ভারতে ‘কোভিশিল্ড’ টিকার চূড়ান্ত পর্বের ট্রায়াল শুরু হতে চলেছে

0
467

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃভারত বায়োটেক, জাইদাস ক্যাডিলা না সেরাম ইনস্টিটিউট—কে আগে আনবে করোনার টিক!  অপেক্ষার প্রহর গুনছে দেশ।

দেশে এখন কোভিড টিকার দ্বিতীয় স্তরের ট্রায়ালে রয়েছে ভারত বায়োটেক ও জাইদাস ক্যাডিলা। এর মধ্যেই ভাল খবর শুনিয়েছে দেশের প্রথম সারির ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া। অক্সফোর্ডের ভেক্টর ভ্যাকসিনের ফর্মুলায় তৈরি তাদের কোভিশিল্ড টিকার তৃতীয় ও চূড়ান্ত পর্বের ট্রায়াল শুরু হতে চলেছে দেশে। এই ট্রায়ালের রিপোর্ট ইতিবাচক হলেই দেশের প্রথম ভ্যাকসিন চলে আসবে বাজারে।

সেরাম জানিয়েছে, পুণে, মুম্বই ও আহমেদাবাদ—এই তিন শহরেই তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শুরু হবে। ২০টি জায়গা বেছে নেওয়া হয়েছে সেখানে স্বেচ্ছাসেবকদের টিকা দেওয়া হবে। তবে তৃতীয় স্তরের ট্রায়ালে যেহেতু কয়েক হাজার মানুষকে টিকা দেওয়ার বৃহত্তর কর্মসূচী নেওয়া হয়, তাই প্রাথমিকভাবে তিন শহরে ট্রায়াল শুরু করলেও পরবর্তীতে দেশের অন্যান্য মেট্রো শহরগুলিতেও টিকা দেওয়া হবে।

সেরামের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)-এর সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ১২টি হাসপাতালে টিকার ট্রায়াল হবে। তাছাড়া কয়েকটি ক্লিনিককেও বেছে নেওয়া হয়েছে।

অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রজেনেকার ভ্যাকসিন ট্রায়াল নিয়ে নানা টানাপড়েন চলেছে। সেরাম জানিয়েছে, টিকার ট্রায়ালের ব্যাপারে ড্রাগ কন্ট্রোলের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে। গাইডলাইনেও কিছু বদল হয়েছে। ড্রাগ কন্ট্রোলের নতুন নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, টিকার ট্রায়ালের তত্ত্বাবধান ও যাবতীয় খরচ বহন করবে আইসিএমআর। তার জন্য আইসিএমআরের সঙ্গে মউ স্বাক্ষর করেছে সেরাম।

অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনের প্রথম পর্যায়ের ট্রায়াল শুরু হওয়ার পরেই ভারতে এই টিকা তৈরির লাইসেন্স পায় সেরাম ইনস্টিটিউট। ব্রিটেনের জেন্নার ইউনিভার্সিটির সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ডিএনএ ভেক্টর ভ্যাকসিন ChAdOx1 nCoV-19 ক্যানডিডেট ডিজাইন করেছে অক্সফোর্ডের ভাইরোলজিস্ট সারা গিলবার্টের টিম। কোভিড ভ্যাকসিন গবেষণায় অক্সফোর্ডের হাত ধরেছে ব্রিটিশ-সুইডিশ ফার্ম অ্যাস্ট্রজেনেকা। অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রজেনেকার সঙ্গে চুক্তি করে ডিএনএ ভেক্টর ভ্যাকসিনের ফর্মুলাতেই কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন তৈরি করেছে সেরাম।

সেরামের তৈরি করোনা ভ্যাকসিনের দাম যাতে কম থাকে তার জন্য অর্থ বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মাইক্রোসফট প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস। টিকার ডোজপিছু দাম যাতে ৩ ডলারের মধ্যে থাকে তার জন্য ১৫০ মিলিয়ন ডলার খরচ করার কথা জানিয়েছে বিল ও মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন। সেরাম ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে,  অ্যাস্ট্রজেনেকা কিংবা নোভাভ্যাক্স দুই সংস্থার গবেষণায় তৈরি ভ্যাকসিন ডোজের দাম হবে তিন ডলারের মধ্যে। অর্থাৎ ভারতীয় টাকায় হিসেব করলে হয় প্রায় ২২৫ টাকার কাছাকাছি। ভারতে তো বটেই বিশ্বের মোট ৯২টি দেশে এই ভ্যাকসিন পৌঁছে দেওয়া হবে।

অক্সফোর্ডের পাশাপাশি মার্কিন ফার্মা জায়ান্ট নোভাভ্যাক্সের ভ্যাকসিন তৈরির লাইসেন্সও পেয়ে গিয়েছে সেরাম। মোডার্না ও ফাইজারের মতোই তিন স্তরের ট্রায়ালে এগিয়ে আছে নোভাভ্যাক্স। তাদের প্রথম পর্যায়ের ট্রায়ালের রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে দু’দিন আগেই।  সংস্থার ভ্যাকসিন গবেষণার প্রধান ভাইরোলজিস্ট ডক্টর গেগরি গ্লেন বলেছেন, প্রথম পর্বের ক্লিনিকাল ট্রায়ালে টিকার দুটি ডোজেই শরীরে পর্যাপ্ত অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে। আরএনএ টেকনোলজিতে NVX-CoV2373 ভ্যাকসিন ক্যানডিডেট বানিয়েছে নোভাভ্যাক্স। এই টিকা এবার ভারতে তৈরি করছে সেরাম ইনস্টিটিউট।

Previous articleHappy world photography day
Next articleজোড়া নিম্নচাপের ধাক্কায় আগামী ৭ দিন বৃষ্টির সম্ভাবনা দক্ষিণবঙ্গ সহ কলকাতায়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here