০টি আসনের মধ্যে ১৬৫টিই জিতে নিয়েছিল বিজেপি। কংগ্রেস জিতেছিল মাত্র ৫৮টি আসন। কিন্তু এ বার বুথ ফেরত সমীক্ষা জানাচ্ছে, মধ্যপ্রদেশে বিজেপি-র সুখের দিন হয়তো শেষ হতে পারে।রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগড়, তেলঙ্গানা এবং মিজোরাম— এই পাঁচ রাজ্যের মধ্যে মধ্যপ্রদেশই সবচেয়ে বড়। চোদ্দর নির্বাচনে রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তীসগড় এই তিন রাজ্য মিলিয়ে ৬৫ টি লোকসভা আসনের মধ্যে ৬২ টি আসনই জিতে নিয়েছিল বিজেপি। মধ্যপ্রদেশে ২৯ টির মধ্যে জিতেছিল ২৭টিতে। এ বারের প্রায় সব বুথ ফেরত সমীক্ষারই ইঙ্গিত, ভোপালের মসনদ দখলের লড়াইটা হতে পারে সমানে সমানে। বিজেপি ও কংগ্রেসের মধ্যে প্রাপ্ত ভোটের খুব কম বেশি হবে না। প্রতি মিনিটের লাইভ আপডেট পেতে চোখ রাখুন দেশের সময় এর ওয়েব পেজ এ ৷