দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ভারতই সবচেয়ে বড় বন্ধু। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে শহিদ ভারতীয় সেনাদের পরাক্রমকে শ্রদ্ধা জানিয়ে বললেন বাংলাদেশের মুখ্যমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পঞ্চাশতম বিজয় দিবস ছিল গতকাল, বুধবার। ওই দিনই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক হয় হাসিনার। তিনি বলেন, ভারত বরাবরই বাংলাদেশের পাশে থেকেছে। এই সম্পর্ক আগামী দিনে আরও মজবুত হবে। অন্যদিকে, মোদী বলেন, বাংলাদেশ হল ভারতের ‘নেবারহুড ফার্স্ট’ নীতির মূল স্তম্ভ। যে কোনও পরিস্থিতিতেই বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক অটুট রাখতে ভারত প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশের যতটা গর্বের, পাকিস্তানের কাছে ততটাই অগৌরবের। পাকিস্তানের কাছে এই যুদ্ধ দু’দিক দিয়ে গ্লানির। প্রথমত এই যুদ্ধে পাকিস্তান ভেঙে দু’ভাগ হয়ে গিয়েছিল, আর দ্বিতীয়ত সে যুদ্ধে ভারতের কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়েছিল পাকিস্তানের ৯৩ হাজার সেনা। একাত্তরের যুদ্ধ নিয়ে পাকিস্তান বরাবর মুখে কুলুপ আঁটলেও, বাংলাদেশ বিজয়গর্বে সে স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশের গর্বই শুধু নয়, আবেগও। মোদীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে সেই আবেগের কথাই বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মুক্তিযুদ্ধে বীর সেনানীদের সশ্রদ্ধ সম্মান জানিয়ে হাসিনা বলেন, “আমি গভীর শ্রদ্ধা জানাই সেই ত্রিশ লক্ষ শহিদ সেনার জন্য যাঁরা দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছিলেন। শ্রদ্ধা জানাই ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর বীর শহিদ ও তাঁদের পরিবারদের। সেই সঙ্গেই ভারত সরকার ও ভারতবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই যাঁরা বাংলাদেশকে অন্তর দিয়ে ভালবাসেন।”
সূত্রের খবর, আগামী বছর ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে ঢাকায় থাকবেন মোদী। করোনা আবহে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতিতে ঢাকা গিয়েছিলেন বিদেশসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা।
করোনার ভ্যাকসিন চলে এলে তা প্রথম বাংলাদেশকেই দেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি। করোনা আবহে দুই দেশের সম্পর্কের ভুল বোঝাবুঝি কাটাতে ও পারস্পরিক আস্থা বাড়াতেই এই দ্বিপাক্ষিক বৈঠক। গতকাল ‘ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়াল’-এ ‘স্বর্ণ বিজয় মশাল’ জ্বেলেছিলেন মোদী। এদিন স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপ্রধান শেখ মুজিবুর রহমানের একটি স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করেন মোদী ও হাসিনা দুজনেই। বৈঠকে এদিন বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাতটি চুক্তি স্বাক্ষর করে ভারত-বাংলাদেশ। হলদিবাড়ি-চিলাহাটি রেল রুটেরও উদ্বোধন করেন মোদী ও হাসিনা। ১৯৬৫ সালে পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধের পর এই রেললাইন বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ৫৫ বছর পরে ফের তা চালু হল।