বিশেষ প্রতিবেদনঃবিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের হুমকি এ রাজ্যে বিজেপি ২৩টি লোকসভার আসন দখল করবে।তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া মুকুল রায়ের দাবি আগামি লোকসভার ভোট এ রাজ্যে সব হিসেব উল্টে দেবে।এরই মধ্যে কাশ্মীরের পুলওয়ামাতে জঙ্গি হানা,ও তার পরিপ্রেক্ষিতে ভারতীয় সেনাবাহিনির পাকিস্তানের উপর বোমা বর্ষণ।দেশ জুড়ে উগ্র জাতীয়তাবদের জিগির তুলে নির্বাচনি ফায়দা তুলতে ব্যস্ত বিজেপির নেতারা।মাত্র কিছুদিন আগে ব্রিগেডে

বিরোধীদের একত্রিত করে যে সভা এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করেছিলেন এবং বিরোধী নেতৃত্বের অন্যতম প্রধান মুখ বলে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছিলেন,আজকের পরিস্থিতি তা থেকে কিছুটা হলেও বদলেছে বলে বুঝতে পারছেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।আর সেই কারণেই দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর চেয়ার কার দখলে থাকবে তা ছেড়ে এখন তিনি অনেক বেশী মনযোগ দিয়েছেন এ রাজ্যে বিজেপিকে একেবারে শূণ্যে নামিয়ে আনতে।হাঁ-এটাই এখন এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান চ্যালেঞ্জ।সম্প্রতি তৃণমূলের কোর কমিটির বৈঠকে মমতা দলের প্রতিটি কর্মীকে জানিয়ে দিয়েছেন ৪২ এ ৪২টাই তৃণমূলের ঝুলিতে পরা চাই।তার জন্য যাবতীয় কর্মসূচি নির্ধারণ করে দিয়েছেন দলনেত্রী নিজেই।

তবে তৃণমূলের অন্দর মোহলের খবর হল,৪২ ও ৪২ যদি নাও হয়,নেত্রী চাইছেন যে কোন ভাবে বিজেপিকে এ রাজ্যে একেবারে শূ্ণ্যে নামিয়ে আনতে।শোনা যাচ্ছে দলের কর্মীদের এ বিষয় তিনি একেবারে কড়া নির্দেশ দিয়ে দিয়েছেন।কোনভাবেই বিজেপি যেন এ রাজ্যে একটাও আসন না পায় তা নিশ্চিত করতে মুখ্যমন্ত্রী দলের দায়িত্ব প্রাপ্ত সকলকে এখন থেকেই ঝাঁপিয়ে পড়তে বলেছেন।কোথায় খোথায় বিজেপির ভোট আছে,বিজেপি কীভাবে ভোট পায় তার যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করে অবিলম্বে দলের নেত্রীকে তা জানাতে বলা হয়েছে।শোনা যাচ্ছে মমতা নিজেই এক একান্ত কমিটি তৈরি করে তৃণমুলের কে বা কারা বিজেপির সঙ্গে সখ্য রাখছে তার উপরও নজরদারি শুরু করছেন।দলীয় কর্মীদের মমতা জানিয়ে দিয়েছেন দার্জিলিং ও আসালসোল যে দুটি লোকসভার আসন বিজেপির ছিল তা এবার বিজেপির কাছ থেকে কেড়ে নেওয়ার যাবতীয় আয়োজন সম্পুর্ন করা হয়ে গেছে।

এবার নিশ্চিত করতে হবে আর কোথাও যেন বিজেপি কোন আসন না পায়।এ রাজ্যে যে কোন উপায়ে বিজেপিকে শূণ্যে নামিয়ে আনতে হবেই এটাই মমতার ২০১৯-এর বার্তা।দলীয় কর্মীরা দলনেত্রীর কাছে অঙ্গীকার করেছেন তারা তাদের নেত্রীর এই চাহিদা পুরণ করবেন।এলাকায় এলাকায় তৃণমূল কর্মীদের সাধারণ মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিজেপির বিভেদকামী রাজনীতির বিপদ সম্পর্কে বলতে বলা হয়েছে।একই সঙ্গে মমতা নিজেও ইভিএম নিয়ে কোন কারসাজি হয় কিনা তার উপর নজর রাখতে শুরু করেছেন।কোর কমিটির বৈঠকেই মমতা বলে দিয়েছেন যে ২৩-৩০ আসন বিজেপি এ রাজ্য থেকে পাবে বলে দাবি করছে তা একমাত্র ইভিএমের কারচুপি ছাড়া সম্ভব নয়।গত লোকসভা নির্বাচনে যা নাকি উত্তরপ্রদেশে হয়েছিল বলে মায়াবতী-অখিলেশদের অভিযোগ।

এ রাজ্যে তেমন যাতে না হয় তার প্রস্তুতি মমতা প্রথম থেকেই নিযে রাখলেন।মমতার এই কট্টর বিজেপি বিরোধিতার জন্য যদি এ রাজ্যে কংগ্রেস ও বামেরা একটা বা দুটো আসন পেযেও যায় শোনা যাচ্ছে মমতার তাতেও কোন আপত্তি নেই,কিন্তু কোনভাবেই বিজেপিকে এ রাজ্যে একটা আসনও পেতে দেওয়া যাবে না,দলনেত্রীর এই নির্দেশকে কার্ষকর করতেই এখন তৃণমূল কর্মীরা মাঠে নামছেন।

রাজতৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে মমতা বুঝেছেন বিজেপির সঙ্গে কোন বোঝাপড়ায় যাওয়া মানে একসময় নিজের বিপদ ডেকে আনা,তাই এ রাজ্যে হীনবল কংগ্রেস বা বামদের ছাড় দিয়ে আপাতাত তিনি বিজেপিকে এ রাজ্যে একেবারে শূণ্য করে দিয়ে আর বেশী করে রাজ্যের সংখ্যা লঘু ভোটকে নিজের দিকে অটুট রাখতে মরিয়া।মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই চ্যালেঞ্জ কতটা সার্থক হয় সেটাই এখন দেখার।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here