দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ একুশের ভোটে বাংলায় কী হবে? উনিশের অক্টোবরেই তার ভবিষ্যদ্বাণী করে দিলেন বিজেপি সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। জানিয়ে দিলেন, দুই তৃতীয়াংশ মানুষের সমর্থন নিয়ে বাংলায় সরকার গড়তে চলেছে গেরুয়া শিবির।
বৃহস্পতিবার রাতে একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে অমিত শাহের সাক্ষাৎকার সম্প্রচারিত হবে। এ দিন সকাল থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় যে প্রোমো চালাচ্ছে ওই সংবাদমাধ্যম, তাতে বিজেপি সভাপতি এই কথা বলেছেন। এবং এ-ও জানিয়েছেন, এনআরসি কার্যকর করতে যদি কোনও দূর্বলতা থেকে থাকে, তাহলে সরকার তা পর্যালোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।
উনিশের লোকসভা ভোটের অনেকটা আগে থেকেই বিজেপি নেতারা বলতে শুরু করেছিলেন বাংলায় ২০-২২টি আসন জিতবেন তাঁরা। পালটা শাসক দলের স্লোগান ছিল বিয়াল্লিশে বিয়াল্লিশ। কিন্তু ভোট ফুরোতে দেখা গিয়েছে মুখের কথার কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে বিজেপি। ১৮টি আসন জিতেছে বাংলা থেকে।
লোকসভা পরবর্তীতে বিজেপির ফলাফলকে বিধানসভার নিরিখে ফেলে দেখা গিয়েছে, বাংলায় শতাধিক বিধানসভা কেন্দ্রে শাসক দলের থেকে অনেকটা এগিয়ে রয়েছে গেরুয়া শিবির। একই সঙ্গে এ-ও দেখা গিয়েছে, অন্তত এমন ১৫-২০টি বিধানসভা কেন্দ্র আছে যেখানে তৃণমূল আর বিজেপি-র ভোট একেবারে গায়ে গায়ে। বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্য ওই আসনগুলি জেতা কেবল সময়ের অপেক্ষা।
এনআরসি নিয়ে দলের অবস্থান স্পষ্ট করতে বাংলায় এসে সভা করে গিয়েছেন অমিত শাহ। নেতাজি ইনডোরের সেই সভা থেকে দলের সমস্ত স্তরের নেতাদের বিজেপি সভাপতির কড়া বার্তা, ঘরে ঘরে গিয়ে বলতে হবে কোনও হিন্দুকে বাংলা ছেড়ে যেতে হবে না। এমনকী কোনও শিখ, বৌদ্ধ, জৈনকেও এ দেশের নাগরিকত্ব দেবে সরকার। অমিত শাহ বলেছিলেন, “একজন শরণার্থীকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার অধিকার দেবে সরকার।”
পর্যবেক্ষকদের মতে, অমিত শাহ বাংলায় এসে মুখ ফুটে এ কথা বলেননি যে, অনুপ্রবেশকারী মুসলমানদেরই শুধু এ দেশ থেকে বিতাড়িত করা হবে। তাঁদের মতে, না বলার মধ্যে দিয়েই সবটা বলে দিয়েছেন তিনি। এই মেরুকরণের রাজনীতিকেই আরও তীব্র করতে চাইবে বিজেপি।
যদিও অমিত শাহের বাংলা দখলের আগাম ঘোষণাকে একেবারেই গুরুত্ব দিচ্ছে না তৃণমূল কংগ্রেস। দলের এক মুখপাত্রের কথায়, “অমিত শাহ এখনও বাংলার মানুষকে চেনেননি। বছরে একবার আধবার আধবার বিমান চেপে কলকাতায় এসে বক্তৃতা করে বলল বাংলা দখল করব আর সেটা হয়ে গেল ব্যাপারটা এত সোজা না।” জাতীয় নাগরিক পঞ্জিকরণ নিয়ে তৃণমূলের বক্তব্য, “বাংলায় এনআরসি হবে না। আর যদি কেন্দ্র তা করতে চায়, তাহলে তীব্র প্রতিরোধের মুখে পড়তে হবে।” শাসক দলের এক নেতার কথায়, “অসম ছাড়া আর কোথাও এনআরসি করার কোনও সিদ্ধান্ত বা অ্যাকর্ড সুপ্রিম কোর্ট বলেনি। তাহলে অমিত শাহের এই হুঙ্কার কিসের ভিত্তিতে?”