মণীশের দেহ নিয়ে বিজেপির রাজভবন-যাত্রা নিয়ে নাকাল আমজনতা! যানজটে লণ্ডভণ্ড কলকাতা

0
550

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ টিটাগড়ে খুন হওয়া বিজেপি নেতা মণীশ শুক্লর মরদেহ নিয়ে বেনজির রাজনীতিতে নেমে পড়লেন বিজেপি নেতৃত্ব। সোমবার বিকেলে এনআরএস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মণীশের ময়নাতদন্ত হয়। তার পরেই তাঁর দেহ নিয়ে এসএন ব্যানার্জি রোড ধরে রাজভবনের উদ্দেশে এগোতে শুরু করেন বিজেপি নেতারা!

তবে রাজনৈতিক কর্মীর শব নিয়ে রাজনীতি এর আগেও দেখেছে কলকাতা। ছোট আঙারিয়ায় মৃত তৃণমূল কর্মীদের মরদেহ কলকাতায় নিয়ে এসেছিল তৃণমূল। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের মর্গে রাখা হয়েছিল সেই দেহ। পরবর্তী কালে ২০১৩ সালে পঞ্চায়েত ভোটের সময়ে তৃণমূল রাজ্য নির্বাচন কমিশনার মীরা পাণ্ডের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছিল, গরমের কারণে কোনও ভোটারের মৃত্যু হলে সেই মৃতদেহ নিয়ে তাঁরা কমিশনের সামনে ধর্না দেবেন। কিন্তু রাজনৈতিক কর্মীর মরদেহ রাজভবনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা বেনজির, হয়তো এই প্রথম।

গতকাল রাত ৮ টা নাগাদ টিটাগড়ে দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন বিজেপি নেতা মণীশ শুক্ল। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। তার পর তাঁর ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় এনআরএস-এ। ময়নাতদন্তে কেন দেরি হচ্ছে, পুলিশ কেন মরদেহ রিলিজ করছে না সেই সব অভিযোগ নিয়ে সোমবার দুপুরেই রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের কাছে নালিশ করেন বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয়।

শুধু তাই নয়, মণীশ শুক্লা খুনের ঘটনায় রাজ্যপালও আন্দোলিত। এই ঘটনা নিয়ে জানতে চেয়ে গতকাল রাতেই তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে টেক্সট মেসেজ করেছিলেন। সেই সঙ্গে রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্র ও স্বরাষ্ট্রসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে তলব করেছিলেন রাজভবনে।

শাসক দলের অনেকের মতে, রাজ্যপালের ইন্ধনেই এ সব করছে বিজেপি। অভিযোগ, রাজভবনকে কার্যত বিজেপির পার্টি অফিস বানিয়ে দিয়েছেন রাজ্যপাল।

মৃতদেহ নিয়ে এগোতে শুরু করলে, কলকাতা পুলিশের তরফে বিজেপি নেতাদের বলা হয়, যে মরদেহ নিয়ে রাজভবনে যাওয়ার অনুমতি নেই। কিন্তু তাতে কর্ণপাত করেননি বিজেপি নেতারা। এসএন ব্যানার্জি রোড ধরে তাঁরা এগোতে থাকেন। এক সময়ে নিউ মার্কেট চত্বরে পুলিশের ব্যারিকেড করে দেওয়া হয়।

এর পরেই রাজভবনে সরাসরি ফোন করেন বিজেপি নেতা অর্জুন সিং। তার পরে সেই ফোনেই রাজভবনের সঙ্গে ডিসি সেন্ট্রালকে কথা বলিয়ে দেন তিনি। রাজভবনের সঙ্গে কথা বলার পরে ডিসি জানান, প্যারাডাইস সিনেমা হলের সামনে ডেড বডি ও গাড়ি রেখে, বিজেপির চার জন সদস্য রাজভবনে যাবেন।

শেষমেশ মৃতদেহ নিয়ে গাড়িটি চলে যায় টিটাগড়ের দিকে। মণীশের বাবা-সহ বিজেপির ৪ জনের প্রতিনিধি দল রাজভবনে প্রবেশ করেন। কথা বলে বেরোনোর পরে অর্জুন বলেন, “রাজ্যপাল জানিয়েছেন, দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির জন্য যা করার করবেন।” পাশাপাশি সিবিআই তদন্তের দাবি করেন তিনি। জানান, মমতার সরকারের পুলিশের উপর ভরসা নেই। মনোজ ভার্মার বিরুদ্ধে তিনি লিখিত অভিযোগ করেছেন বলেও জানান।

মণীশের বাবা অভিযোগ করেন, এটি পরিকল্পিত খুন ছাড়া কিছু নয়। তাঁর আরও দাবি, পুলিশ খুনের মামলা প্রথমে নিতে চায়নি। এ বিষয়ে রাজ্যপালের কাছেও অভিযোগ করেন তিনি ও বিজেপি নেতারা।

Previous articleহেপাটাইটিস সি ভাইরাস আবিষ্কারের স্বীকৃতিতে ৩ বিজ্ঞানীকে নোবেল
Next articleকরোনা আবহে জঙ্গলমহলে প্রশাসনিক বৈঠক মুখ্যমন্ত্রীর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here