দেশের সময়ওয়েব ডেস্কঃ ভোট গণনা যখন মাঝ পথে, তখনই টুইট করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সকাল থেকেই ট্রেন্ড বাংলার বহু সিটে বিজেপি এগোচ্ছে। কার্যত তৃণমূলের ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছে গেরুয়া শিবির। সেই ট্রেন্ড দেখে মুখ্যমন্ত্রী লিখলেন, “সব পরাজিতরাই হেরো নয়।” সেই সঙ্গে তিনি এ-ও লিখেছেন, “পুরো গণনা শেষ হোক, ভিভি প্যাট মিলিয়ে দেখা হোক। তারপর পর্যালোচনা আপনাদের সঙ্গে ভাগ করে নেব।”
Congratulations to the winners. But all losers are not losers. We have to do a complete review and then we will share our views with you all. Let the counting process be completed fully and the VVPATs matched
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) May 23, 2019
মাঝ দুপুরে এমন টুইট দেখে রাজনৈতিক মহলের অনেকেরই কৌতূহল, কী ইঙ্গিত করতে চাইলেন তৃণমূল নেত্রী? শেষ দফার ভোটের প্রচার থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আশঙ্কা প্রকাশ করছিলেন ইভিএম মেশিনে জালিয়াতি হতে পারে। সরাসরি বিজেপি-র বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেছিলেন, ওরা মেশিন বদলে দিতে পারে। দলীয় কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছিলেন স্ট্রং পাহারা দিতে । এ দিন দুপুর পর্যন্ত ট্রেন্ড তৃণমূল কুড়িটি আসনের দুএকটি বেশি পাতে পারে এবং বিজেপি কার্যত দু’তিনটি আসন কম। ভোট শতাংশেও তৃণমূলের সঙ্গে ‘কাঁটে পে টক্কর’ চলছে। এমন সময় মমতার এই টুইটকে রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষকদের অনেকে।
ভোট শেষ হওয়ার পর থেকেই বিরোধীরা কমিশন থেকে সুপ্রিম কোর্ট সব দ্বারে ঘুরে দাবি জানিয়েছিলেন সব ভিভিপ্যাট গণনা করার। কিন্তু তা খারিজ হয়ে যায়। সুপ্রিম কোর্ট কড়া ভাষায় ভর্ৎসনা করে বলে, আদালতের সময় নষ্ট করার আবেদন। তারপর কমিশনে একুশটি বিরোধী দল গিয়ে তদ্বির করে, যাতে আগে গণনা করা হয় ভিভিপ্যাট। কিন্তু কমিশন স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, সব শেষে গোণা হবে ভিভিপ্যাট। এ দিন মুখ্যমন্ত্রী সেই ভিভিপ্যাট মেলানো পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চেয়েছেন। অন্য ভোট গুলিতে যেমন চিত্র থাকে দিদির কালীঘাটের বাড়ির সামনে, এ বার এক্কেবারে তার উল্টো। খাঁ খাঁ করছে কালীঘাটে মমতার বাড়ির সামনের রাস্তা।
মুখ্যমন্ত্রীর এই টুইট দেখে এক বিজেপি নেতা বলেন, “মাঝ দুপুরে দিদিমণি কাঁদুনি গেয়ে রাখলেন। এ বার সন্ধের পর থেকেই হয়তো মেশিনে কারচুপির অভিযোগ তুলবেন!”
তিনি আশাবাদী। কারণ তিনি লড়াকু। একটি সাংসদ ছিল তাঁর। সেখানে থেকে দিল্লিতে ৩৪টি সাংসদ তিনি পাঠিয়ছিলেন। এমনকী ৩৪ বছরের বামফ্রন্ট সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতায় এসেছিলেন তিনি। আর আগে রাজ্যে সর্বোচ্চ লোকসভা আসন বিজেপি’র ছিল দুই৷ এবার একলাফে দুই অঙ্কে পৌঁছে গিয়েছে বিজেপি৷ তাক লাগানো উত্থান ভোট শতাংশেও৷ ধর্মীয় মেরুকরণের কৌশলকেই কাজে লাগিয়েছে বিজেপি৷ এই কারণে অপ্রত্যাশিত সাফল্য এসেছে গেরুয়া শিবিরের৷
১১ রাউন্ড ভোটগণনার শেষে পশ্চিমবঙ্গের লোকসভা নির্বাচনের যে তথ্য উঠে এসেছে৷ তাতে একটি বিষয় স্পষ্ট৷ ২০১৪ সালের লোকসভা ভোট বা ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন। রাজ্যে একসময়, আতশকাঁচ দিয়েই খুঁজতে হত বিজেপিকে। কিন্তু এবারের লোকসভা ভোটে ফল ভাল হয়েছে তাঁদের। রাজ্যে মাত্র দুই আসনের গণ্ডি ছাড়িয়ে এখনও পর্যন্ত বিজেপি এগিয়ে রয়েছে প্রায় ১৯টি আসনে৷
ইতিমধ্যেই ভোটগণনায় যেসব নেতারা ইতিমধ্যেই জয়ের শিরোপা পেয়েছেন, সেই সমস্ত বিজয়ীদের অভিনন্দন জানালেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি টুইটে লেখেন, ‘ভোটে হার মানেই হার নয়৷ ইভিএম ও ভিভিপ্যাট গণনা শেষ হোক৷ আমরা ফল নিয়ে পর্যালোচনা করব৷ পর্যালোচনার পরই মতামত জানাব৷’