বানভাসি খানাকুল , কাল বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে মুখ্যমন্ত্রী

0
484

দেশের সময় ওয়েবডেস্ক গত এক দশকের রেকর্ড বৃষ্টি হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। নিম্নচাপের জেরে লাগাতার ভারী বর্ষণের ফলে এমনিতেই প্লাবনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল দক্ষিণ বঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায়৷ স লাগাতর বৃষ্টির সঙ্গে বাঁধ থেকে জল ছাড়া হচ্ছে। এই কারণে হাওড়া, হুগলি সহ রাজ্যে বহু জেলা জলের নীচে। বিপর্যস্ত জনজীবন। ভোগান্তি চরমে।

বুধবার হুগলি ও হাওড়ার বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে যাবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

জলের নীচে দক্ষিণবঙ্গের বিস্তৃত এলাকা। এর মধ্যে মাইথন, পাঞ্চেত এবং দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে নিয়মিত জল ছাড়া হচ্ছে। এর ফলে খানাকুল এবং জাঙ্গিপাড়া, হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর, আমতার বিভিন্ন গ্রামে দেখা দিয়েছে বন্যা পরিস্থিতি। খানাকুল-২ নম্বর ব্লকের রাজহাটী, রামচন্দ্রপুর, জগৎপুর, মারোখানা, বাসাবাটি এলাকা এখনও জলের তলায়। কপ্টারে চেপে উদ্ধারে নেমেছে সেনা এবং বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। জলের স্রোত বেশি থাকায় স্পিডবোটে উদ্ধার কাজ চালানো যাচ্ছে না। বহু মানুষকে তুলে এনে ত্রাণ শিবিরে রাখা হচ্ছে। এই পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে যাচ্ছেন মমতা। 

আকাশপথে হুগলির খানাকুলে যাবেন মুখ্যমন্ত্রী। কথা বলবেন জেলা প্রশাসনের সঙ্গে। সেখান থেকে হাওড়ার উদয়নারায়নপুর ও আমতা পরিদর্শন করবেন তিনি। জানা গিয়েছে, বুধবার খানাকুল এক নম্বর ব্লকের অন্তর্গত ঘোষপুর মান্নানডাঙার মাঠে পৌঁছবে মুখ্যমন্ত্রীর হেলিকপ্টার৷ সেখানেই জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের থেকে বন্যা পরিস্থিতির সর্বশেষ অবস্থা জেনে নেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেবেন তিনি৷

হাওড়া, হুগলির পাশাপাশি বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরেও। ইতিমধ্যেই একাধিক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। গত দুদিন ধরে জলের তলায় ঘাটাল-চন্দ্রকোনা রাজ্য সড়ক। অধিকাংশ জায়গায় পানীয় জলের সঙ্কট চরমে। এদিন ঘাটাল পরিদর্শনে গিয়েছিলেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়।

খানাকুলের ২ নম্বর ব্লকের প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাই জলের নীচে ডুবে রয়েছে৷ বিশেষত রূপনারায়ণ এবং মুণ্ডেশ্বরী নদী সংলগ্ন এলাকার অবস্থা সবথেকে খারাপ৷ এই সমস্ত অঞ্চলে দোতলা পাকা বাড়গুলির একতলা পর্যন্ত জলের নীচে চলে গিয়েছে৷ তবে সোমবার রাতেও বিভিন্ন এলাকায় জলস্তর বাড়তে থাকলেও এ দিন আর নতুন করে জল বাড়েনি বলেই খবর৷

খানাকুলের বন্যা কবলিত এলাকায় আটকে পড়া মানুষকে উদ্ধারে সোমবারই বায়ুসেনা এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাহায্য নিয়েছিল রাজ্য সরকার৷ হেলিকপ্টার এবং নৌকায় বাড়ির ছাদে আশ্রয় নেওয়া অনেককেই উদ্ধার করা হয়৷ জলবন্দি এলাকায় পানীয় জলেরও সংকট তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ৷

হুগলির পাশাপাশি হাওড়ার বন্যা পরিস্থিতিও খারাপ হতে শুরু করেছে৷ উদয়নারায়ণপুরের পর আমতার একাংশেও জল ঢুকতে শুরু করেছে৷ বৃষ্টি বাড়লে এবং ডিভিসি জল ছাড়ার পরিমাণ আরও বাড়ালে পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশঙ্কা থাকছে৷

তবে আশার কথা এই, এখনও কোনও নদীর জল বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে না। ফলে আশা করা যাচ্ছে নতুন করে ভারী বৃষ্টি না হলে কয়েকদিনের মধ্যে জল নামবে।

তবে ডিভিসির জল ছাড়ার কারণে নতুন করে বহু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। হুগলির গোঘাটের দুটি ব্লকের একাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছেন। বহু মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন ত্রাণ শিবিরে।

মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে খানাকুল ব্লকের রাজহাটির ভীমতলা অঞ্চলে মঙ্গলবার বন্যা পরিস্থিতি দেখতে গিয়েছিলেন রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী বেচারাম মান্না। সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক। সোমবার বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে নবান্নে বৈঠকে বসেছেন মমতা। দুর্গতদের ত্রাণেরর ব্যবস্থা করার জন্য মন্ত্রীদের নির্দেশ দিয়েছেন। যে সমস্ত জেলায় বন্যার জেরে মৃত্যু ঘটেছে, সেখানে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার জন্য মৃতদের তালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। নবান্নের কন্ট্রোলরুম থেকে পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছেন মন্ত্রী, আমলারা। 

Previous articleদক্ষিণবঙ্গে বন্যায় মৃত ১৬, ক্ষতিপূরণের ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর
Next articleভ্যাকসিন দেওয়াকে কেন্দ্র করে বনগাঁ পুরসভার একাধিক কেন্দ্রে উত্তেজনা ছড়াল

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here